কলকাতা হাইকোর্ট মানেনি। কিন্তু তারপরও সন্দেশখালি নিয়ে নিজের অভিযোগে অনড় রইলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। আজ, মঙ্গলবার সন্দেশখালির অশান্ত পরিস্থিতির জন্য পুনরায় কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশকেই দায়ী করলেন তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক। তবে এবার নিজের বক্তব্যের প্রমাণও দেখালেন অভিষেক। আজ সোশ্যাল মিডিয়ায় আদালতের নির্দেশনামা পোস্ট করেছেন অভিষেক। শাহজাহানকে কেন এতদিন গ্রেফতার করা যায়নি? এই প্রশ্নে এখনও আদালতকেই দুষছেন অভিষেক।
এদিকে গতকাল সোমবার কলকাতা হাইকোর্ট জানিয়েছিল, শাহজাহানকে গ্রেফতার করার ক্ষেত্রে কোনওদিন স্থগিতাদেশ ছিল না। পুলিশ চাইলেই গ্রেফতার করতে পারত তাঁকে। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় কলকাতা হাইকোর্টের এই রায়কেই আবার হাতিয়ার করে এক্স হ্যান্ডেলে লেখেন, ‘ক্রোনোলজি বুঝুন। গত ৭ ফেব্রুয়ারি স্থগিতাদেশ দেওয়া হয়েছিল। ঠিক তার পরের দিন অর্থাৎ ৮ ফেব্রুয়ারি থেকেই হিংসা ও বিক্ষোভ শুরু হল। বিজেপি এবং বাংলা বিরোধী কিছু গণমাধ্যম সুবিধাবাদীদের মতো যাবতীয় সুযোগ নিল। সোমবার কলকাতা হাইকোর্ট এই বিষয়ে বিভ্রান্তি দূর করতেই সন্দেশখালির মানুষ দ্রুত সুবিচার পাবেন আশা করছেন।
অন্যদিকে এক্স হ্যান্ডেলে কলকাতা হাইকোর্টের একটি নির্দেশনামা পোস্ট করেছেন অভিষেক। সেখানেই তিনি লিখেছেন, ‘গত ৭ ফেব্রুয়ারি সন্দেশখালি নিয়ে পুলিশের তদন্তে স্থগিতাদেশ দেওয়া হয়েছিল। ঠিক তার পরের দিন ৮ ফেব্রুয়ারি থেকেই হিংসা এবং বিক্ষোভ শুরু হয় সন্দেশখালিতে।’ তখন থেকেই সন্দেশখালির তৃণমূল কংগ্রেস নেতা শাহজাহান –সহ তাঁর অনুগামীদের গ্রেফতারের দাবিতে পথে নেমেছিলেন সন্দেশখালির মানুষজন। পুলিশের নিস্ক্রিয়তার অভিযোগ তোলেন বিরোধীরা। এক্স হ্যান্ডেলে অভিষেক লিখেছেন, ‘আসলে পুলিশের উপর জারি হওয়া ওই স্থগিতাদেশেরই সম্পূর্ণ সদ্ব্যবহার করেছে বিজেপি এবং বাংলা বিরোধী কিছু গণমাধ্যম।’ অভিষেক যে নথি পোস্ট করেছেন সেখানে দেখা যাচ্ছে, কলকাতা হাইকোর্ট রাজ্য পুলিশকে ইডির আবেদন সংক্রান্ত মামলায় কোনও পদক্ষেপ এবং তদন্ত না করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: নন্দীগ্রামের রেলপ্রকল্প এখন অনিশ্চয়তার মুখে পড়েছে, সমস্যা মেটাতে উদ্যোগী রেল
এছাড়া তদন্তে স্থগিতাদেশ দেওয়া থাকলে গ্রেফতার করার ক্ষেত্রে বাধা হয়। কারণ তদন্তই যদি করা না যায় তাহলে গ্রেফতার কেমন করে করা যাবে। এটাই বোঝাতে চেয়েছেন ডায়মন্ডহারবারের সাংসদ। অভিষেক আগেই বলেছিলেন, ‘শেখ শাহজাহানের বিরুদ্ধে মামলা করে রাজ্য সরকার। ইডি তাঁকে ধরতে পারেনি। কিন্তু ইডি গিয়ে রাজ্য পুলিশের ওই এফআইআরের বিরুদ্ধে স্থগিতাদেশ পেয়েছে। সুতরাং পুলিশের হাত–পা বেঁধে দিয়েছে আদালতই।’ অর্থাৎ পুলিশের তদন্তে স্থগিতাদেশের যে অভিযোগ অভিষেক এনেছিলেন সেটা যে ভুল নয় তা বুঝিয়েছেন অভিষেক। এবার রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস শাহজাহানের গ্রেফতারের বিষয়ে রাজ্য সরকারকে চিঠি দিয়েছেন।