কেন্দ্রীয় সরকার বাংলাকে বঞ্চনা করে চলেছে। এই অভিযোগ বারবার তুলেছে তৃণমূল কংগ্রেস। আন্দোলন, চিঠি লেখা, ধরনা দিয়েও মেলেনি টাকা। এই নিয়ে নয়াদিল্লিতে পর্যন্ত আন্দোলনের ঢেউ আছড়ে পড়েছিল অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে। ১০০ দিনের কাজের টাকা, গ্রাম সড়ক যোজনার টাকা এবং আবাস যোজনার টাকা বকেয়া দেয়নি কেন্দ্রীয় সরকার। টাকা আটকে রেখেছে বলে অভিযোগ তৃণমূল কংগ্রেসের নেতা থেকে মন্ত্রীদের। খোদ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও এই অভিযোগ করেছেন। এখন ১০০ দিনের বকেয়া টাকা দিচ্ছে রাজ্য সরকার। এই নিয়ে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন তোপ দেগেছেন রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে। এবার পাল্টা আক্রমণ করলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।
এদিকে বাংলায় প্রায় সব সরকারি প্রকল্পই দুর্নীতিতে ভরে গিয়েছে। কাটমানি নেওয়াই যেন সার্বভৌম অধিকার হয়ে দাঁড়িয়েছে। কলকাতায় এসে এই ভাষাতেই রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে চড়া সুরে আক্রমণ করেছিলেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। একশো দিনের কাজে ২৫ লক্ষ ভুয়ো জবকার্ড মিলেছে দাবি তুলে তাঁর বক্তব্য, ‘টাকা তো আমজনতার। তাঁদের করের টাকা থেকে কী ভাবে এটা দেব?’ আর আজ তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় নিজের এক্স হ্যান্ডেলে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রীকে তুলোধনা করেছেন। এটা বাপের নয়, পাপের পয়সা। রাজ্য থেকে করের টাকা তুলে নিয়ে গিয়ে বাংলাকেই বঞ্চনা করা হয়েছে বলে তোপ দাগেন অভিষেক।
আরও পড়ুন: দ্বন্দ্ব–অসন্তোষ মেটাতে হবে, পুরুলিয়ায় মলয় ঘটককে কড়া নির্দেশ দিলেন মুখ্যমন্ত্রী
অন্যদিকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারকে বারবার আক্রমণ করেছেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী। তাঁর কথায়, ‘আদানি–আম্বানি নন, রেশন দেওয়ার কথা আমজনতাকে। ২০২২ সালের এপ্রিল–সেপ্টেম্বর মাসের মধ্যে মিড–ডে মিল সংক্রান্ত ১০০ কোটি টাকার দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। একজন মহিলা মুখ্যমন্ত্রী এমন হৃদয়হীন! মুখ্যমন্ত্রী–দিদি নিজেই ২০১৯ সালে ২০১১ সালের কাটমানি ফিরিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দেন। তার মানে তিনি স্বীকার করছেন। কিন্তু তার পরেও কিছু হয়নি।’ এবার অভিষেক নিজের এক্স হ্যান্ডেলে লেখেন, ‘গত পাঁচ বছরে বাংলা থেকে কয়েক লক্ষ কোটি টাকা কর বাবদ শোষণ করে নিয়ে গিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। তাই দিয়ে চলছে কেন্দ্রীয় উচ্চপদস্থ অফিসারদের বিলাস আর ভুয়ো প্রচার। এটাই পাপ কা পয়সা।’
এছাড়া নির্মলা সীতারামন বাংলায় এসে দুর্নীতির কথা তুলে ‘বাপ কা পয়সা’ মন্তব্য করে যান। অর্থাৎ এটা কারও বাপের টাকা নাকি! এমন মন্তব্য করেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী। এবার সেটাকেই তুলোধনা করেছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। আজ, বৃহস্পতিবার ডায়মন্ডহারবারের সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় নিজের এক্স হ্যান্ডেলে লেখেন, ‘সবিনয় এবং নম্রতার সঙ্গে আমি কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রীকে বলতে চাই, এটা বাপ কা পয়সা নয় বরং পাপ কা পয়সা। গত পাঁচ বছরে বাংলা থেকে ৪ লাখ ৬৫ হাজার কোটি টাকা প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষ কর হিসাবে শুষে নিয়েছে কেন্দ্র। আর রাজ্যকে তার ন্যায্য প্রাপ্তি থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে। সাধারণ মানুষের ঘাম ঝরানো টাকা উচ্চপদস্থ সরকারি অফিসারদের বিলাসবহুল বাসস্থান, ব্যয়বহুল বিমানযাত্রা এবং ভুয়ো খবর প্রচারে অপচয় করা হয়।’