ভাল ফল বা র্যাঙ্ক করলেই ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার হতে হবে তার কোনও মানে নেই। আজ এই বিষয়টি বেশি করে প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠল উচ্চমাধ্যমিক ফলপ্রকাশের পর। কারণ বুধবার উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার ফলপ্রকাশ হতেই দেখা যায়, পঞ্চম স্থান অধিকার করেছে বাঁকুড়া মিশন গার্লস হাইস্কুলের ছাত্রী সুস্বাতী কুণ্ডু। মেধাতালিকায় নিজের নাম দেখে মুখে চওড়া হাসি ফোটে সুস্বাতীর। আর তখনই মুক্ত আকাশের দিকে তাকিয়ে দু’হাত তুলে আনন্দের বহিঃপ্রকাশ ঘটালেন সুস্বাতী। মন নেচে উঠল ঘুঙুরের আওয়াজে। কারণ ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, বিজ্ঞানী হতে চান না সুস্বাতী। চেনা ছকের বাইরে গিয়ে সুস্বাতী কুণ্ডু নৃত্যশিল্পী হতে চান।
এদিকে এই বছর যাঁরা মাধ্যমিক–উচ্চমাধ্যমিকে কৃতী হিসাবে সাফল্য পেয়েছেন তাঁরা বিজ্ঞানকে সঙ্গী করে চিকিৎসক, ইঞ্জিনিয়ার হতে চান। কিন্তু সেই পথে পা বাড়ালেন না সুস্বাতী। বরং শিল্পী হিসাবে খ্যাতি অর্জন করতে চান তিনি। নৃত্যশিল্পী হতে চান সুস্বাতী। তাই তো পঞ্চম স্থান অধিকার করেও পরিবারের সদস্যদের নিজের মনের কথা জানিয়ে দিলেন সুস্বাতী। আর তাতে কেউ অরাজিও হলেন না। পড়াশোনা চালিয়ে যাওযার সঙ্গে নৃত্যকলাও চালিয়ে যাবেন সুস্বাতী। আর তাতেই সাফল্য নিয়ে এসে রাজ্যের নাম উজ্জ্বল করবেন তিনি বলে আশা রাখেন তাঁর বাবা–মাও।
আরও পড়ুন: পোষ্য নিয়ে রবীন্দ্র সরোবরে ঢোকা নিষিদ্ধ, কড়া নিষেধাজ্ঞা জারি করল কেএমডিএ
অন্যদিকে উচ্চমাধ্যমিকের ফলপ্রকাশের পর সুস্বাতী আনন্দে লাফিয়ে ওঠেন। আর এই আনন্দ পরিবারের সবার সঙ্গে ভাগ করে নেন। তারপর সংবাদমাধ্যমে বললেন, ‘এতটা আশা করিনি। তবে আমার নাম ঘোষণার পর চমকে গিয়েছিলাম। খুবই ভাল লেগেছে। বরাবর বাবার কাছে বাংলা পড়েছি। ইংরেজি এবং ভূগোলের শিক্ষক অবশ্য ছিল। আমি নৃত্য শিল্পী হতে চাই’। এই কথা শোনার পর অনেকে অবাক হলেও সুস্বাতীর বাবা–মা অবাক হননি। কারণ মেয়ে তো ভাল নাচেই। সেটাই যদি কেরিয়ার হয় তাতে মন্দ কি। তাই মনের ইচ্ছাতেই সাড়া দিক সুস্বাতী চান বাবা–মা।
এছাড়া এই সাফল্য কেমন করে এল? কতক্ষণ পড়তেন সুস্বাতী? অবসর সময়ে কী করতেন? এসব প্রশ্ন আসতে শুরু করে তাঁর দিকে। আর জবাবে সুস্বাতীর বক্তব্য, ‘ঘড়ি মেপে পড়াশোনা করতাম না। তবে ১২ থেকে ১৪ ঘণ্টা পড়তাম। সঙ্গে চালাতাম নাচও। আমার নাচ ভাল লাগে। ভবিষ্যতে নাচ নিয়ে পড়াশোনা করতে চাই। আপাতত জীবনে লক্ষ্য নাচ নিয়ে এগিয়ে যাওয়া। কেরিয়ার গড়ে তোলা। নিজেকে নৃত্যশিল্পী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে চাই।’