জৈন হাওয়ালা কেলেঙ্কারিতে যখন প্রথম জগদীপ ধনখড়ের নাম প্রথম তোলে তৃণমূল, সেদিনই এই মামলার মূল অভিযুক্তের মৃত্যু হয়েছে। আর এই মৃত্যুর পিছনে ষড়যন্ত্রের গন্ধ পাচ্ছে তৃণমূল। বৃহস্পতিবার সাংবাদিক সম্মেলন করেন এই আশঙ্কাই প্রকাশ করলেন তৃণমূল সাংসদ সুখেন্দু শেখর রায়। সেই সাংবাদিক সম্মেলনে ফের রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়কে নিশানা করে তৃণমূল সাংসদের প্রশ্ন, ‘হাওয়ায় জৈনের ডায়েরিতে যে ধনখড়ের কথা উল্লেখ রয়েছে, তিনিই কি আমাদের রাজ্যপাল? ৪৮ ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও সেই প্রশ্নের উত্তর কিন্তু পেলাম না।’
এদিন তৃণমূল সাংসদ হাওয়ালা মামলায় মূল অভিযুক্তের ছবি দেখিয়ে বলেন, ‘মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জৈন হাওয়ালা মামলায় রাজ্যপালের নাম নেওয়ার পরই এই মামলায় মূল অভিযুক্ত সুরেন্দ্র জৈনের মৃত্যু হয়েছে। এখন প্রশ্ন হল, এই মৃত্যু কি স্বাভাবিক নাকি এর পিছনে কোনও রহস্য লুকিয়ে আছে, সেই বিষয়টি খতিয়ে দেখা উচিত।’ একইসঙ্গে তৃণমূল সাংসদ এদিন হাওয়ালাকাণ্ড নিয়ে লেখা একটি বই ‘ব্যাড মানি, ব্যাড পলিটিক্স’ –এর কথা উল্লেখ করে বলেন, ‘গতদিন আমি যে পাতা সাংবাদিকদের সামনে তুলে ধরেছিলাম, তাতে শুধু ধনখড় নামটি লেখা রয়েছে এবং ধনখড়ের নামের পাশে একটি সংখ্যা লেখা ছিল। কিন্তু এই বইয়ের একটি পাতায় স্পষ্ট করে জগদীপ ধনখড়ের নামই উল্লেখ করা আছে। এবং তিনি যে ৫ লাখ ২৫ হাজার টাকা নিয়েছিলেন, সেই কথাও উল্লেখ করা আছে।’ একইসঙ্গে তিনি প্রশ্ন তোলেন, বইতে উল্লেখ জগদীপ ধনখড়ই কি রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়, ৪৮ ঘণ্টা কেটে গেলেও তিনি এখনও এই প্রসঙ্গে কোনও কথাই বলছেন না। উনি কোনও জবাব দিচ্ছেন না কেন? ইতিমধ্যে হাওয়ালা মামলাকে সামনে নিয়ে আসার জন্য মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ধন্যবাদ জানিয়েছেন বিশিষ্ট সাংবাদিক বিনীত নারায়ণ।
উল্লেখ্য, ১৯৯১ সালে কাশ্মীর থেকে হিজবুল জঙ্গি আশফাক হুসেন লোনকে গ্রেফতার করার পর জিজ্ঞাসাবাদ করে জানা যায়, হাওয়ালার মাধ্যমে তাদের কাছে টাকা আসত। আশফাক জানিয়েছিলেন, সেই টাকা আসত সুরেন্দ্র জৈন নামে এক শিল্পপতির কাছ থেকে। তদন্তে উঠে আসে, এই হাওয়ালায় জৈনের আত্মীয়রাও জড়িত। আশফাকের বয়ানের ভিত্তিতে গোয়েন্দারা তল্লাশি চালান। তাতে জৈনদের দুটি নোটবুক ও দুটি ডায়েরির হদিশ মেলে। সেই নথি ঘেঁটে দেশে বেশ কয়েকজন প্রভাবশালী নেতার নাম পাওয়া গিয়েছিল।