রাজ্যপাল তথা কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য বিগত বেশ কয়েকদিন ধরেই রাজ্য সরকারের সঙ্গে আইনি লড়াইতে জড়িয়ে আছেন। উপাচার্য নিয়োগ সংক্রান্ত সেই মামলায় রাজ্যপালের হয়ে ফি মেটাচ্ছেন কে? জানা গেল কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আচার্যের আইনজীবীর ফি মেটানো হয়েছে। এই বাবদ প্রায় ১০ লাখ টাকা দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করেন ওমপ্রকাশ মিশ্র। সেই অভিযোগ মেনেও নিয়েছেন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য শান্তা দত্ত। তবে তিনি এতে 'কোনও ভুল দেখছেন না।' (আরও পড়ুন: আধুনিকীকরণে খরচ হওয়ার কথা ৬৪ কোটি! সেই বর্ধমান স্টেশনেই বারবার ঘটেছে দুর্ঘটনা)
আরও পড়ুন: 'রক্ষণাবেক্ষণ হবে কখন? সরকার তো মন্দির তৈরি করবে', বিস্ফোরক দক্ষিণ বর্ধমানের MLA
উপাচার্য নিয়োগ ঘিরে জটিলতা নিয়ে আদালতে মামলা চলাকালীনই সম্প্রতি রাজভবনের সচিবালয় থেকে একটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছিল। শীর্ষ আদালতে স্পেশাল লিভ পিটিশন লড়ার জন্য আইনজীবীদের খরচের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলির সাহায্য চাওয়া হয়েছিল তাতে। এই আবহে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় ইতিমধ্যেই আইনজীবীর ফি বাবদ ৯ লক্ষ ৯০ হাজার টাকা মিটেয়েছেন। এই নিয়ে উপাচার্যের বক্তব্য, 'কলকাতা বড় বিশ্ববিদ্যালয়। তাই রাজ্যপাল আমাদের বিষয়টি সমন্বয় সাধন করতে দিয়েছেন। সকলেই সেখানে অর্থ সাহায্য করছে। সরকার লড়ছে জনগণের টাকা দিয়ে। এই মামলায় জনগণের কোনও স্বার্থ তো নেই। এদিকে আচার্য লড়ছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বার্থে। এর মধ্যে কোথাও কোনও অন্যায় বা অপরাধ দেখছি না। সব বিশ্ববিদ্যালয়ই টাকা দিচ্ছে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের এই তহবিলে। স্বশাসিত বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে নিজস্ব তহবিল থেকে মামলা লড়ার টাকা দেওয়ার অধিকার আছে।'
এদিকে রাজ্যের বারণ সত্ত্বেও কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে হয়েছে সিন্ডিকেট বৈঠক। জানা গিয়েছে, রাজ্যপাল তথা আচার্য সিভি আনন্দ বোসের অনুমতি নিয়েই মঙ্গলবারে সিন্ডিকেট বৈঠকের ডাক দিয়েছিলেন ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য শান্তা দত্ত। এদিকে এই বৈঠকের বিরোধিতায় তৃণমূল ছাত্র পরিষদের তরফ থেকে বিক্ষোভ প্রদর্শন করা হয়েছিল। এদিকে অন্তর্বতী উপাচার্যের দাবি, বিশ্ববিদ্যালয়ের বেশ কিছু বিষয় আটকে রয়েছে। তাই সেই সব ইস্যুর সমাধান সূত্র বের করতে এই বৈঠক প্রয়োজনীয় ছিল। এদিকে রিপোর্ট অনুযায়ী, মঙ্গলের বৈঠকে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে। জাতীয় শিক্ষানীতি নিয়েও কথা হয়েছে। এদিকে ২০২২ সালের পর থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে স্থায়ী উপাচার্য না-থাকায় শংসাপত্র পাচ্ছেন না ছাত্র-ছাত্রীরা। এমতাবস্থায় চাকরিতে যোগদান করতেও সমস্যায় পড়তে হচ্ছে তাঁদের। সিন্ডিকেট বৈঠকে এই সব বিষয়েও আলোচনা হয়েছে। এদিকে বৈঠক নিয়ে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের অভিযোগ, এই বৈঠক অবৈধ। নিজেদের দাবিকে সামনে রেখে বিশ্ববিদ্যালয়ের বাইরে ধরনায় বসেন টিএমসিপি নেতা ও সমমনোভাবাপন্ন পড়ুয়া। টিএমসিপির আরও অভিযোগ, সিন্ডিকেটের বৈঠক চলাকালীন সেখানে বনগাঁ উত্তরের বিজেপি বিধায়ক অশোক কীর্তনিয়া ঢুকেছিলেন। এই বিক্ষোভ আন্দোলন নিয়ে অবশ্য কোনও মন্তব্য করতে চাননি উপাচার্য।