একশো দিনের কাজের বকেয়া টাকা আটকে রেখেছে কেন্দ্রীয় সরকার। তাই গ্রামীণ এই গরিব মানুষজনের টাকা রাজ্য সরকার নিজেই মিটিয়ে দেবে বলে ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে তারিখটা একটু পরিবর্তন হয়েছে। ২১ ফেব্রুয়ারির পরিবর্তে ১ মার্চ। টাকা পাবেন জবকার্ড হোল্ডাররা। কিন্তু বিজেপি নেতা–মন্ত্রীরা ক্যাগের রিপোর্টকে সামনে নিয়ে এসে রাজ্যের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ তুলেছিলেন। যা আগেই খারিজ করে দিয়েছেন রাজ্যের মুখ্যসচিব বিপি গোপালিকা। এবার বিষয়টি নিয়ে মুখ খুললেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আজ, বৃহস্পতিবার বিধানসভায় মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘অনেকেই আছে নিজেরা কোনও কাজ করে না। কিন্তু একতরফা নেতিবাচক কথা বলতে থাকে। শুধু ভাঁওতা দেওয়ার জন্য এসব বলে যায়। কিন্তু উত্তর শোনার জন্য অপেক্ষা করে না। কারণ ওরা সত্যি শুনতে ভয় পায়।’
এদিকে এই কথা বলার উদ্দেশ্য বিজেপি বিধায়কদের। তাঁরা বিধানসভায় মুখ্যমন্ত্রীর অনুপস্থিতিতে নানা অভিযোগ তুলে যান। যার পক্ষে কোনও সত্যতা তুলে ধরতে পারেন না। আবার যখন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তথ্য–নথি নিয়ে এসে জবাব দেন তখন চিৎকার করে ওই কথা না শুনে ওয়াকআউট করেন। বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী–সহ বিজেপি বিধায়করা এটা করে থাকেন বলে অভিযোগ। সেটাই নাম না করে বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী। বৃহস্পতিবার নিজের বক্তব্যের শুরুতেই মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আমি অর্থমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য যে বাজেট পেশ করেছে সেই বাজেটকে সমর্থন করে কিছু কথা বলছি। ক্যাগ রিপোর্ট নিয়ে আপনারা কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে কথা বলুন। ক্যাগ রিপোর্টে একশো শতাংশ মিথ্যা কথা বলা হয়েছে। এই রিপোর্ট আমরা মানি না। একশো দিনের কাজে ৫০ দিন কাজ দেওয়া হবে বলে যেটা বলা হয়েছে বাজেটে সেটা তো কন্টিনিউয়াস প্রজেক্ট। ওরা জানে না, তাই মিথ্যা কথা বলেছে। আর পথশ্রী প্রকল্প সম্পূর্ণ রাজ্যের টাকা। কেন্দ্রের এক টাকাও নেই।’
অন্যদিকে তৃণমূল কংগ্রেস সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় যখন ১০০ দিনের বকেয়া টাকা নিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে সংসদে জিজ্ঞাসা করেছিলেন তখন তিনিও ক্যাগ রিপোর্ট দেখতে বলেন। আর সম্প্রতি সাংবাদিক বৈঠক করে বিপি গোপালিকা জানান, শুধু ২০২১ সাল পর্যন্তই নয়, ২০২১–২২ এবং ২০২২–২৩ সাল পর্যন্ত যা যা (ইউসি) ইউটিলাইজেশন সার্টিফিকেট দেওয়ার কথা ছিল, সব কেন্দ্রীয় সরকারের মন্ত্রকের কাছে জমা দেওয়া হয়েছে। মুখ্যসচিব বলেছেন, ‘যে ২ লাখ ২৯ হাজার কোটি টাকার কথা বলা হচ্ছে, সেটাও একটি মিসআন্ডারস্ট্যান্ডিং তৈরি করা হচ্ছে। রাজ্য সরকার এই ক্যাগ রিপোর্ট মানতে পারছে না’।
আরও পড়ুন: দু’জন বিজেপি নেতা–নেত্রীকে গ্রেফতার করল পুলিশ, সন্দেশখালিতে অশান্তি করার অভিযোগে
এছাড়া দু’দিন আগে রাজ্যের পঞ্চায়েতমন্ত্রী প্রদীপ মজুমদার বিধানসভায় ৬৫টি ইউসি জমা দিয়েছেন। যার প্রাপ্তিস্বীকার করেছে স্বয়ং কেন্দ্রীয় সরকার। তারপর তা কেন দেখছেন না বিজেপি বিধায়করা? উঠছে প্রশ্ন। সুতরাং ক্যাগ রিপোর্ট নিয়ে প্রশ্ন উঠছেই। আজ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, আবাসের টাকা প্রাপকদের আমরা এপ্রিল মাস থেকে দেব। এপ্রিল পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। মে মাসের ১ তারিখ থেকে দেওয়া হবে টাকা। এদিন কেন্দ্রীয় সরকারকে তুলোধনা করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘ইলেকশন আসলেই চা–বাগান, ইলেকশন আসলেই এনআরসি। ইলেকশনের আগেই আমি শুনলাম চা বাগানের অনেকের আধার কার্ড বাতিল করা হয়েছে। প্রশাসনকে দেখতে বলেছি।’