কসবার ছাত্র মৃত্যুর ঘটনাকে ঘিরে নানা প্রশ্ন। কীভাবে মৃত্যু হল ওই ছাত্রের? যদি সে আত্মহত্যা করে থাকে তবে কেন সে এমন চরম পথ বেছে নিল? তবে ওই ছাত্রের প্রতিবেশীরা জানিয়েছেন, ওই ছাত্রের মা অন্যত্র থাকেন।তবে কি মায়ের থেকে দূরত্বের জেরেই সে মানসিক অবসাদে ভুগত? স্কুলের বন্ধুদের মান অভিমান, শিক্ষকদের বকাঝকা সেটা বলার মতো কাউকে পেত না ছাত্রটি। যার জেরে সে এই চরমপথ বেছে নিল?
কসবার সিলভার পয়েন্ট হাইস্কুল। সেই স্কুল থেকে উদ্ধার হয়েছিল দশম শ্রেণির পড়ুয়া শেখ শানের দেহ। কসবার রথতলার সিলভার পয়েন্ট হাইস্কুলের এই ঘটনা ফের আয়নার সামনে দাঁড় করাল গোটা শিক্ষাব্যবস্থাকে। প্রশ্ন উঠছে কীভাবে ওই ছাত্রের মৃত্যু হল? সে কি ঝাঁপ দিল? কীসের এত চাপ ছিল তার?
সবটাই তদন্ত করে দেখছে পুলিশ। ওই ছাত্রের এক বন্ধুর বাবা ইতিমধ্যেই সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, স্কুল থেকে এসে তাঁর সন্তান একেবারে কাঁপছিল। স্কুলের তরফ থেকে ওই ছাত্রকে কঠোর শাস্তি দেওয়ার হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছিল। তবে স্কুল কর্তৃপক্ষ এই অভিযোগ মানতে চায়নি।
এদিকে সূত্রের খবর, সোমবার ওই ছাত্রের বায়োলজির প্রজেক্ট জমা দেওয়ার দিন ছিল। কিন্তু একাধিক ক্ষেত্রে দেখা যেত শিক্ষক শিক্ষিকাদের এই সব প্রজেক্ট পছন্দ হত না। তার জেরে বার বার ফেরত পাঠানো হত সেই প্রজেক্টগুলোকে। এর জেরে স্বাভাবিকভাবেই চাপে থাকত পড়ুয়ারা। ওই ছাত্রের সেদিনই ছিল বায়োলজি প্রজেক্ট জমা দেওয়ার শেষ দিন। তা নিয়ে টেনশনে ছিল সে। কিন্তু সেই মানসিক চাপকে শেয়ার করার মতো সে কাউকে পায়নি।
এদিকে প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জেনেছে তার বায়োলজির প্রজেক্ট বাতিল করে দিয়েছিলেন শিক্ষিকা। প্রজেক্ট নিয়ে শিক্ষিকাদের সঙ্গে তার কিছুটা তর্কাতর্কিও হয়েছিল। এরপরই তাকে শাস্তি পেতে হবে বলে জানিয়েছিলেন শিক্ষিকা। এমনকী একাদশ শ্রেণির সামনে তাকে এক ঘণ্টা কান ধরে দাঁড় করিয়ে রাখা হয়েছিল বলে সূত্রের খবর। তবে কি এভাবে সিনিয়রদের সামনে কান ধরে দাঁড় করিয়ে রাখার ঘটনা মানতে পারেনি সে? আবার সেই অভিমান মায়ের কাছে বলে মনটা হালকা করার মতো পরিস্থিতিও তার মধ্য়ে নেই। সেকারণেই কি ওই ছাত্র কোনও দিশা পায়নি?
সবটাই খতিয়ে দেখছে পুলিশ। আসলে অনেকের মতে, প্রজেক্টের নাম করে স্কুলে স্কুলে ছাত্রছাত্রীদের উপর ভয়াবহ চাপ তৈরি করা এটা কার্যত রেওয়াজ হয়ে দাঁড়িয়েছে। বেসরকারি ইংরাজি মাধ্যম স্কুলের একাংশে এই প্রবণতা যেন লাগামছাড়া। সেই কিশোর কিশোরীদের মানসিক অবস্থার কথা বিবেচনা না করেই এসব করা হচ্ছে বলে অভিযোগ। তবে কি তার জেরেই ফুলের মতো কিশোর কিশোরীদের চিরতরে হারিয়ে যেতে হচ্ছে?