ইউক্রেনের ওপর রুশ হামলার ৮ মাস কেটে গিয়েছে। তাও সংঘাতের আবহে কোনও ইতি টানা যায়নি। এদিকে এই যুদ্ধের মাঝে পড়ে প্রবল সংকটে পড়ে যান বহু ভারতীয় পড়ুয়া, যাঁরা ইউক্রেনে মেডিক্যাল পড়তে গিয়েছিলেন। তাঁদেরই অন্যতম কেরলের আনন্দ এ।
আনন্দ দেশে ফিরে এমবিবিএসের জন্য দেশের কোনও প্রতিষ্ঠানে শিক্ষাবর্ষের মাঝে প্রবেশ করতে পারেননি। এদিকে, ইউক্রেনের বুকোবিনিয়ন স্টেট মেডিক্যাল ইউনিভার্সিটিতে আনন্দ দ্বিতীয় বর্ষে পড়াশোনা করছেন। ফলে যুদ্ধের জন্য দেশে ফিরেও কেরিয়ার নিয়ে পড়ে যান বিপাকে। এরপর তিনি চিকিৎসক হওয়ার স্বপ্নকে কার্যত দমিয়ে রেখেই নার্সিংয়ে ভর্তি হতে বাধ্য হন।
এডুকেশন লোন নেওয়া হয়েছে ১৫ লাখের। আনন্দ বলছেন, তিনি যখন ভর্তি হতে ইউক্রেন গিয়েছিলেন, তখন তাঁর ফ্লাইট দেরি করার জন্য সময় পেরিয়ে গিয়েছিল। ফলে তাঁকে বাড়তি ১.৫ লাখ টাকা দিতে হয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে। এরপর পড়াশোনার চলার মাঝে শুরু হয় ইউক্রেন, বনাম রাশিয়ার যুদ্ধ। ততক্ষণে ভারতে এসে পড়েন আনন্দ। আর তার মাঝে বাবা মায়ের সঞ্চয়ের ৫ থেকে ৬ লাখ টাকা তিনি খরচ করে ফেলেন। ব্যাঙ্কের লোনের ৩ লাখ খরচ হয়ে যায় পড়াশোনায়। আর বাকি ফ্লাইট, খাওয়া সহ বিভিন্নখাতে খরচ হয়।
আনন্দ বলছেন, ‘আমাকে অন্য কোনও দেশে পড়তে পাঠানোর মতো স্বচ্ছ্বলতা নেই পরিবারে।’ ফলে চিকিৎসক হওয়ার আশা ছেড়ে বেঙ্গালুরুর একটি নার্সিং কলেজে ভর্তি হয়ে যান আনন্দ। তাঁর আশা এতে তিনি বিদেশে চাকরির সুযোগ পাবেন। আনন্দ বলছেন, ‘আমার পক্ষে এটা সহজ নয়। চিকিৎসা শাস্ত্রের পড়াশোনা শেষ করতে সময় লাগে। আমি ২১ বছর বয়সী। আর ভারতে যোগ্যতা প্রমাণের জন্যও পরীক্ষা দিতে হয়।’ ফলে তাড়াতাড়ি কোনও কোর্সে ভরতি হয়ে নিজের পায়ে দাঁড়ানোই লক্ষ্য ছিল আনন্দের। আনন্দের মতো তাঁর এক সহপাঠী মেলবিন শাজিও একইভাবে নার্সিং কোর্সে ভরতি হন। মেলবিন বিডিএস-এ পেলেও, নার্সিংয়ে ভর্তি হয়ে যান আনন্দের মতোই।