জোড়া হারের পর অবশেষে চিপকে জয়ে ফিরল চেন্নাই সুপার কিংস। সোমবার কলকাতা নাইট রাইডার্সের বিরুদ্ধে ৭ উইকেটে জয় ছিনিয়ে নিল তারা। এই নিয়ে ঘরের মাঠে জয়ের হ্যাটট্রিক হয়ে গেল এমএস ধোনিদের।
কলকাতা নাইট রাইডার্সের বিরুদ্ধে ১৩৮ রান তাড়া করতে নেমে চেন্নাই সুপার কিংস সহজেই নিজেদের লক্ষ্যে পৌঁছে যায়। দলের অধিনায়ক রুতুরাজ গায়কোয়াড়ের চওড়া ব্যাটে হাসতে হাসতে ম্যাচ জেতে সিএসকে। এই ম্যাচে ফের চেনা ছন্দে পাওয়া যায় রুতুরাজকে। দুরন্ত হাফসেঞ্চুরি হাঁকান তিনি। আর ম্যাচ জেতার পর বলেন, এদিনের জয়ের মুহূর্তটি তাঁকে নস্ট্যালজিক করে তুলেছে।
আরও পড়ুন: পাওয়ার প্লে-র পর পরিকল্পনা অনুযায়ী খেলতেই পারিনি- বাজে ভাবে হারের পর ভুল স্বীকার করলেন শ্রেয়স
মাহি পাশে থাকায় নস্ট্যালজিক রুতু
ম্যাচের পর রুতুরাজ গায়কোয়াড় বলেন, ‘আমার জন্য এই মুহূর্তটি কিছুটা নস্ট্যালজিক। আমার প্রথম আইপিএল ফিফটির সময়েও একই পরিস্থিতি ছিল। সেদিনও ম্যাচ ফিনিশ করার জন্য মাহি ভাই আমার সঙ্গে ছিল। এবং আমরা ম্যাচটি ফিনিশ করেছিলাম।’ প্রসঙ্গত, শিবম দুবে আউট হওয়ার পর, পাঁচ নম্বরে ব্যাট হাতে নেমেছিলেন এমএস ধোনি। তখন জয়ের জন্য প্রয়োজন মাত্র ৩ রান। দলকে একসঙ্গে জিতিয়ে মাঠ ছাড়েন সিএসকে-র বর্তমান এবং প্রাক্তন অধিনায়ক।
তরুণদের কঠিন পরিস্থিতিতে ফেলতে চাননি
রুতুরাজও মেনে নিয়েছেন, উইকেট খুব একটা ব্যাটিং সহায়ক ছিল না। ১৫০-১৬০ রান হওয়ার মতোই উইকেট ছিল এটি। তাঁর দাবি, ‘উইকেট নিয়ে কিছুটা চাপ ছিল। তার উপর জিঙ্কস (অজিঙ্কা রাহানে) আহত হওয়ার কারণে, ব্যাট করার দায়িত্ব আমার উপর ছিল, আমি তরুণদের কঠিন পরিস্থিতিতে ফেলতে চাইনি। এই উইকেট ছিল ১৫০-১৬০ রান হওয়ার মতো। টি-টোয়েন্টিতে কখনও কখনও একটু ভাগ্যের প্রয়োজন হয়।’
আরও পড়ুন: অধিনায়ক এটাই চেয়েছিল… ভাইরাল হল রোহিতের ড্রেসিংরুমের বক্তব্য
সঙ্গে গায়কোয়াড় যোগ করেছেন, ‘এই দলের কাউকেই আমার আসলে কিছু বলার দরকার পড়ে না। প্রত্যেকেই এখানে তারকা। আর কিছু বলার হলে মাহি ভাই (এমএস ধোনি) এবং (স্টিফেন) ফ্লেমিং তো রয়েইছে।’
নিজের স্ট্রাইকরেট নিয়ে মন্তব্য
রুতু এদিন হাফসেঞ্চুরি করলেও, তাঁর স্ট্রাইকরেট আহামরি ছিল না। ১১৫.৫১ স্ট্রাইকরেটে ব্যাট করেছেন তিনি। ম্যাচের পর এই প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমি বলব না যে, আমার শুরুটা মন্থর হয়েছে। টি-টোয়েন্টিতে এমন সময় আসে, যখন আপনি এক বা দুই বলের মধ্যেই আউট হয়ে যান। কখনও কখনও এগিয়ে যাওয়ার জন্য আপনার কিছুটা ভাগ্যের প্রয়োজন হয়। আমার স্ট্রাইকরেট এখন বিশেষজ্ঞদের আলোচনার বিষয় হতে পারে।’
আরও পড়ুন: নিজের প্রথম IPL-এই গ্যালারিতে একটি মেয়েকে ভালো লেগেছিল- তারপর? প্রেমের গল্প শোনালেন শ্রেয়স
ম্যাচের সংক্ষিপ্ত ফল
প্রথমে ব্যাট করে ৯ উইকেট হারিয়ে ১৩৭ রান তোলে কেকেআর। জবাবে ১৭.৪ ওভারে লক্ষ্যে পৌঁছে যায় সিএসকে। রবীন্দ্র জাদেজার ঘূর্ণি ম্যাচের ভাগ্য বদলে দেয়। ইনিংসের প্রথম বলে ফিল সল্টের উইকেট হারালেও পাওয়ার প্লে তে ম্যাচের রাশ ছিল নাইটদের হাতে। ৬ ওভারের শেষে ১ উইকেট হারিয়ে কেকেআর-এর রান ছিল ৫৬। কিন্তু জাড্ডুর এক ওভার ম্যাচের রং বদলে দেয়। ওভারের প্রথম এবং পঞ্চম বলে ফিরিয়ে দেন অংকৃষ রঘুবংশী (২৪) এবং সুনীল নারিনকে (২৭)। এটাই ম্যাচের টার্নিং পয়েন্ট। এর পর চেন্নাই বোলারদের কাছে আত্মসমর্পণ করে নাইটরা। মাত্র ৮ রানের মধ্যে ৩ উইকেট হারায় কেকেআর। সর্বোচ্চ রান শ্রেয়স আইয়ারের। ৩২ বলে ৩৪ রান করে আউট হন শ্রেয়স। বেঙ্কটেশ আইয়ার (৩), রমনদীপ সিং (১৩), রিঙ্কু সিং (৯), আন্দ্রে রাসেলরা (১০) রান পাননি।
রান তাড়া করতে নেমে শুরু থেকেই ছন্দে ছিল চেন্নাই। রুতুরাজ গায়কোয়াড়, ড্যারিল মিচেলদের ব্যাটিং দেখে বোঝা যাচ্ছিল না, কয়েক মিনিট আগে এই পিচেই ব্যাট করেছে কেকেআর। তবে দ্বিতীয় ইনিংসে শিশিরের জন্য কার্যকরী ভূমিকা নিতে পারেননি নাইট স্পিনাররা। দলের ২৭ রানে রাচিন রবীন্দ্র (১৫) ফিরে গেলেও, দ্বিতীয় উইকেটে ৭০ রান যোগ করে রুতুরাজ এবং মিচেল। ২৫ রানে নারিনের বলে বোল্ড হন কিউয়ি ক্রিকেটার। তবে শেষ পর্যন্ত টিকে থেকে দলকে জিতিয়ে মাঠ ছাড়েন রুতু। ৯টি চারের সাহায্যে ৫৮ বলে অপরাজিত ৬৭ করেন তিনি। সঙ্গত দেন শিবম দুবেও। ৩টি ছয়, ১টি চারের সাহায্যে ১৮ বলে ২৮ রান করেন দুবে। দুবে আউট হতে পাঁচ নম্বরে ব্যাট হাতে নামেন এমএস ধোনি। তখন জয়ের জন্য প্রয়োজন মাত্র ৩ রান।