আমদাবাদে আইপিএল অভিযান শুরুর আগে থেকেই হার্দিক পান্ডিয়া সম্ভবত জানতেন যে, তাঁকে দর্শকদের বিদ্রুপের মুখে পড়তে হতে পারে। যেভাবে গুজরাট টাইটানসের ভরা সংসারে ভাঙন ধরিয়ে তিনি মুম্বই শিবিরে যোগ দিয়েছেন, তাতে টাইটানসের সমর্থকরা যে খুশি হবেন না, সেটা প্রত্যাশিতই ছিল।
তবে আরও বড় যে আশঙ্কাটা কাজ করছিল ক্রিকেটমহলে, সেটাও সত্যি হয় শেষমেশ। রোহিতকে সরিয়ে যেভাবে হার্দিককে মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের ক্যাপ্টেন করা হয়েছে, তাতে বেজায় চটে এমআই সমর্থকরাও। তাই ঘরের মাঠে মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের নতুন ক্যাপ্টেনকে বিদ্রুপের মুখে পড়তে হতে পারে, সেটা ধরে নেওয়া হচ্ছিল আগে থেকেই।
সোমবার ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে আইপিএল ২০২৪-র প্রথম হোম ম্যাচে মাঠে নামে মুম্বই ইন্ডিয়ান্স। টসের সময় থেকে ম্যাচের শেষ পর্যন্ত, হার্দিককে হজম করতে হয় দর্শকদের টিপ্পনি। দর্শকদের ক্ষোভ প্রশমিত করার একমাত্র উপায় ছিল জয়। মুম্বই রাজস্থান রয়্যালসের কাছেও হেরে বসায় হার্দিকের কাছে পরিস্থিতি অসহনীয় হয়ে ওঠে আরও।
একে তো ঘরে-বাইরে দর্শকদের বিদ্রুপ হজম করতে হচ্ছে হার্দিককে। তার উপর প্রথম তিন ম্যাচে হেরে ফ্র্যাঞ্চাইজির আস্থার মর্যাদাও দিতে পারেননি ক্যাপ্টেন পান্ডিয়া। রাজস্থান ম্যাচের শেষে তাই দৃশ্যতই হতাশ দেখায় হার্দিককে।
সকলের সামনে হাসিখুশি থাকার চেষ্টা করেন। সতীর্থ ও প্রতিপক্ষ দলের খেলোয়াড়দের সঙ্গে হাসি মুখেই সৌজন্য বিনিময় করেন পান্ডিয়া। তবে দলের সবাই যখন মাঠ ছেড়ে সাজঘরে ফিরেছেন, হার্দিক আশ্রয় খুঁজে নেন ডাগ-আউটের এককোণে। ডাগ-আউটের একেবারে পিছনের সারিতে একাকী হার্দিকের বসে থাকার ছবিটা নিশ্চিতভাবেই অর্থবহ।
দলের মধ্যে নিজের গ্রহণযোগ্যতা ফেরানোর চেষ্টায় কসুর করেননি পান্ডিয়া। বিপর্যয়ের সময়ে ব্যাট হাতে পালটা লড়াইয়ে দলকে টেনে তোলার চেষ্টা করেছেন তিনি। যদিও সফল হতে পারেননি। ক্যাপ্টেন হিসেবে বল হাতে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিতে চেয়েছেন। সফল হয়নি পরিকল্পনা। ফিল্ডিংয়ে তৎপরতা দেখিয়ে উদ্দীপ্ত করতে চেয়েছেন সতীর্থদের। তাও ফলপ্রসূ হয়নি। স্বাভাবিকভাবেই ব্যর্থতার ধারা থেকে বেরোতে না পেরে হতাশ হওয়াই স্বাভাবিক পান্ডিয়ার।
সোমবার ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে রাজস্থান রয়্যালসের বিরুদ্ধে নিজেদের তৃতীয় লিগ ম্যাচে মাঠে নামে মুম্বই ইন্ডিয়ান্স। টস হেরে শুরুতে ব্যাট করতে নেমে মুম্বই নির্ধারিত ২০ ওভারে ৯ উইকেটের বিনিময়ে ১২৫ রান তোলে। পালটা ব্যাট করতে নেমে ধীরে সুস্থে জয়ের লক্ষ্যে পৌঁছে যায় রাজস্থান রয়্যালস। তারা ১৫.৩ ওভারে ৪ উইকেটের বিনিময়ে ১২৭ রান তুলে ম্যাচ জিতে যায়। অর্থাৎ, নিজেদের ডেরায় ২৭ বল বাকি থাকতে ৬ উইকেটে ম্যাচ হারে মুম্বই ইন্ডিয়ান্স।