শুভব্রত মুখার্জি: ১৯৮৩ সালের পর দীর্ঘ ২৮ বছর বাদে ২০১১ সালে ফের একবার ওয়ানডে বিশ্বকাপ জিতেছিল ভারতীয় দল। মুম্বইয়ের ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামের গ্যালারিতে ২০১১ সালের ২ এপ্রিল যখন ভারত অধিনায়ক মহেন্দ্র সিং ধোনির মারা বিশাল ছয়টা আছড়ে পড়েছিল, তার সঙ্গে সঙ্গেই যেন উত্তাল হয়ে উঠেছিল কাশ্মীর থেকে কন্যাকুমারী। ভারতের সেই বিশ্বকাপজয়ী দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন বিরাট কোহলিও।
ফাইনালে ভারত পরপর সচিন তেন্ডুলকর এবং বীরেন্দ্র সেহওয়াগের উইকেট হারানোর পরবর্তীতে গৌতম গম্ভীরের সঙ্গে একটি গুরুত্বপূর্ণ পার্টনারশিপ গড়েছিলেন তিনি। তারপর কেটে গিয়েছে দীর্ঘ এক যুগেরও বেশি সময়। বর্তমানে ক্রিকেট বিশ্বের অন্যতম তারকা বিরাট কোহলি। ২০২৩ সালে ভারতে ফের অনুষ্ঠিত হতে চলেছে ওয়ানডে বিশ্বকাপ। আর তার আগেই স্মৃতিচারণায় ডুব দিলেন বিরাট কোহলি। জানালেন সেই বিশ্বকাপ জয়ের সময়ে তাঁর বয়স ছিল মাত্র ২৩। ফলে সেই সময়ে বিশ্বকাপ জয়ের বিশালতা নাকি তিনি অনুভব করতেই পারেননি! পাশাপাশি সেই সময়ে সিনিয়র ক্রিকেটাররা যে কি অপরিসীম চাপের মধ্যে ছিলেন, তাও জানাতে ভোলেননি তিনি। বিরাট কোহলি স্পষ্টই জানিয়েছেন, দেশের প্রতি সেই বয়সের আবেগ এবং আসন্ন বিশ্বকাপে আবেগের মাত্রার মধ্যে বিস্তর ফারাক রয়েছে।
বিষয়টি নিয়ে বলতে গিয়ে কোহলি বলেছেন, ‘আমার ক্রিকেট ক্যারিয়ারের সব থেকে বড় হাইলাইট অবশ্যই ২০১১ সালের বিশ্বকাপ জেতা। ওই বিশ্বকাপ জেতার সময়ে আমার বয়স ছিল মাত্র ২৩। আর সেই কারণেই আমি সম্ভবত এই জয়ের বিশালতা তখন উপলব্ধি করতে পারিনি। তবে এখন আমার বয়স ৩৪। আরও অনেক বিশ্বকাপেই আমি খেলেছি, যেগুলো আমরা জিততে পারিনি।সুতরাং আমি সেই সময়ের সমস্ত সিনিয়র ক্রিকেটারের (২০১১ বিশ্বকাপ) আবেগ বুঝতে পারি। সবচেয়ে বেশি বুঝি সচিন তেন্ডুলকরের আবেগকে। দলের প্রায় সব সিনিয়র ক্রিকেটারকে দেখেছি, সেই সময়ে তারা কতটা চাপে ছিল। যেহেতু সেটা সচিনের শেষ বিশ্বকাপ ছিল, ফলে ওর চাপ, আবেগটা আরও বেশি ছিল। এর আগে সচিন অনেক বিশ্বকাপ খেলেছে। তবে বিশ্বকাপ জয়ের স্বাদ ও পেয়েছিল নিজের শহর মুম্বইতে। যা ওর জন্য বিশেষ কিছু ছিল নিঃসন্দেহে। এটা ওর কাছে স্বপ্নপূরণ হওয়ার মতোই ছিল।’
আরও পড়ুন: এশিয়া কাপে কোহলিদের হাতে বাবর বধ পাকা, দাবি ঠুকলেন বিশ্বকাপজয়ী প্রাক্তনী
কোহলি আরও জানিয়েছেন, ‘সেই সময়ে আমরা যখন বিশ্বকাপের ম্যাচ খেলতে দেশজুড়ে ভ্রমণ করছিলাম, তখন কী রকম চাপে ছিল ক্রিকেটাররা সেটা আমার স্পষ্ট মনে আছে। সৌভাগ্যবশত ওই সময়ে এত সোশ্যাল মিডিয়ার বাড়বাড়ন্ত ছিল না। তাহলে ব্যাপারটা ভয়ঙ্কর হত। তবে সত্যি বলতে বিমানবন্দরে যখন ম্যাচ খেলার জন্য পৌঁছে যাই, তখন থেকেই আমাদের ভাবনায় ছিল, বিশ্বকাপ জিততে হবে। সিনিয়র ক্রিকেটারদের দায়িত্ব ছিল সকলের চাপ সামলানোর। ওই মুহূর্তটা দারুণ ছিল। আর ওই রাত ছিল জাদুকরী এক রাত (বিশ্বকাপ জয়ের রাত)। মুহূর্তটা ছিল অনবদ্য এক মুহুর্ত।’
প্রসঙ্গত ২০১১ সালে ঘরের মাঠের বিশ্বকাপটি ছিল সচিনের শেষ বিশ্বকাপ। এর আগে কখনও বিশ্বকাপ জেতেননি সচিন। ফলে সচিনের কাছে ওই ট্রফির গুরুত্ব যেমন ছিল অপরিসীম, তেমন ছিল আবেগের, এমনটাই দাবি করেছেন বিরাট। পাশাপাশি তাঁর মতে ওই সময়ে বিশ্বকাপ জয়ের বিশালতাটুকু ভাল মতো বুঝতেই পারেননি তিনি। কারণ সেই সময়ে তাঁর বয়স ছিল অত্যন্ত কম। ভারতের কাছে সেই বিশ্বকাপ ছিল ২৮ বছরের শিরোপার খরা কাটানোর লড়াই। সেই লড়াইয়ে সেবার সফল হয়েছিলেন বিরাট -সচিনরা।
রোহিতদের প্রস্তুতির রোজনামচা, পাল্লা ভারি কোন দলের, ক্রিকেট বিশ্বকাপের বিস্তারিত কভারেজ, সঙ্গে প্রতিটি ম্যাচের লাইভ স্কোরকার্ড বিস্তারিত ক্রীড়াসূচি - এর জন্য চোখুন HT Bangla - তে