পঞ্চম টেস্টে দলে ফিরে মার্ক উড একেবারে আগুনে মেজাজে ধরা দেওয়ার চেষ্টা করেন। ধরমশালার পিচে পেসারদের জন্য প্রাণ কতটা আছে, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে পারে। কিন্তু মার্ক উড চেষ্টার ত্রুটি রাখেননি। তীব্র গতিতে একের পর এক শর্ট পিচ বল করে গিয়েছেন। যদিও উইকেট পাননি।
তবে বৃহস্পতিবার তাঁর ১৫২ কিমি গতিতে আছড়ে পড়া বাউন্সারে পুল মেরে চমকে দিয়েছিলেন রোহিত শর্মা। আর শনিবার আবার উডকে চমকালেন সরফরাজ খান। উডের বাড়তি গতি এবং বাউন্সকে যে পরোয়াই করেন না ২৬ বছরের তারকা, তা তিনি ভালো ভাবেই বুঝিয়ে দিলেন। উডের শর্ট পিচ ডেলিভারিকে তিনি ‘ডাক’ করলেন বটে, কিন্তু উইকেটরক্ষক বেন ফোকসের দস্তানায় জমা পড়তে দিলেন না। ১৪৬ কিলোমিটার প্রতি ঘন্টা বেগে করা বলটিকে অন্তিম মুহূর্তে ‘আপার কাট’ শটে পাঠিয়ে দেন বাউন্ডারির বাইরে। থার্ড ম্যান বাউন্ডারির সামনে একটি ড্রপ খেয়ে তা স্পর্শ করে মাঠের সীমানা। ডাইভ দিয়েও চার রান রোখা সম্ভব হয়নি।
আইপিএলে দিল্লি ক্যাপিটালসের হয়ে খেলার সময়ে সরফরাজ কিন্তু উডের বলে এরকমই আপারকাট মারতে গিয়ে আউট হয়েছিলেন। সেবার লখনউ সুপার জায়ান্টসের হয়ে খেলছিলেন মার্ক উড। সেই ম্যাচে আপারকাট মারতে গিয়ে উডের ইনসুইংগারে ঠকেছিলেন তিনি। সেই প্রতিশোধই যেন এবার নিলেন টেস্টের মঞ্চে। উডের বলে সরফরাজ মারলেন সেই শট, যেটা সোজা চার হয়ে গেল। উডকে পুল শটে একটি ছক্কাও হাঁকান সরফরাজ। শুক্রবার ম্যাচের দ্বিতীয় দিনে ৬০ বলে ৫৬ করে অবশ্য আউট হয়ে যান সরফরাজ। তাঁকে ফেরান শোয়েব বশির। জো রুটকে ক্যাচ দিয়ে আউট হয় সরফরাজ।
আরও পড়ুন: সরফরাজের আবেদনে পাত্তা না দিয়ে DRS নিলেন না রোহিত, পরে কপাল চাপড়ালেন অধিনায়ক- ভিডিয়ো
ধরমশালায় শুরুর দিকে একটু যেন চাপেই ছিলেন সরফরাজ। শুরুটা ধীর গতিতে করেছিলেন। বিশেষ করে পেসারদের বিরুদ্ধে শট খেলার সুযোগ পাচ্ছিলেন না তিনি। কিন্তু সময় যত গড়িয়েছে, ততই যেন নিজেকে মেলে ধরেছেন। অভিষেক টেস্টে রাজকোটে পরপর দুই ইনিংসে হাফসেঞ্চুরি করেছিলেন। রাঁচিতে অবশ্য সাফল্য পাননি। তবে ধরমশালায় এসে ফের হাফসেঞ্চুরি হাঁকান তিনি।
আরও পড়ুন: সেঞ্চুরি হাঁকিয়েই ঝুঁকে অভিবাদন গ্রহণ গিলের, উচ্ছ্বাস চেপে রাখতে পারলেন না বাবা- ভিডিয়ো
ধরমশালায় ইংল্যান্ডের ব্যাটাররা প্রথমে ব্যাট করতে নেমে ভারতীয় স্পিনারদের দাপটে পুরো কেঁপে গিয়েছেন। ভারতের বাঁ-হাতি রিস্ট স্পিনার কুলদীপ দুরন্ত ছন্দে পাঁচ উইকেট তুলে নিয়েছেন। এটি এক ইনিংসে তাঁর চতুর্থ পাঁচ উইকেট। রবিচন্দ্রন অশ্বিন নিয়েছেন ৪ উইকেট রবীন্দ্র জাদেজা নিয়েছেন এক উইকেট। বৃহসপ্তিবার প্রথম দিনে চায়ের পরপরই ইংল্যান্ড তাদের প্রথম ইনিংসে ২১৮ রানে অলআউট হয়ে যায়। জ্যাক ক্রলি ৭৯ করেন। এ ছাড়া বাকিরা কেউ ৩০ রানেও পৌঁছতে পারেননি। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ২৯ রান করেছেন জনি বেয়ারস্টো।
জবাবে ভারতের দুই ওপেনার যশস্বী জয়সওয়াল এবং রোহিত শর্মা মিলে শুরুটা দুরন্ত করেন। ৫৪ করে যশস্বী আউট হলেও, রোহিত সেঞ্চুরি পূরণ করেন। ১০৩ রান করেন ভারত অধিনায়ক। শুভমন গিলও সেঞ্চুরি হাঁকান। দেবদত্ত পাডিক্কাল আবার ৬৫ করেন। সরফরাজ খান ৫৬ করে আউট হন। ভারতের প্রথম পাঁচ ব্যাটারই অন্ততপক্ষে হাফসেঞ্চুরি করার নজির গড়েছেন। দ্বিতীয় দিনের শেষে ৮ উইকেটে ৪৭৩ রান ভারতের। ২৭ করে কুলদীপ যাদব এবং ১৯ করে জসপ্রীত বুমরাহ আপাতত ক্রিজে রয়েছেন।