এই বছর আইপিএলে মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের পারফরম্যান্স গোড়া থেকেই খারাপ। হারের হ্যাটট্রিক দিয়ে ২০২৪ আইপিএল অভিযান শুরু করেছিল মুম্বই ইন্ডিয়ান্স। তবে মরশুমের চতুর্থ ম্যাচে তারা জয়ে ফেরে। এর পরের ম্যাচেও জিতে, আশা জাগিয়েছিল হার্দিক পান্ডিয়ার দল। কিন্তু তার পর ফের হার। এখনও পর্যন্ত মুম্বই ইন্ডিয়ান্স এই আইপিএলে আট ম্যাচ খেলেছে, তার মধ্যে পাঁচটিতেই হেরে বসে রয়েছে। মাত্র তিনটি ম্যাচ জিতেছে। একেবারেই ভালো অবস্থানে নেই হার্দিকরা। তাদের প্লে-অফে ওঠা নিয়েও প্রশ্ন উঠে গিয়েছে। তাদের সবচেয়ে বড় সমস্যা হল, দলের প্লেয়ারদের মধ্যে ধারাবাহিকতার অভাব। সেই সঙ্গে কোথাও গিয়ে টিম স্পিরিটেরও ঘাটতি দেখা যাচ্ছে।
মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের প্রথম ৮ ম্য়াচের ফল:
১) নিজেদের প্রথম ম্যাচে আমদাবাদে গুজরাট টাইটান্সের কাছে ৬ রানে হারে।
২) সানরাইজার্স হায়দরাবাদের বিরুদ্ধে অ্যাওয়ে ম্যাচে ৩১ রানে হেরে বসে থাকে।
৩) ওয়াংখেড়েতে রাজস্থান রয়্যালসের কাছেও ৬ উইকেটে হারতে হয়।
৪) ঘরের মাঠে দিল্লি ক্যাপিটালসকে ২৯ রানে হারায়।
৫) ওয়াংখেড়েতে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুকে ৭ উইকেটে হারায়।
৬) ঘরের মাঠে চেন্নাই সুপার কিংসের কাছে আবার ২০ রানে হারে।
৭) পঞ্জাব কিংসকে অ্যাওয়ে ম্যাচে ৯ রানে হারায়।
৮) রাজস্থান রয়্যালসের বিরুদ্ধে জয়পুরে ৯ উইকেটে হারে।
আরও পড়ুন: খাতায় কলমে এখনও ছিটকে যায়নি কোহলির দল, কোন অঙ্কে উঠতে পারে প্লে-অফে
প্রথম ৮ ম্যাচে মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের সেরা পাঁচ ব্যাটার:
১) রোহিত শর্মা- ৮ ম্যাচে ৩০৩ রান করেছেন।
২) তিলক বর্মা- ৮ ম্যাচে ২৭৩ রান করেছেন।
৩) ইশান কিষাণ- ৮ ম্যাচে ১৯২ রান করেছেন।
৪) হার্দিক পান্ডিয়া- ৮ ম্যাচে ১৫১ রান করেছেন।
৫) টিম ডেভিড- ৮ ম্যাচে ১৪৫ রান করেছেন।
প্রথম ৮ ম্যাচে মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের সেরা পাঁচ বোলার:
১) জসপ্রীত বুমরাহ- ৮ ম্যাচে ১৩ উইকেট নিয়েছেন।
২) জেরাল্ড কোয়েটজি- ৮ ম্যাচে ১২ উইকেট নিয়েছেন।
৩) আকাশ মাধওয়াল- ৫ ম্যাচে ৫ উইকেট নিয়েছেন।
৪) হার্দিক পান্ডিয়া- ৮ ম্যাচে ৪ উইকেট নিয়েছেন।
৫) শ্রেয়স গোপাল- ৩ ম্যাচে ৩ উইকেট নিয়েছেন।
আরও পড়ুন: করণকে তুচ্ছতাচ্ছিল্য করে সিঙ্গল নিতে রাজি হননি কার্তিক, এক রানে হারের পর প্রশ্নে রণনীতি
প্রথম ৮ ম্যাচে মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের ব্যর্থতার কারণ:
১) হার্দিক পান্ডিয়ার নেতৃত্ব নিয়ে প্রশ্ন উঠে গিয়েছে। বোলারদের ব্যবহার করা, ফিল্ডিং সাজানো, বা টিমের মধ্যে সুন্দর পরিবেশ গড়ে তোলা, তাঁর সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা, প্রতিটি প্লেয়ারকে নিয়ে একসঙ্গে লড়াই করার মানসিকতা- এই সবের অভাব দেখা যাচ্ছে হার্দিকের মধ্যে। যার জেরে কিন্তু ডুবতে হচ্ছে মুম্বইকে।
২) হার্দিককে অধিনায়ক করার সিদ্ধান্তটি দলের প্লেয়াররা অনেকেই মেনে নিতে পারেননি। যার ফলে এবার মুম্বই ইন্ডিয়ান্স দলের মধ্যে একটা টিম স্পিরিটেরও অভাব দেখা যাচ্ছে। হার্দিকের সঙ্গে প্লেয়ারদের একটা মানসিক দূরত্ব তৈরি হয়েছে। যেটা কিন্তু দলে প্রভাব ফেলছে।
৩) প্লেয়ারদের মধ্যে ধারাবাহিকতার বড় অভাব রয়েছে। বিশেষ করে ব্যাটারদের ক্ষেত্রে। কোনও দিন কেউ ভালো খেলছেন তো, পরের দিনই নিরাশ করছেন। ইশান কিষান যেমন একটি ম্যাচ ভালো খেললে, পরের ম্যাচেই নিরাশ করছেন। সূর্যকুমার যাদবও ধারাবাহিক হতে পারছেন না। বোলারদের ক্ষেত্রে বুমরাহ ভালো ছন্দে রয়েছেন। কিন্তু বাকিদের পারফরম্যান্স মোটেও ধারাবাহিক নয়।
৪) দলের অধিনায়ক হার্দিক পান্ডিয়াও নিরাশ করে চলেছেন। ব্যাট কিংবা বল হাতে তিনি এখনও পর্যন্ত চূড়ান্ত ব্যর্থ। তাঁর খারাপ পারফরম্যান্সও দলের মধ্যে প্রভাব ফেলছে।
৫) মুম্বইয়ের বিদেশির পারফরম্যান্স তলানিতে। ডেওয়াল্ড ব্রেভিসের হতাশাজনক পারফরম্যান্সের জেরে তাঁকে একাদশেই রাখা হচ্ছে না। মহম্মদ নবি, টিম ডেভিডদের অবস্থাও তথৈবচ। লুক উড, মাফাকারাও নজর কাড়তে ব্যর্থ।
প্রথম ৮ ম্যাচে মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের অক্সিজেন:
১) মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের বড় অক্সিজেন জসপ্রীত বুমরাহের ফর্ম। বুমরাহ বল হাতে ভালো ছন্দে রয়েছেন। এটাই কিছুটা স্বস্তি।
২) তিলক বর্মা বা নেহাল ওয়াধেরার মতো ব্যাটারদের লড়াই করার মানসিকতা। হাল না ছেড়ে তাঁরা খারাপ সময়ে দলকে অক্সিজেন দিচ্ছেন।
৩) রোহিত শর্মার পারফরম্যান্সও এবার আইপিএলে মুম্বইয়ের ভরসা। তাঁকে নেতৃত্ব থেকে সরানো হলেও, তিনি নিজের দায়িত্ব পালন করে চলেছেন।