মুম্বই বনাম তামিলনাড়ুর মধ্যে রঞ্জি ট্রফির সেমিফাইনালের দ্বিতীয় দিন একেবারে ঘটনার ঘনঘটা। সাই কিশোরের দুরন্ত বোলিংয়ের পরেও চালকের আসনে মুম্বই। সৌজন্যে শার্দুল ঠাকুরের সেঞ্চুরি। ভারতের অলরাউন্ডার শার্দুল ঠাকুর প্রথম-শ্রেণির ক্রিকেটে প্রথম সেঞ্চুরি হাঁকালেন। তামিলনাড়ুর বোলিং আক্রমণ যখন আধিপত্য বিস্তার করছিল, তখন মুম্বইয়ের শরদ পাওয়ার ক্রিকেট অ্যাকাডেমি বিকেসি-তে সবুজ পিচে পালটা আক্রমণের পথে হেঁটে মাত্র ৮৯ বলে সেঞ্চুরি করেন।
প্রথম দিনের শেষে মুম্বইয়ের স্কোর ছিল ২ উইকেটে ৪৫ রান। ৫৩ বলে ২৪ করে ক্রিজে ছিলেন মুশির খান। তাঁর সঙ্গে ১ রান করে টিকে ছিলেন মোহিত অবস্তি। রবিবার সকালেই মোহিত অবস্তি ২ রান করে সাজঘরে ফিরে যান। এর পর মুম্বই অধিনায়ক অজিঙ্কা রাহানে মাত্র ১৯ করে সাজঘরে ফেরেন। পরপর ২ উইকেট তুলে নেন সাই কিশোর। এর পর শ্রেয়স আইয়ারকে ফেরান সন্দীপ ওয়ারিয়র। মাত্র ৩ রান করে আউট হন শ্রেয়স। রঞ্জির কোয়ার্টার ফাইনালে শ্রেয়সের না খেলা নিয়ে চূড়ান্ত বিতর্ক হয়েছিল। তবে এদিন শ্রেয়স চূড়ান্ত হতাশ করেন। যা কেকেআর অধিনায়কের জন্যও বড় ধাক্কা হয়।
আরও পড়ুন: আইপিএল বনাম লাল বল ক্রিকেট বিতর্কে সচিন, রাহুলদের উদাহরণ টেনে ইশানদের বড় বার্তা দিলেন সৌরভ
এর পর মুশির খান হাফসেঞ্চুরি করে সাজঘরে ফেরেন। ৫৫ করে তিনি সাইকিশোরের বলে আউট হন। এর পর সামস মুলানিকে খালি হাতে ফেরান সাই কিশোর। সাই কিশোরের আগুনে ১০৬ রানে ৭ উইকেট হারিয়ে মুম্বই যখন চাপে, তখন নয়ে নেমে ঝড় তোলেন শার্দুল ঠাকুর। ৮৯ বলে তিনি সেঞ্চুরি করেন। এর পর ১০৫ বলে ১০৯ রান করে আউট হন শার্দুল। তাঁর ইনিংসে রয়েছে ১৩টি চার এবং চারটি ছক্কা।
এছাড়া দশে নেমে তনুশ কোটিয়ান অপরাজিত ৭৪ করে মুম্বইকে সাড়ে তিনশো পার করতে সাহায্য করেন। অপরাজিত ১৭ করে ক্রিজে রয়েছেন তুষার দেশপাণ্ডে। দ্বিতীয় দিনের শেষে ৯ উইকেটে ৩৫৩ রান মুম্বইয়ের। তামিলনাড়ুর হয়ে সাই কিশোর একাই ছয় উইকেট নিয়েছেন। কুলদীপ সেন নিয়েছেন ২ উইকেট। ১ উইকেট নিয়েছেন সন্দীপ ওয়ারিয়র।
আরও পড়ুন: শ্রেয়স এবং ইশান কেন্দ্রীয় চুক্তি ফিরে পেতে পারেন, কী ভাবে? জানালেন BCCI-এর এক কর্তা
শনিবার সবুজ পিচে টসে জিতে ব্যাটিং নিয়ে একেবারে ভরাডুবি হয়েছিল তামিলনাড়ু। টসে জেতাটা যেন ব্যাকফায়ার হয়ে গিয়েছিল। ১৭ রানের মধ্যেই ৪ উইকেট হারিয়ে বসেছিল তামিলনাড়ু। ১০০ হওয়ার আগেই তারা আরও ২ উইকেট হারায়। আর ৬৪.১ ওভারে মাত্র ১৪৬ রানের মধ্যে অলআউট হয়ে যায় তামিলনাড়ু। ওপেন করতে নেমে খালি হাতে সাজঘরে ফেরেন সাই সুদর্শন। তখন দলের রান ৪ বলে ০। এর পর ব্যক্তিগত ৪ রান করে আউট হন আর এক ওপেনার নারায়ণ জগদীশান। তখন স্কোরবোর্ডে তামিলনাড়ুর সংগ্রহ মাত্র ১০। তিনে ব্যাট করতে নেমে ৮ রান করে আউট হন প্রদোষ রঞ্জন পাল। দলের অধিনায়ক সাই কিশোর ফেরেন মাত্র ১১ বলে ১ রান করে। বাবা ইন্দ্রজিৎও এদিন চূড়ান্ত ব্যর্থ। ২৫ বল খেলে মাত্র ১১ রান করেন তিনি। তবে ছয় এবং সাতে নেমে যথাক্রমে বিজয় শঙ্কর এবং ওয়াশিংটন সুন্দর কিছুটা লড়াই করার চেষ্টা করেছেন।
১০৯ বলে ৪৪ রান করেন। ১৩৮ বলে ৪৩ রান করেন সুন্দর। এই ইনিংস দু'টিই যেটুকু পুঁজি তামিলনাড়ুর। বাকিদের অবস্থা তো তথৈবচ। এছাড়া আটে নেমে মহম্মদ ১৭ বলে ১৭ করেন। এটি তামিলনাড়ুর তৃতীয় সর্বোচ্চ রান। ৩৭ বলে ১৫ করেন অজিত রাম। সন্দীপ ওয়ারিয়র এবং কুলদীপ সেন রানের খাতা খোলেননি। মুম্বইয়ের হয়ে তিন উইকেট নিয়েছিলেন তুষার দেশপাণ্ডে। এছাড়াও ২টি করে উইকেট নিয়েছেন শার্দুল ঠাকুর, মুশির খান এবং তনুশ কোটিয়ান। এক উইকেট নিয়েছেন মোহিত অবস্তি।