শুভব্রত মুখার্জি: এই মুহূর্তে পাকিস্তান ক্রিকেটের অন্যতম সেরা ব্যাটার বাবর আজম। ডানহাতি এই ব্যাটার কিছু দিন আগেও তিন ফর্ম্যাটেই জাতীয় দলের অধিনায়ক ছিলেন। গত ওয়ানডে বিশ্বকাপে তাঁর নেতৃত্বে জাতীয় দল ভালো পারফরম্যান্স করতে না পারার পরেই তাঁর অধিনায়কত্ব চলে গিয়েছিল। তবে সেই সব ঘটনা এখন অতীত। বাবর আজম যে তা পিছনে ফেলে এগিয়ে গিয়েছেন, তা বারবার প্রকাশ পাচ্ছে চলতি পাকিস্তান সুপার লিগ অর্থাৎ পিএসএলে। চলতি মরশুমে দুরন্ত ফর্মে রয়েছেন তিনি। সেই ফর্ম ধরে রেখেই তিনি পিএসএলে নিজের দ্বিতীয় শতরান করে ফেললেন।
সোমবারেই তিনি করলেন তাঁর দ্বিতীয় শতরান। এদিন পেশোয়ার জালমির হয়ে ইসলামাবাদ ইউনাইটেডের বিরুদ্ধে খেলার সময়ে দুরন্ত শতরান হাঁকিয়েছেন বাবর। উল্লেখ্য, কয়েক দিন আগেই দর্শকদের চরম কটাক্ষের শিকার হয়েছিলেন বাবর আজম। স্টেডিয়ামে তাঁর বিরুদ্ধে 'জিম্বাবর' বলে স্লোগান উঠেছিল। অর্থাৎ বাবর আজম শুধুমাত্র জিম্বাবোয়ের বিরুদ্ধেই বড় রান করতে সক্ষম, এই রকমটা বলে তাঁকে কটাক্ষ করা হয়েছিল। এদিন ২২ গজে সেই সমস্ত কটাক্ষের জবাব যেন দিলেন তিনি। শতরান করে এদিন ইনিংস শেষে অপরাজিতও থেকেছেন তিনি। শতরান করার পরে যে ভঙ্গিমায় তিনি উদযাপন করেছেন, তা দেখেই বোঝা যাচ্ছিল কতটা চাপে ছিলেন তিনি। সিঙ্গেল নিয়ে শতরান পূরণ করেই লাফিয়ে উঠে মুষ্টিবদ্ধ হাত বেশ কয়েক বার ছুঁড়ে দেন। যেন সমালোচকদের যোগ্য জবাব দিলেন, তা বোঝাতে চাইলেন তিনি।
লাহোরের গদ্দাফি স্টেডিয়ামে এদিন পেশোয়ার প্রথমে ব্যাট করে। বাবর মাত্র ৬৩ বল খেলে ১১১ রান করে অপরাজিত থেকে যান। তাঁর শতরানের দৌলতে পেশোয়ার জালমি নির্ধারিত ২০ ওভারে ৫ উইকেটে ২০১ রান করে। ২৯ বছর বয়সী বাবর এদিন তাঁর ইনিংসের শেষ ২১ বলে করেছেন ৫৯ রান। ফলে তাঁর দল শেষ পাঁচ ওভারে ৭৬ রান করতে সমর্থ হয়। উল্লেখ্য পিএসএলে সব থেকে বেশি তিনটি শতরান রয়েছে কিপার ব্যাটার কামরান আকমলের। এটি বাবরের দ্বিতীয় শতরান। বাবর তাঁর প্রথম শতরানটি করেছিলেন ২০২৩ সালের পিএসএলে। রাওয়ালপিন্ডিতে কোয়েট্টা গ্ল্যাডিয়েটর্সের বিরুদ্ধে। সেদিন তিনি ৬৫ বলে করেছিলেন ১১৫ রান। বাবর ছাড়াও পিএসএলে দুটি করে শতরান রয়েছে ফখর জামান, রিলি রসৌ ,জেসন রয় এবং সারজিল খানের।
আরও পড়ুন: যাদের টেস্ট খেলার খিদে নেই… জুরেল সহ তরুণদের নিয়ে উচ্ছ্বসিত হলেও, ঘুরিয়ে ইশানদের ঠুকলেন রোহিত
প্রসঙ্গত, পিএসএলে বাবরের দ্বিতীয় শতরানের রাতে এক রুদ্ধশ্বাস জয় ছিনিয়ে নিল তাঁর দল পেশোয়ার জালমি। বাবরের অনবদ্য অপরাজিত ১১১ রানে ভর করে ২০১ রান করেছিল পেশোয়ার। ফলে জয়ের জন্য ইসলামাবাদের প্রয়োজন ছিল ২০২ রান। রান তাড়া করতে নেমে একটা সময়ে মাত্র তিন উইকেট হারিয়ে ইসলামাবাদের রান ছিল ১৮১ । তাদের জয়ের জন্য ১৩ বলে ২১ রান দরকার ছিল। ধরে নেওয়া হয়েছিল, সহজেই ম্যাচ জিতবে ইসলামাবাদ। কিন্তু এর পরেই মিরাকেল ঘটান পেশোয়ার বোলাররা। পরবর্তী সাত বলে তারা ইসলামাবাদের পাঁচ উইকেট তুলে নেন। এই ধাক্কা সামলে উঠতে পারেনি ইসলামাবাদ। ফলে ম্যাচে ৮ রানে হেরে যায় তারা। বাবরের অনবদ্য শতরানের রাতে টানটান উত্তেজনার এক ম্যাচে রুদ্ধশ্বাস জয় ছিনিয়ে আনে বাবরের পেশোয়ার। ইসলামাবাদের হয়ে কলিন মুনরো ৭১ এবং আজম খান ৭৫ রানের অনবদ্য ইনিংস খেলেও, দলের জয় নিশ্চিত করতে পারেননি। ৯ উইকেট হারিয়ে ১৯৩ রানেই আটকে যায় তারা। আরিফ ইয়াকুব পেশোয়ারের হয়ে ২৭ রান দিয়ে নেন পাঁচটি উইকেট।