মশলা ছাড়া কি ভারতীয় রান্না আদৌ সম্ভব? ভারতের রান্না মানেই তো গাদা গাদা মশলা। কিন্তু সেই মশলার নাম করে আমরা রোজ কি খাচ্ছি সেটা কি আদৌ জানেন? ইতিমধ্য়েই হংকং আর সিঙ্গাপুর দুটি কোম্পানির কিছু মশলাকে তাদের দেশে নিষিদ্ধ করেছে।
একাধিক মশলায় কারসিনোজেনিক পেস্টিসাইড ইথিলিন অক্সাইড মিলেছে বলে অভিযোগ। একাধিক মশলায় এমন ধরনের জিনিস মিলেছে যা বেশ ক্ষতিকারক বলেই মনে করা হয়। মাদ্রাজ কারি পাউডার, সম্বর মশলা পাউডার, কারি পাউডার সহ একাধিক মশলাকে ঘিরে নানা রকম আপত্তি দেখা দিয়েছে।
এদিকে একাধিক রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে এই সব ভুয়ো মশলা সেগুলি মূলত তৈরি করা হচ্ছে পচা রুটি আর পচা চাল থেকে। সেই সঙ্গেই নষ্ট হয়ে যাওয়া মিলেট, কাঠের গুড়ো, লঙ্কার গুড়ো, অ্যাসিড, নানা ধরনের কমা তেল সহ নানা ধরনের জিনিসপত্র ব্যবহার করা হচ্ছে এই মশলার সঙ্গে। এগুলিই লোকাল মার্কেটে চালিয়ে দেওয়া হচ্ছে। দিল্লিতে এই মশলা বেশ চলে। তবে দাম কোনও অংশে কম নয়। একেবারে আসল মশলার মতোই এই মশলা দেখতে। লেবেলও একই রকম। সেকারণে আলাদা করার উপায় নেই।
এদিকে পুলিশ ইতিমধ্য়েই উত্তর পূর্ব দিল্লির একাধিক ব্যবসায়ী এই নকল মশলার ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত রয়েছে বলে খবর মিলেছে। বিভিন্ন ব্র্যান্ডের আড়ালে এগুলি বাজারে চালানো হচ্ছে। একাধিক ক্ষেত্রে অভিযানও করা হচ্ছে। ডিসিপি, দিল্লি পুলিশ ও ডিপার্টমেন্ট অফ ফুড অ্যান্ড সেফটির তরফে বার বার এনিয়ে অভিযান করা হয়েছে। এই সমস্ত নকল মশলার নমুনাও সংগ্রহ করা হয়েছে। তিনজনকে গ্রেফতারও করা হয়েছিল। তাদেরকে জেরা করে জানতে পারা যায় যে ২০২১ সাল থেকে এই ইউনিটটা চালানো হচ্ছিল। নকল মশলা তৈরির জন্য এই ইউনিটটি ব্যবহার করা হত।
এদিকে একাধিক রিপোর্টে জানা গিয়েছে যে, বিভিন্ন শিল্পে ব্যবহৃত অন্যতম রাসায়নিক হল ইথিলিন অক্সাইড। এটি এমনই একটি ক্যানসার সৃষ্টিকারী রাসায়নিক যা স্তন ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়াতে পারে। এটি মানুষের ডিএনএ, মস্তিষ্ক এবং স্নায়ুতন্ত্রেরও ক্ষতি করতে পারে। এই দাহ্য বর্ণহীন গ্যাস, ঘরের তাপমাত্রায় মিষ্টি গন্ধ ছড়ায়। এটি অন্যান্য রাসায়নিক তৈরিতেও ব্যবহৃত হয়। জীবাণুনাশক এবং জীবাণুমুক্ত করার কাছে ব্যবহৃত হয় ইথিলিন অক্সাইড। আমেরিকার ন্যাশনাল ক্যান্সার ইনস্টিটিউটের ওয়েবসাইটে দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, ইথিলিন অক্সাইডের ডিএনএ-র ক্ষতি করার পাশাপাশি শ্বাস-প্রশ্বাসের মাধ্যমে মানবদেহে পৌঁছে ক্যানসার ঘটায় ইথিলিন অক্সাইড।