কোনও টি-২০ টুর্নামেন্টের ফাইনাল মানেই রুদ্ধশ্বাস লড়াই দেখার প্রত্যাশা করেন ক্রিকেটপ্রেমীরা। অন্ততপক্ষে একতরফা লড়াই হলেও খেতাবি ম্যাচে চার-ছক্কার ফুলঝুরি দেখা যাবে এমনটাই প্রত্যাশিত। তবে বাংলাদেশ প্রিমিয়র লিগের ফাইনালে তেমনটা চোখে পড়ল না মোটেও। বরং নিতান্ত সাদামাটা ম্যাচে ধীরে সুস্থে জয় তুলে নেয় তামিম ইকবালের ফরচুন বরিশাল। লিটন দাসের কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সকে হারিয়ে প্রথমবারের মতো বিপিএল ট্রফি ঘরে তোলে বরিশাল।
উল্লেখযোগ্য বিষয় হল, কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স এবছর ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন হিসেবে মাঠে নেমেছিল। তারা এর আগে চারবার বিপিএল খেতাব জিতেছে। গত দু'বারের চ্যাম্পিয়ন কুমিল্লাকে টানা তৃতীয় খেতাব জয়ের স্বপ্ন জলাঞ্জলি দিতে হয়। অন্যদিকে বরিশাল ২০১৫ ও ২০২২ সালে বাংলাদেশ প্রিমিয়র লিগের ফাইনালে কুমিল্লার কাছে হেরে যায়। সেদিক থেকে দেখলে এবার কুমিল্লার কাছ থেকে খেতাব ছিনিয়ে নিয়ে হিসাব নিকাশ কিছুটা হলেও মিটিয়ে নিল বরিশাল।
মীরপুরের ফাইনালে টস হেরে শুরুতে ব্য়াট করতে নামে কুমিল্লা। তারা নির্ধারিত ২০ ওভারে ৬ উইকেটের বিনিময়ে ১৫৪ রান সংগ্রহ করে। মাহিদুল ইসলাম দলের হয়ে সব থেকে বেশি ৩৮ রান করেন। ৩৫ বলের ধীর ইনিংসে তিনি ২টি চার ও ২টি ছক্কা মারেন। আন্দ্রে রাসেল ১৪ বলে ২৭ রানের ঝোড়ো ইনিংস খেলে অপরাজিত থাকেন। তিনি ৪টি ছক্কা মারেন।
উল্লেখযোগ্য বিষয় হল, রানের গতি ধীর হলেও ফাইনালে রাসেলকে উপরের দিকে ব্যাট করানোর প্রয়োজন মনে করেনি কুমিল্লা। যার ফলেই পর্যাপ্ত রান তোলা সম্ভব হয়নি তাদের পক্ষে। জাকের আলি ২৩ বলে ২০ রানের ঠুকঠুকে ইনিংস খেলেন। ১৭ বলে ১৫ রান করেন জনসন চার্লস। ১০ বলে ১৫ রান করেন তৌহিদ হৃদয়। ক্যাপ্টেন লিটন করেন ১২ বলে ১৬ রান। তিনি ৩টি চার মারেন। ওপেন করতে নেমে সুনীল নারিন ৪ বলে ৫ রান করে আউট হন।
জেমস ফুলার ৪ ওভারে ৪৩ রান খরচ করে ২টি উইকেট সংগ্রহ করেন। ৪ ওভারে ২৬ রান খরচ করে ১টি উইকেট নেন কাইল মায়ের্স। মহম্মদ সইফুদ্দিন ও ওবেদ ম্যাকয় ১টি করে উইকেট পকেটে পোরেন। উইকেট পাননি তাইজুল।
আরও পড়ুন:- টেস্টে সব থেকে বেশি উইকেট, ওয়ালসকে টপকে সাতে লিয়ন, চোখ রাখুন সেরা ১০-এ
জবাবে ব্যাট করতে নেমে বরিশাল ১৯ ওভারে ৪ উইকেটের বিনিময়ে ১৫৭ রান তুলে ম্যাচ জিতে যায়। কাইল মায়ের্স ৩০ বলে ৪৬ রান করেন। তিনি ৫টি চার ও ২টি ছক্কা মারেন। তামিম ইকবাল ২৬ বলে ৩৯ রানের অধিনায়কোচিত ইনিংস খেলেন। তিনি ৩টি চার ও ৩টি ছক্কা মারেন। ২৬ বলে ২৯ রান করেন মেহেদি হাসান মিরাজ। মুশফিকুর রহিম ১৮ বলে ১৩ রান করে মাঠ ছাড়েন। ৬ বল বাকি থাকতে ৬ উইকেটে ম্যাচ জিতে চ্যাম্পিয়ন হয় বরিশাল।
সুনীল নারিন ৪ ওভারে ২১ রান খরচ করেন। কোনও উইকেট পাননি তিনি। মুস্তাফিজুর রহমান ৪ ওভারে ৩১ রানের বিনিময়ে ২টি উইকেট তুলে নেন। ৪ ওভারে ২৮ রান খরচ করে ২টি উইকেট নেন মইন আলি। রাসেল ৩ ওভারে ৩৩ রান খরচ করেও উইকেট তুলতে পারেননি। ম্যাচের সেরা হন মায়ের্স। টুর্নামেন্টের সেরা ক্রিকেটারের পুরস্কার জেতেন তামিম।