শুভব্রত মুখার্জি: ভারতীয় টেস্ট দলের একটা সময়ে নিয়মিত সদস্য ছিলেন চেতেশ্বর পূজারা। মিডল অর্ডারে ভারতীয় ব্যাটিংয়ের স্তম্ভ মনে করা হত তাঁকে। ২২ গজ কামড়ে পরে থাকার ক্ষেত্রে তাঁর জুড়ি মেলা ভার। ভারত প্রথমবার অজি ভূমে যে টেস্ট সিরিজ জিতেছিল সেই জয়েও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল তাঁর। পরবর্তীতে ধীরে ধীরে তাঁর ব্যাটিং ফর্ম পড়তে থাকে। ফর্মহীনতার কারণে বাদ পড়তে হয় তাঁকে। কাউন্টি ক্রিকেট খেলতে চলে যান তিনি। রান করে ফের ফেরত আসেন জাতীয় দলে। তবে বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে দুই ইনিংসে ব্যর্থ হতেই ফের তাঁর উপর নেমে এসেছে খাড়ার ঘা। দল থেকে ফের বাদ পড়েছেন তিনি। তবে পূজারা মনে করেন তাঁর মধ্যে অনেক খেলা বাকি রয়েছে। তিনি ফের জাতীয় দলে ফেরার লড়াই চালাচ্ছেন। পাশাপাশি দল থেকে বাদ পড়ে নিজের কাছেই যে নিজের যোগ্যতা নিয়ে ও প্রশ্ন উঠে গিয়েছিল তা জানাতেও ভোলেননি তিনি।
জাতীয় দল থেকে বাদ পড়ার বিষয়ে এক পডকাস্টে তাঁকে প্রশ্ন করা হয়। তিনি এই বিষয়ে বলতে গিয়ে জানান যথেষ্ট হতাশা গ্রাস করেছিল তাঁকে। নিজের মনে নিজের যোগ্যতা নিয়েই প্রশ্ন উঠে গিয়েছিল। পূজারা জানান, 'মাঝেমধ্যে দল থেকে বাদ পড়ে সত্যিই হতাশ হয়ে পড়ি। ৯০টি টেস্ট খেলে ৫-৬ হাজার, যা-ই রান করি না কেন, তারপর নিজেকে ফের একবার প্রমাণ করা সত্যিই সহজ কাজ নয়। বিষয়টি কিন্তু মাঝে মধ্যে আত্মসম্মানেও ধাক্কা দেয়। নিজের মনের মধ্যেই সন্দেহ তৈরি হয়, আমি আদৌ জাতীয় দলের হয়ে খেলার যোগ্য তো? বারবার নিজেকে প্রমাণ করতে হলে এমন আশঙ্কা কিন্তু কোনও ক্রিকেটারের কাছে অমূলক নয়।'
অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নিপ ফাইনালের দুই ইনিংসে কোন রান করতে পারেননি। ফলে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে টেস্ট সিরিজের দলে জায়গা পাননি তিনি । এশিয়া কাপের দল ঘোষণা হওয়ার দিনই পূজারা টেস্ট দল থেকে বাদ পড়ার পর নিজের উপলব্ধির কথা জানান। পাশাপাশি লড়াই করে ফের একবার জাতীয় দলে ফিরতেও যে তিনি মরিয়া তা জানাতেও ভোলেননি তিনি।
তিনি আরোও যোগ করেন, 'গত কয়েক বছরে অনেক উত্থান-পতন দেখেছি ক্রিকেট কেরিয়ারে। ৯০টির ও বেশি টেস্ট খেলার পরেও যখন নিজেকে প্রমাণ করতে হয়, তখন সেটা কঠিন পরীক্ষা তো নিঃসন্দেহে। এখনও প্রমাণ করতে হয় আমি ভারতীয় টেস্ট দলে খেলার যোগ্য কিনা। এটা অন্য রকম পরীক্ষা আমার কাছে অবশ্যই। ভারতীয় ক্রিকেটে আমি কতটা অবদান রাখতে পেরেছি সেটা আমি জানি। কিছুদিন আগেই একটা পরিসংখ্যান পেয়েছি। আমি কোনও টেস্টে ৭০-৮০ রান করলে অন্তত ৮০ শতাংশ ক্ষেত্রে হয় ভারত সেই ম্যাচ জিতেছে অথবা ড্র হয়েছে। তাই এখনও দেশকে,জাতীয় দলকে আমার অনেক কিছু দেওয়ার বাকি রয়েছে বলেই আমি মনে করি।'