ভারত বনাম ইংল্যান্ডের পাঁচ ম্যাচের টেস্ট সিরিজের চতুর্থ ম্যাচটি রাঁচিতে খেলা হচ্ছে। এই ম্যাচে টিম ইন্ডিয়ার উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান ধ্রুব জুরেল নিজের আন্তর্জাতিক টেস্ট কেরিয়ারে তাঁর প্রথম হাফ সেঞ্চুরিটি পূর্ণ করেছেন। তিনি অবশ্যই রাজকোট টেস্টে হাফ সেঞ্চুরির কাছাকাছি পৌঁছেছিলেন, কিন্তু তখন ৫০ রানের স্কোরে পৌঁছাতে পারেননি। তবে রাঁচিতে কোনও ভুল করেননি জুরেল। অর্ধশতরান করার পরে এক অন্য উপায়ে সেলিব্রেশন করেন তিনি। ধ্রুব জুরেল আন্তর্জাতিক টেস্টে তাঁর প্রথম হাফ সেঞ্চুরি করার পর স্যালুট করেন। এই ভিডিয়ো সোশ্যাল মিডিয়াতে বেশ ভাইরাল হয়ে যায়। আসুন জেনে নেওয়া যাক এর পিছনের আসল কারণটা কী ছিল?
আসলে ধ্রুব জুরেলের এই সেলিব্রেশনের পিছনের আসল কারণ হল তাঁর বাবা। জুরেলের বাবা নেম সিং ভারতীয় সেনাবাহিনীতে ছিলেন। তিনি হাবিলদার পদ থেকে অবসর গ্রহণ করেন। তিনি কার্গিল যুদ্ধের অংশও ছিলেন। নেম সিং চেয়েছিলেন তাঁর ছেলেও সেনাবাহিনীতে যোগদান করুক। কিন্তু ধ্রুব জুরেল ক্রিকেটকে বেছে নেন। এই কারণে নিজের জীবনের প্রথম আন্তর্জাতিক টেস্ট অর্ধশতরানটিকে নিজের বাবাকে উৎসর্গ করেন ধ্রুব জুরেল।
উইকেটরক্ষক হিসেবে ধ্রুব জুরেল টেস্টে প্রথম দুই ইনিংসের পর ভারতের হয়ে সবচেয়ে বেশি রান করার ক্ষেত্রে দ্বিতীয় স্থানে উঠে এসেছেন। টেস্ট ক্যারিয়ারের প্রথম দুই ইনিংসে ১৩৬ রান করেছেন তিনি। এই তালিকায় সবচেয়ে এগিয়ে রয়েছেন বিজয় মঞ্জরেকর। বিজয় মঞ্জরেকর, উইকেটরক্ষক হিসাবে, টেস্টে প্রথম দুই ইনিংসের পরে ১৬১ রান করেছিলেন।
টেস্টে প্রথম দুই ইনিংসে ভারতীয় উইকেটরক্ষকের সর্বোচ্চ রান
বিজয় মঞ্জরেকর- ১৬১ রান
ধ্রুব জুরেল- ১৩৬ রান
দিলাওয়ার হুসেন- ১১৬ রান
কেএল রাহুল- ১০৫ রান
নয়ন মঙ্গিয়া- ৬২ রান
এ ছাড়াও ধোনি-পন্তের ক্লাবে যোগ দিয়েছেন জুরেল
ধ্রুব জুরেল ভারতের পঞ্চম উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান যিনি টেস্টে ৯০ বা তার বেশি রান করার পর সেঞ্চুরি মিস করেছেন। একই সময়ে, ঋষভ পন্ত টেস্টে ৯০ বা তার বেশি রান করার পরে ৬ বার সেঞ্চুরি মিস করেছেন। অন্যদিকে, এমএস ধোনির সঙ্গে তাঁর ক্যারিয়ারে এমনটি ঘটেছে পাঁচ বার।
ভারতীয় উইকেটরক্ষক যারা ৯০ বা তার বেশি রান করার পরে সেঞ্চুরি মিস করেছেন (টেস্ট)
৬ বার- ঋষভ পন্ত
৫ বার - এমএস ধোনি
১ বার - ধ্রুব জুরেল
১ বার - দীনেশ কার্তিক
১ বার - ফারুক ইঞ্জিনিয়ার
ম্যাচের কী অবস্থা?
ম্যাচের কথা বলতে গেলে, ধ্রুব জুরেলের আগে, যশস্বী জসওয়ালও হাফ সেঞ্চুরি করেছিলেন এবং তিনি ৭৩ রানের একটি দুর্দান্ত ইনিংস খেলেছিলেন। এই দুই তরুণ খেলোয়াড়ের সুবাদে ইংল্যান্ডের স্কোরের কাছাকাছি চলে গিয়েছিল ভারত। প্রথমে ব্যাট করে জো রুটের অপরাজিত সেঞ্চুরির ভিত্তিতে ইংল্যান্ড বোর্ডে ৩৫৩ রান তোলে। একটা সময় ছিল যখন অর্ধেক ইংলিশ দল ১১২ স্কোর করে প্যাভিলিয়নে ফিরেছিল। এরপর জো রুট প্রথমে বেন ফক্স ও পরে অলি রবিনসনের সঙ্গে জুটি গড়ে দলকে সম্মানজনক স্কোরে নিয়ে যান।
এর জবাবে প্রথম ইনিংসে ভারতীয় দল স্কোর বোর্ডে তোলে ৩০৭ রান। ৯৬ রান এগিয়ে থেকে দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে নামে ইংল্যান্ড। তবে দ্বিতীয় ইনিংসের শুরু থেকেই স্থির হতে পারেনি ইংল্য়ান্ডের ব্যাটিং লাইন আপ। ১৩৩ রানের মধ্যেই আট উইকেট হারিয়েছিল তারা। কুলদীপ যাদব ও রবিচন্দ্রন অশ্বিনের জালে ধরা পড়ে ইংল্যান্ডের ব্যাটাররা।