আমদাবাদের পিচই অভিশাপ হয়ে দাঁড়াল ভারতের কাছে। ওই পিচের কারণেই বিশ্বকাপ ফাইনালে এত বড় ফ্যাক্টর হয়ে দাঁড়ায় টস। অনেকাংশে গড়ে দেয় ম্যাচের ভাগ্য। এমনই মত ভারতের প্রাক্তন ক্রিকেটার তথা ধারাভাষ্যকার সঞ্জয় মঞ্জরেকরের। ‘হিন্দুস্তান টাইমস’-র কলামে প্রাক্তন ক্রিকেটারের মতে, ভালো ব্যাটিং পিচ হলে টসের উপর ফাইনালের ভাগ্য এতটা নির্ভর করত না। বরং আরও জোরদার লড়াই হত। তাতে আখেরে টিম ইন্ডিয়ার লাভ হত বলে ঘুরিয়ে বুঝিয়ে দিয়েছেন ভারতের প্রাক্তন ক্রিকেটার। মঞ্জরেকর বলেন, ‘আমার মতে, ভারত যে টসে হেরে যায়, সেটা একটা বিশাল বড় ফ্যাক্টর দাঁড়ায়। আমরা যারা ম্যাচের আগে পিচটা দেখেছিলাম, তাদের মনে হয়েছিল যে (ফাইনালের) দুর্বল দল তথা অস্ট্রেলিয়ার হাতে বেশি গোলাবারুদ তুলে দিয়েছে এই পিচ।’
রবিবার বিশ্বকাপ ফাইনালে টসে জিতে প্রথমে বোলিংয়ের সিদ্ধান্ত নেয় অস্ট্রেলিয়া। তখনই পিচ দেখে বোঝা যাচ্ছিল যে একেবারে স্লো পিচ হয়েছে। যতক্ষণ না শিশির পড়ছে, ততক্ষণ ব্যাটে কার্যত বল আসবে না। কালঘাম ছুটবে ব্যাটারদের। পরবর্তীতে কমেন্ট্রির সময় রবি শাস্ত্রী প্রশ্ন তোলেন, কেন পিচে পর্যাপ্ত মাত্রায় রোলিং হয়নি? সেইসঙ্গে এবার বিশ্বকাপে আমদাবাদে যতগুলি ম্যাচ খেলা হয়েছে, তার মধ্যে ঢিমেগতির পিচেই হচ্ছে ফাইনাল।
সেই প্রমাণ মেলে ভারতের ব্যাটিংয়ের সময়ও। বিরাট কোহলি, কেএল রাহুলদের কাছে বল কার্যত এসে পৌঁচ্ছাছিল না। ফলে তাঁরা শট খেলতে পারছিলেন না। স্ট্রাইক রোটেশনের ক্ষেত্রে তাঁদের ভুল হলেও সার্বিকভাবে ব্যাটে বল না আসায় তাঁরা একেবারেই ছন্দ পাচ্ছিলেন না। শট খেলার জন্য টি-টোয়েন্টি স্পেশালিস্ট সূর্যকুমার যাদবের কাছে যতটা বল আসার দরকার ছিল, সেটা আসছিল না। ফলে শট খেলতে পারছিলেন না। যে বলে আউট হন, সেটাও তাঁর কাছে যেন আসতে চাইছিল না।
বিষয়টি আরও ব্যাখ্যা ‘হিন্দুস্তান টাইমস’-র কলামে মঞ্জরেকর লিখেছেন, ওরকম পিচের কারণে সিমে পড়ে বল সামান্য ঘুরছিল। দুপুর-বিকেলের দিকে ব্যাটে বল আসছিল না। তারইমধ্যে দুর্দান্ত বলে আউট হয়ে যান শ্রেয়স আইয়ার। রিভার্স সুইংয়ের শিকার হন রাহুল। ঢিমেগতির পিচ হওয়ার কারণে উইকেট হারানো নিয়ে অত্যন্ত উদ্বেগে ছিল ভারতের লাইন-আপ। পিচে গতি না থাকায় টি-টোয়েন্টি ছন্দ দেখাতে পারেননি সূর্য। সেই পরিস্থিতিতে শুরুতে উইকেট হারানোর পরও বড় স্কোর গড়ে তোলা সম্ভব ছিল না ভারতের পক্ষে। যে স্কোরটা পরে ব্যাটিংয়ের জন্য পিচ ভালো হয়ে গেলেও অজিদের হাতের বাইরে থাকত।
আরও পড়ুন: ICC ODI World Cup 2023: যা ভয় ছিল তাই হল ফাইনালে, রূপকথা নয় রুঢ় বাস্তব নিয়েই বাঁচতে হবে ভারতকে
মঞ্জরেকরের মতে, এই পিচটাই যদি ব্যাটিংয়ের ভালো হত, তাহলে ভারতের সুবিধা হত। কিন্তু আমদাবাদের অভিশপ্ত পিচের কারণে সেটা হয়নি। ‘হিন্দুস্তান টাইমস’-র কলামে মঞ্জরেকর লেখেন, ‘ভালো ব্যাটিং পিচ হলে ৩০০ রানের বেশি তুলে ফেলে পারত ভারত। তাহলে আমরা একটা ভালো লড়াই দেখতে পেতাম। এই পিচের কারণে আচমকা গেমচেঞ্জার হয়ে দাঁড়ায় টস। আর প্রথমে বোলিং করার সিদ্ধান্ত নিয়ে নিজেদের ভাগ্যের সদ্ব্যবহার করে অস্ট্রেলিয়া।’