ইডেনের পিচ বেশ খারাপ ছিল। এমনই দাবি করলেন অস্ট্রেলিয়ার তারকা পেসার মিচেল স্টার্ক। যিনি এবারের বিশ্বকাপের সেরা বোলিংটা করেছেন ইডেন গার্ডেন্সেই। তবে অজি পেসার দাবি করেন, দ্বিতীয় সেমিফাইনালে ইডেনের যে পিচে খেলা হয়েছে, সেই পিচের গতি অত্যন্ত অসামঞ্জস্যপূর্ণ ছিল। সেই কারণেই সম্ভবত প্রথম ১০ ওভারে কার্যত খেলতে পারছিলেন না দক্ষিণ আফ্রিকার ব্যাটাররা। যদিও বিষয়টি নিয়ে বিশ্ব ক্রিকেটের নিয়ামক সংস্থা আইসিসির তরফে আপাতত কিছু জানানো হয়নি। সংশ্লিষ্ট মহলের অবশ্য বক্তব্য, এবার বিশ্বকাপে ইডেনের পিচ মূলত স্লো থাকছিল। কিন্তু সেমিফাইনালের আগে বৃষ্টির কারণে দীর্ঘক্ষণ পিচ কভারের তলায় থাকায় পিচের অবস্থা কিছুটা পালটে যায়। আর যেটা একেবারে স্বাভাবিক।
ইডেনের পিচ নিযে স্টার্ক
বৃহস্পতিবার ইডেনে দ্বিতীয় সেমিফাইনালে দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে তিন উইকেটে জয়ের পর সাংবাদিক বৈঠকে এসে স্টার্ক বলেন, ‘এটা অবশ্যই বেশ খারাপ উইকেট (ইডেনের ম্যাচ) ছিল। কিছু সময়ের জন্য পিচ ঢাকা থাকায় ব্যাট হাতে শুরু করাটা কিছুটা বেশি কঠিন ছিল কিনা, সেই বিষয়ে আমি নিশ্চিত নই। কতক্ষণ পিচ ঢাকা ছিল, সেই বিষয়টাও আমি জানি না।’
অস্ট্রেলিয়ার তারকা পেসার আরও বলেন, ‘পিচের গতি অত্যন্ত অসামঞ্জস্যপূর্ণ ছিল। পিচে সুইং ছিল। পিচের অসামঞ্জস্যপূর্ণ গতির জন্য সম্ভবত আমাদের বোলিংয়ের প্রথম ১০ ওভারে (দক্ষিণ আফ্রিকার পক্ষে) ব্যাটিং করার কাজটা সম্ভবত কঠিন হয়ে গিয়েছিল। আমার মতে, সেমিফাইনালে জোশ হেজেলউড দুর্ধর্ষ বোলিং করেছে। বোলিংয়ের পিচম্যাপ দেখছিলাম, ও টেস্ট ম্যাচে ওরকম বোলিংই করে। ও আজ (বুধবার) দুর্দান্ত বোলিং করেছে।’
স্টার্ক হেজেলউডকে প্রশংসায় ভরিয়ে দিলেও তিনি নিজে যথেষ্ট ভালো বোলিং করেছেন। ১০ ওভারে ৩৪ রান দিয়ে তিন উইকেট নেন তিনি। আট ওভারে ১২ রান দিয়ে দুই উইকেট নেন হেজেলউড। মেঘলা আকাশের তলায় তাঁদের দুর্দান্ত বোলিংয়ে কেঁপে যায় দক্ষিণ আফ্রিকা। সুইং এবং সিম হচ্ছিল বল। যা একেবারেই স্বাভাবিক। সেই পরিস্থিতিতে প্রথম ১০ ওভারে দু'উইকেটে মাত্র ১৮ রান তোলেন প্রোটিয়ারা। যে ধাক্কা আর কাটিয়ে উঠতে পারেননি তাঁরা। ২১২ রানে অল-আউট হয়ে যান।
আমদাবাদের পিচ নিয়ে স্টার্ক
ইডেনে যেখানে প্রোটিয়া স্পিনারদের সামলাতে যথেষ্ট বেগ পেয়েছেন অজি ব্যাটাররা, তাতে আমদাবাদে ভারতীয় স্পিনারদের সামলানোর ক্ষেত্রে অজিদের উদ্বেগ বাড়ল কিনা, সেই প্রশ্নের জবাবে অজি তারকা স্টার্কস বলেন, ‘আমরা আগামিকাল (শুক্রবার) যখন আমদাবাদ যাব, তখন জানতে পারব যে তাজা উইকেট নাকি পুরনো উইকেটে (ফাইনাল) হবে।’
উল্লেখ্য, এই তাজা পিচ ও পুরনো পিচ বুধবার থেকে বিতর্ক চলছে। সেদিন ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে তাজা পিচে প্রথম সেমিফাইনাল হওয়ার কথা ছিল। তবে পরবর্তীতে সেই পিচ পালটে এমন একটি উইকেটে খেলা যায়, যাতে এবার বিশ্বকাপের গ্রুপ লিগের দুটি ম্যাচ হয়ে গিয়েছে। তা নিয়ে হইচই শুরু করেছিল একটি মহল। ভারতের বিরুদ্ধে প্রভাব খাটানোর অভিযোগ তুলতে থাকে।
ওই মহলের তরফে দাবি করা হচ্ছিল, পুরনো পিচে বল বেশি ঘুরবে। তাই টিম ইন্ডিয়া যাতে সুবিধা পায়, সেজন্য শেষমুহূর্তে পিচ পালটানো হয়েছে। যদিও সেই অভিযোগ উড়িয়ে দেয় আইসিসি। বিশ্ব ক্রিকেটের নিয়ামক সংস্থার তরফে জানানো হয়, শেষমুহূর্তে এরকম পিচ পরিবর্তনের বিষয়টা একেবারেই নতুন নয়। আইসিসির এরকম কোনও নিয়মও নেই যে তাজা পিচেই নক-আউট ম্যাচ খেলতে হবে। সেই পরিস্থিতিতে বুধবার স্টার্ক যে কথা বলেছেন, সেটার মাধ্যমে কি ঘুরিয়ে সেই বিষয়টি উস্কে দিলেন?