সেমিফাইনালের আগে ওয়াংখেড়ের পিচ নিয়ে তুমুল হইচই শুরু করেছিল একটি মহল। ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিসিআই) বিরুদ্ধে প্রভাব খাটিয়ে টিম ইন্ডিয়ার পছন্দ মতো পিচ ব্যবহারের অভিযোগ করা হচ্ছিল। অথচ দিনের শেষে আরব সাগরে ডুবে গিয়েছে সেইসব অভিযোগ। ওয়াংখেড়ের পিচে উঠেছে ৭২৪ রান। আর তা নিয়ে ওই হল্লাবাজদের তুমুল আক্রমণ শানালেন ভারতের প্রাক্তন অধিনায়ক তথা ধারাভাষ্যকার সুনীল গাভাসকর। রীতিমতো চাঁচাছোলা ভাষায় গাভাসকর সটান বলে দিলেন যে মূর্খরা পিচ নিয়ে চেঁচাচ্ছিলেন, তাঁরা নিশ্চয়ই এতক্ষণে চুপ করে গিয়েছেন। তবে সেখানেই থামেননি গাভাসকর। তাঁর বক্তব্য, তিনি চান যে বিশ্বকাপ ফাইনালে অস্ট্রেলিয়া উঠুক। তাহলে অস্ট্রেলিয়ার মিডিয়া আরও পিচ নিয়ে আবোল-তাবোল বকতে পারবে। দাবি করতে পারবে যে ভারতের সুবিধার্ধে পিচ পালটে দেওয়া হয়েছে। আর দিনের শেষে অজি মিডিয়াকে যখন ভুল প্রমাণিত হতে দেখবেন, তখন তাঁর মন জুড়িয়ে যাবে।
বুধবার প্রথম সেমিফাইনালে প্রথমে ব্যাট করে নির্ধারিত ৫০ ওভারে চার উইকেটে ৩৯৭ রান তোলে ভারত। সেই রান তাড়া করতে নেমে ৪৮.৫ ওভারে ৩২৭ রানে অল-আউট হয়ে যায় নিউজিল্যান্ড। অর্থাৎ দু'দল মিলিয়ে ওয়াংখেড়েতে ওঠে ৭২৪ রান। আর সেই বিষয়টি নিয়ে ম্যাচের পরে সরকারি সম্প্রচারকারী সংস্থা স্টার স্পোর্টসে গাভাসকর বলেন, ‘যে মূর্খগুলো পিচ নিয়ে হইচই করছিল, আশা করি যে তাদের মুখ বন্ধ হয়ে গিয়েছে।’
গাভাসকারের নিশানায় ছিলেন সেইসব ব্যক্তিরা, যাঁরা বুধবার প্রথম সেমিফাইনাল শুরুর আগে দাবি করছিলেন যে ভারতকে সুবিধা করে দিতে ওয়াংখেড়েতে তাজা পিচে খেলা হচ্ছে না। মেনে চলা হচ্ছে না আইসিসির নিয়ম। তাজা পিচে প্রথম সেমিফাইনাল হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু নিউজিল্যান্ড যাতে সুবিধা না পায়, সেজন্য এমন পিচ ব্যবহার করা হচ্ছে, যেখানে বিশ্বকাপের দুটি ম্যাচ হয়ে গিয়েছে। যদিও আইসিসির এমন কোনও নিয়ম নেই যে নয়া পিচে নক-আউট ম্যাচ খেলতে হবে। আর শেষমুহূর্তে পিচ পরিবর্তনের বিষয়টি একেবারেই সাধারণ এবং অতীতে একাধিকবার হয়েছে বলেও জানায় আইসিসি।
তবে সেখানেই বিতর্ক থামেনি। একাধিক বিদেশি সংবাদমাধ্যমের রিপোর্টে দাবি করা হয় যে ভারত-পাকিস্তান ম্যাচ-সহ এবার বিশ্বকাপের গ্রুপ লিগের একাধিক ম্যাচ আগে থেকেই নির্ধারিত পিচে হয়নি। ফাইনালেও সেটা করা হচ্ছে। আগে থেকে নরেন্দ্র মোদী স্টেডিয়ামের যে পিচ নির্ধারণ করা ছিল, সেই পিচ পালটে তুলনামূলকভাবে স্পিনিং পিচে ফাইনাল খেলা হবে। অর্থাৎ ভারতের সুবিধার্ধে সেই কাজ করা হচ্ছে বলে দাবি করা হতে থাকে। আর সেই বিষয়টা নিয়ে আক্রমণ শানান গাভাসকর।
প্রথম সেমিফাইনালের শেষে গাভাসকর বলেন, ‘আমি চাই যে (সেমিফাইনালে দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারিয়ে) ফাইনালে উঠুক অস্ট্রেলিয়া। তাহলে ফাইনাল শুরু হওয়ার আগে আমরা আবারও ভুলভাল কিছু জিনিস পড়তে পারব। যেমন - পিচ পরিবর্তন করা হয়েছে। তারপরও ওই বোকা লোকগুলোকে ভুল প্রমাণিত হতে (দেখতে ভালো লাগবে)।’
তিনি আরও বলেন, ‘এই পিচে ৭৩০ রান উঠেছে। যে পিচ নিয়ে হইচই করা হয়েছিল যে পিচ পালটানো হয়েছে। ফাইনালেও সেটাই হবে (অস্ট্রেলিয়ার মিডিয়া ভুল প্রমাণিত হবে)। কারণ অস্ট্রেলিয়ার মিডিয়ার তরফে সেইসব দাবি করা হচ্ছিল। ওই গাধা বা আহাম্মকরা ভুল প্রমাণিত হচ্ছে, সেটা দেখতে খুব ভালো লাগবে। যেই ফাইনাল জিতুক না কেন, রানটার কথা বলছি, আর পিচ কেমন আচরণ করবে, সেটার কথা বলছি।’