'বেশি তেমন আশা নেই, তবে শাকিব যেন ভালো খেলে'-খেলা শুরুর আগেই গ্যালারিতে বসে বললেন এক বাংলাদেশি সমর্থক। চুম্বকে এটাই হয়তো ছিল টাইগারদের মনের কথা। টুর্নামেন্টে দল যেরকম খেলছিল, বাংলাদেশ ইডেনে জিতবে তেমন প্রত্যয় দেখা গেল না রাকিবুর, গিয়ান, মহসিনদের সঙ্গে কথা বলে। কিন্তু পাকিস্তানও যেহেতু প্রত্যাশা অনুযায়ী খেলতে পারেনি, মনের মধ্যে একটু আশা ছিল যে অঘটন ঘটলেও ঘটতে পারে। শেষ পর্যন্ত অবশ্য একেবারেই একপেশে ম্যাচে বাবরবাহিনী জিতে সেমিফাইনালের আশা জিইয়ে রাখল ও আনুষ্ঠানিকভাবে সেমিফাইনালের পথ বন্ধ হল শাকিবদের। খেলা শেষের অনেক আগেই যদিও মাঠ ছেড়েছেন সিংহভাগ বাংলাদেশিরা। যেভাবে প্লেয়াররা কার্যত কোনও ফাইটিং স্পিরিট দেখালো না, তাতেই হয়তো সবচেয়ে বেশি হতাশ তারা।
কিছু সমর্থকের সঙ্গে কথা বলে জানা গেল কেউ এসেছেন শুধু খেলা দেখতে, অনেকে আবার চিকিৎসা ও পড়াশোনার জন্য কলকাতায় আছেন বর্তমানে। সবারই মুখে কলকাতার প্রশংসা, বিশেষত পুলিশ যেভাবে যানজট নিয়ন্ত্রণ করে, ঢাকার মতো জ্যাম হয় না, সেটা নিয়ে মুগ্ধতা। কলকাতায় খাবার-দাবারের দাম বাংলাদেশের থেকে কিছুটা কম, এটাও জানা গেল কথা প্রসঙ্গে। বর্তমান বাংলাদেশ ক্রিকেটে যে ডামাডোল চলছে, তার নেপথ্যে প্রশাসকদের শক্ত হাতে পরিচালনা না করাই মূল কারণ বলে মনে করেন অনেকে। স্টেডিয়ামে এসেছিল অনেক কচিকাঁচা। শাকিব ও মাহমুদুল্লাহর পার্টনারশিপের সময় তাদের সঙ্গে সোচ্চার সমর্থনে মাতলেন বাংলাদেশিরা। এগেনস্ট রান অফ প্লে লিটন আউট হতেই শুরু হল দোষারোপের পালা। যা বুঝলাম, অনেকেই লিটনকে সহ্য করতে পারেন না তাঁর মনোভাবের জন্য। শাকিবের জন্য এখনও যদিও অফুরন্ত ভালোবাসা। দেশকে ক্রিকেট বিশ্বের ম্যাপে তোলার ক্ষেত্রে তাঁর ভূমিকা যে অনস্বীকার্য, এটা সোচ্চারে বললেন সবাই।
বোলিংয়ে কোনও দাগ কাটতে না পারায় ফিজদের দেদার ট্রোলও করলেন বাংলাদেশের সমর্থকরা। সঙ্গে সঙ্গে চলল স্বদেশের লোকদের সঙ্গে কুশল বিনিময়, মোবাইল নম্বর নেওয়ার পালা। অনেক সমর্থকরা বাংলাদেশের সঙ্গে সারা দেশ ঘুরছেন। এরপর আছে পুণে ও দিল্লির পালা। তবে দলের যা অবস্থা, ম্যাচ না দেখে শহর ঘুরলেই বেশি ভালো, স্বগোক্তি হতাশ ভক্তদের। সাতটা বাজতেইএসপ্ল্যানেড চত্বরে কোথায় ভালো খাবার পাওয়া যায় জেনে ধীরে ধীরে ফাঁকা হতে থাকল শাকিব টি-শার্ট লেখা জনতা। স্টেডিয়ামের বাইরে তাদের দেখা মিলল ফুচকা, রোলর দোকানে। ‘ইন্ডিয়ার ফুচকা জাস্ট টু মাচ’- স্বাদটাই আলাদা, ম্যাচ হারার যন্ত্রণা ভুলে তখন উচ্ছ্বাস এক বাংলাদেশি দম্পতির। দিনের শেষে বাড়ি যাওয়ার পালা, গলার কাছে দলা বেধে থাকা বেদনা, ভুলতে ভরসা চিলি ফিস ও চাউমিন!