বিধাননগরে 'ক্লিন সুইপ' তৃণমূলের। ৪১টি আসনের মধ্যে ৩৯টিতেই জিতেছেন তৃণমূল প্রার্থীরা। একটি আসনে জিতেছেন নির্দল প্রার্থী। জেতার পরই তিনি বলেছেন যে তিনি তৃণমূলে ফিরবেন। অপর এক ওয়ার্ডে জিতেছেন কংগ্রেস প্রার্থী। এই আবহে এখন বিধাননগর ঘিরে একমাত্র প্রশ্ন, মেয়র কে হবেন? কৃষ্ণা চক্রবর্তী নাকি সব্যসাচী দত্ত?
সব্যসাচী-মমতা সাক্রাত প্রসঙ্গে কৃষ্ণা যা বললেন
সব্যসাচী-মমতা সাক্ষাত প্রসঙ্গে কৃষ্ণা বলেন, ‘আমি প্রতিবারই ভোটে জিতে দিদির সাথে দেখা করতে আসি। দিদির সাথে দেখা করতে যে কেউ আসতে পারেন, মমতাদি বটবৃক্ষ। যাঁর যন আশ্রয় লাগে, তখন তিনি আসেন দিদির কাছে।’ সব্যসাচীর স্ত্রীকে মমতার সাড়ি উপহার প্রসঙ্গেও কতকটা কটাক্ষের সুরে কৃষ্ণাদেবী বলেন, ‘এরম তো আমাদের প্রায় প্রতিদিনই উপহার দেন দিদি।’
বিধাননগরে একমাত্র নির্দল কাউন্সিলর যোগ দেবেন তৃণমূলে
বিধাননগর পুরনিগমের ১২ নম্বর ওয়ার্ডে নির্দল প্রার্থী মমতা মণ্ডল হাজারেরও বেশি ভোটে জয়ী হয়েই আগামী দিনে তৃণমূল কংগ্রেসের সাথে যোগদান করার কথা জানালেন। তিনি বলেন, এই জয় কর্মীদের জন্য সম্ভব হয়েছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আমার আদর্শ, অভিষেক দা আমার আইকন, তাঁদেরকে দেখেই রাজনীতিতে আসা। কর্মীদের নিয়ে বৈঠক করে পরবর্তী সিদ্ধান্ত জানানো হবে। তবে তৃণমূল কংগ্রেসের যোগদানে শুধু সময়ে অপেক্ষা, তা বলাই যায়।
বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলির দুরাবস্থার কথা সারা দেশের মানুষ জানে: ফিরহাদ
সব্যসাচী প্রসঙ্গে ফিরহাদ বলেন, 'দলের যে কোনও নির্বাচনে দলের প্রার্থীরা জয়লাভ করলে মুখ্যমন্ত্রীর বাড়িতে প্রণাম করতে আসেন। কারণ আমরা সবাই মনে করি মুখ্যমন্ত্রীর বাড়িটা আমাদের কাছে একটা মন্দির। সব্যসাচী মুখ্যমন্ত্রী কাছে আশীর্বাদ নিতে এসেছিলেন, ফেরার পথে আমার সঙ্গে দেখা করে গেলেন। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ওপর মানুষের আস্থা অটুট। তাঁর জনকল্যাণমুখী কাজ উন্নয়ন করার মানসিকতাকেই বাংলার মানুষ সমর্থন করেছে। বিরোধীরা যতই অপপ্রচার করুক, বিভিন্ন অভিযোগ নিয়ে আদালতে যান তাতে কারোর কিছু এসে যায় না। রাজ্যের মানুষ বিরোধীদের কথায় আর আমল দেয় না, তাঁরা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও তাঁর নেতৃত্বাধীন দল তৃণমূল কংগ্রেসকে সমর্থন করে। বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলির দুরাবস্থার কথা সারা দেশের মানুষ জানে। তাই বিকল্প শক্তি হিসাবে মানুষ এখন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পাশে রয়েছেন।
‘মানুষ আমাকে দেখে ভোট দেয়নি’
সব্যসাচী বলেন, ‘মুখ্যমন্ত্রী তথা দল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় থেকে শুরু করে ফিরহাদ হাকিম সহ দলের শীর্ষ নেতৃবৃন্দ আমাকে গ্রহণ করেছেন, আমাকে সুযোগ দিয়েছেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আশীর্বাদ মাথার ওপর ছিলেন বলেই এই জয়লাভ সম্ভব হয়েছে। মানুষ আমাকে দেখে ভোট দেয়নি, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উন্নয়ন প্রশাসন চালানোর দক্ষতা ওপর আস্থা রেখেই আসলে তাকে সমর্থন দিয়েছে।’
সব্যসাচীর পর কৃষ্ণা গেলেন মমতার বাড়িতে
এর আগে সব্যসাচী দত্ত গিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখা করে আসেন। এরপর মমতার বাড়িতে গেলেন কৃষ্ণা চক্রবর্তীও।
সস্ত্রীক কালীঘাটে সব্যসাচী
সস্ত্রীক কালীঘাটে গিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও অভিষেকের সঙ্গে দেখা করলেন সব্যসাচী দত্ত। বিধাননগরের পরবর্তী মেয়র নিয়ে জল্পনার মাঝেই এই সাক্ষাতের দিকে নজর ছিল সবার। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নাকি সব্যসাচীকে বলেছেন যাতে তিনি এলাকা দেখে রাখেন।
মেয়র কে হবেন?
কৃষ্ণা বলেন, ‘আমার নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, চেয়ার পেয়ে বসে থাকলে চলবে না, পারফরম্যান্স দিতে হবে, কাজ করতে হবে, যে কাজ করতে পারবেন না তাঁর চেয়ারে বসার কোনও অধিকার নেই।’
‘সব কাজই হয়েছে আগামী দিনেও হবে’
বিধাননগর ২৯ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থী কৃষ্ণা চক্রবর্তী জানান, ওয়ার্ডে যে যে কাজ হওয়া প্রয়োজন, যেমন জল, আলো, রাস্তা, আবর্জনা, সব কাজই হয়েছে আগামী দিনেও হবে।
কোভিড বিধি নিষেধ ভেঙে উল্লাস
উল্লাসে মাতল বিধানগর পুরনিগমের তৃণমূল কংগ্রেসের কর্মী সমর্থকেরা। গণনাকেন্দ্রের ভিতরেই প্রার্থীকে নিয়ে নাচানাচি কর্মীদের। অন্যদিকে বিধাননগর কলেজের বাইরে সবুজ আবির মেখে উন্মাদনা দেখা গেল কর্মী সমর্থকদের মধ্যে। কোভিড বিধি নিষেধ ভেঙেই এক প্রকার উল্লাস বহু মানুষের।
জয়ী তৃণমূল প্রার্থী সব্যসাচী দত্ত
বিধাননগরে ৩১ নম্বর ওয়ার্ডে ৪৬৪৪ ভোটে জয়ী তৃণমূল প্রার্থী সব্যসাচী দত্ত।
২ নম্বর ওয়ার্ডে জয়ী তৃণমূল
বিধান নগর ২ নম্বর ওয়ার্ডে জয়ী তৃণমূল প্রার্থী রহিমা বিবি মন্ডল।
সাত নং ওয়ার্ডে জয়ী তৃণমূল
সাত নম্বর ওয়ার্ডে জয়ী তৃণমূল প্রার্থী দেবরাজ চক্রবর্তী, ৫৬৬৮ টি ভোটে জয়লাভ করেছেন তিনি।
১২ নম্বর ওয়ার্ডে এগিয়ে নির্দল প্রার্থী মমতা মণ্ডল
বিধান নগরে ১২ নম্বর ওয়ার্ডে এগিয়ে নির্দল প্রার্থী মমতা মণ্ডল। অপরদিকে একটি ওয়ার্ডে এগিয়ে কংগ্রেস, তাছাড়া সব আসনেই এগিয়ে বা জয়ী তৃণমূল।
চার নম্বর ওয়ার্ড থেকে জিতলেন তৃণমূল প্রার্থী
তৃণমূল প্রার্থী শাহনাওয়াজ আলি মণ্ডল জিতে গেলেন চার নম্বর ওয়ার্ড থেকে
৩ নম্বর ওয়ার্ডে জিতে গেলেন তৃণমূল পার্থী আরাত্রিকা
বিধাননগরের ৩ নম্বর ওয়ার্ডে জিতে গেলেন তৃণমূল পার্থী আরাত্রিকা চট্টোপাধ্যায়। তিনি বিধায়ক তাপস চট্টোপাধ্যায়ের কন্যা।
তৃণমূলের কর্মীদের উচ্ছ্বাস
বিধাননগর পুরসভা নির্বাচনের ভোট গণনা শুরু হতেই কলেজের সামনে তৃণমূলের কর্মীদের উচ্ছ্বাস, ঢোল তাসা বাজাচ্ছে দলীয় পতাকা নিয়ে।
তৃতীয় রাউন্ড শেষে ১১০০ ভোটে এগিয়ে সব্যসাচী
বিধাননগর ৩১ নম্বর ওয়ার্ডে তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থী সব্যসাচী দত্ত তৃতীয় রাউন্ড শেষে ১১০০ ভোটে এগিয়ে।
তাপস চট্টোপাধ্যায়ের মেয়ে এগিয়ে ৩ নম্বর ওয়ার্ডে
বিধাননগরের ৩ নম্বর ওয়ার্ডে তৃণমূল পার্থী আরাত্রিকা এগিয়ে। তিনি বিধায়ক তাপস চট্টোপাধ্যায়ের কন্যা।
৩০, ৪০ নম্বর ওয়ার্ডে এগিয়ে তৃণমূল
বিধাননগরে ৩০, ৪০ নম্বর ওয়ার্ডে এগিয়ে তৃণমূল কংগ্রেস
১৭ নং ওয়ার্ডে কংগ্রেস প্রার্থী এগিয়ে
১৭ নং ওয়ার্ডে কংগ্রেস প্রার্থী সমীর রায়, মাত্র তিন ভোটে এগিয়ে তিনি
৪০ নং ওয়ার্ডে তৃণমূল প্রার্থী এগিয়ে
৪০ নং ওয়ার্ডে তৃণমূল প্রার্থী তুলসী সিনহা রায় এগিয়ে রয়েছেন
এগিয়ে কৃষ্ণা চক্রবর্তী
প্রাক্তন পুরপ্রধান তথা তৃণমূল প্রার্থী কৃষ্ণা চক্রবর্তী এগিয়ে ২৯ নং ওয়ার্ড থেকে
এগিয়ে সব্যসাচী দত্ত
৩১ নং ওয়ার্ডে এগিয়ে তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী সব্যসাচী দত্ত
১৬ নম্বর ওয়ার্ডে এগিয়ে তৃণমূল
বিধাননগরে ১৬ নম্বর ওয়ার্ডে এগিয়ে গিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস জয়শ্রী বাগুই। ৩৭৮ ভোটে এগিয়ে তিনি।
কত রাউন্ডে ভোট গণনা?
প্রথমে ভোটকর্মীদের ভোট গণনা হবে। তারপর শুরু হবে ইভিএম গণনা। ৮ থেকে ১৪ রাউন্ডে ভোট গণনা হবে। সকাল ৮টা থেকে শুরু ভোট গণনা।
২০১৫ সালে তৃণমূলের ‘সুইপ’
২০১৫ সালে বিধাননগর পৌরনিগম নির্বাচনে ৪১টির মধ্যে ৩৭টি জিতেছিল তৃণমূল।
স্ট্রং রুমের নিরাপত্তার দায়িত্বে আছে রাজ্য পুলিশ
বিধাননগর কলেজে তৈরি হয়েছে বিধাননগর পৌরনিগমের স্ট্রং রুম। স্ট্রং রুমের নিরাপত্তার দায়িত্বে আছে রাজ্য পুলিশের সশস্ত্র পাহারা। রয়েছে সিসি ক্যামেরার নজরদারি।
নজরে যে হেভিওয়েটরা
বিধাননগরে ৩১ নম্বর ওয়ার্ডে তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী সব্যসাচী দত্ত। তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেওয়া এই নেতা আবার ফিরেছেন তৃণমূলে। তারপরই পেয়েছেন টিকিট। সব্যসাচীর বিরুদ্ধে বিজেপি প্রার্থী হয়েছেন দেবাশিস জানা। তিনি আবার একসময় ছিলেন সব্যসাচীর ঘনিষ্ঠ। ২৯ নম্বর ওয়ার্ডে তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থী বিদায়ী মেয়র কৃষ্ণা চক্রবর্তী। তাঁর বিরুদ্ধে বিজেপি প্রার্থী হয়েছেন মিতালি মুখোপাধ্যায়। এদিকে তৃণমূল কংগ্রেস বিধায়ক অদিতি মুন্সির স্বামী দেবরাজ চক্রবর্তী প্রার্থী হয়েছেন ৭ নম্বর ওয়ার্ডে। ৩০ নম্বর ওয়ার্ডে তৃণমূলের প্রার্থী হয়েছেন অনিতা মণ্ডল। অনিতার বাবা ছিলেন মনোরঞ্জন ভক্ত। মনোরঞ্জন ভক্ত একসময় আন্দামান নিকোবর দ্বীপপুঞ্জের সাংসদ ছিলেন।
কার দখলে বিধাননগর?
বিধাননগর পুরনিগমের ৪১টি ওয়ার্ডে মোট বুথের সংখ্যা রয়েছে ৪৬৮টি। মোট ভোটারের সংখ্যা ৪ লক্ষ ৪৬ হাজার ৬৪০ জন। রাজারহাট-নিউটাউন পুরসভার সঙ্গে বিধাননগর পুরসভাকে যুক্ত করে ২০১৫ সালেই তৈরি হয়েছিল বিধাননগর পৌরনিগম। বিধাননগর পৌরনিগমে প্রথমবারের নির্বাচনে বিপুল ব্যবধানে জিতেছিল তৃণমূল। মেয়র হয়েছিলেন সব্যসাচী দত্ত। পরে ২০১৯ সালে সব্যসাচী বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন। তবে বিধানসভা নির্বাচনে হেরে ফের একবার তৃণমূলে ফেরেন সব্যসাচী। ২০২১ সালে দেখা বিধাননগরে সব্যসাচী কত বড় ফ্যাক্টর।