আগামী ৮ জুলাই রাজ্যজুড়ে হবে পঞ্চায়েত নির্বাচন। তাই মনোনয়ন–পর্বের পর থেকেই শুরু হয়ে গিয়েছে সব রাজনৈতিক দলের প্রচার। এই প্রচারের ক্ষেত্রে এবার বিভিন্ন জায়গার নির্দল প্রার্থীদেরও অগ্রণী ভূমিকা নিতে দেখা গিয়েছে। তাই গ্রামবাংলায় রাজনীতির পারদ ক্রমেই চড়ছে। এই আবহে পূর্ব মেদিনীপুরে ধরা পড়ল এক চমকপ্রদ ছবি। আর সেখানে জড়িয়ে গেল বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর নাম। পঞ্চায়েত নির্বাচনে এবার ব্যতিক্রমী কোলাঘাট পঞ্চায়েত সমিতির ৪ নম্বর আসনটি। এখানে পঞ্চায়েত সমিতির এই আসনে তৃণমূল কংগ্রেস, বিজেপি প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। আর এখানেই দেখা গেল বিজেপি সমর্থিত নির্দল প্রার্থীর উপস্থিতি। যা নিয়ে আলোড়ন পড়ে গিয়েছে রাজ্য–রাজনীতিতে।
বিষয়টি ঠিক কী ঘটেছে? কোলাঘাট পঞ্চায়েত সমিতির প্রাক্তন কর্মাধ্যক্ষ হলেন অচিন্ত্য সামন্ত। তিনি এবার নির্দল প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। আগে তৃণমূল কংগ্রেসেই ছিলেন। পরে শুভেন্দু অধিকারীকে ধরে বিজেপিতে আসেন তিনি। নিজেকে শুভেন্দু অনুগামী বলে দাবি করেন অচিন্ত্য। এবার তিনি বিজেপির হয়ে মনোনয়ন জমা দেন। কিন্তু অজ্ঞাত কারণে তাঁর জায়গায় টিকিট পান টিটুন চক্রবর্তী। তাতে তিনি খোচে ফায়ার। তাই নির্দল প্রার্থী হিসেবে নারকেল চিহ্ন নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। সুতরাং তিনি বিজেপির অন্দরেই গোঁজ প্রার্থী।
তারপর ঠিক কী ঘটল? এই গোঁজ প্রার্থী হয়েই প্রচার শুরু করেছেন অচিন্ত্য সামন্ত। দেওয়াল লিখন থেকে শুরু করে অচিন্ত্যর পোস্টারে দেখা দিয়েছে চমক। আর তা নিয়েই শুরু হয়েছে জোর বিতর্ক। অচিন্ত্য সামন্তের ভোট প্রচারের পোস্টারে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর ছবি দেখা গিয়েছে। এই নিয়ে গোটা এলাকায় আলোড়ন পড়ে গিয়েছে। বিজেপি অবশ্য আগেই সিদ্ধান্ত নিয়েছিল যেখানে প্রার্থী দিতে পারবে না সেখানে নির্দলকে সমর্থন করবে। কিন্তু তারা তো প্রার্থী দিয়েছে। তাহলে এমন ছবি কেন? উঠছে প্রশ্ন। পঞ্চায়েত সমিতির ভোট তাঁকে দেওয়ার ন্য ভোটারদের আবেদন করছেন অচিন্ত্য সামন্ত।
আরও পড়ুন: প্রচার তালিকা থেকে বাদ পড়লেন সায়নী ঘোষ, পঞ্চায়েত নির্বাচনে দেখা মিলবে না
ঠিক কে, কী বলছেন? এই বিষয়ে নির্দল প্রার্থী অচিন্ত্য সামন্ত সংবাদমাধ্যমে বলেন, ‘আমি বিজেপির হয়ে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছিলাম। কিন্তু আমাকে টিকিট দেওয়া হয়নি। শুভেন্দু অধিকারীর সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে আছি। আমি নির্দল হিসেবে লড়লেও পঞ্চায়েত ও জেলা পরিষদে বিজেপিকে ভোট দিতে বলছি। জেতার বিষয়ে আমি আশাবাদী।’ পাল্টা বিজেপির কোলাঘাট ব্লক কনভেনর তুষার দোলুই বলেন, ‘দলের প্রার্থী থাকার পরও নির্দল হিসেবে লড়াই সম্পূর্ণ অন্যায়। এই কাজে দলের কোনও অনুমোদন নেই।’ আর এই বিষয়টিকে নিয়ে মজা করেছে তৃণমূল কংগ্রেস। মন্ত্রী বিপ্লব রায়চৌধুরীর কথায়, ‘দেওয়ালে পিঠ ঠেকে গেলে এমনই হয়। ওদের দলের মধ্যে কোন্দল থেকেই এই ঘটনা ঘটেছে।’