পঞ্চায়েত নির্বাচনের দামামা বেজে গিয়েছে। আগামী ৮ জুলাই রাজ্যে পঞ্চায়েত নির্বাচন হবে। তাই শাসক–বিরোধী সবপক্ষই নির্বাচনী প্রচারে নেমে পড়েছেন। এই আবহে পুরুলিয়ার মানবাজার নির্বাচনী প্রচারে এসেছিলেন রাজ্যের জলসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রী মানস ভুঁইয়া। তবে তিনি এখানে এসে অন্য এক ছবি দেখতে পেলেন। যা তিনি মেনে নিতে পারেননি। তাই স্বমেজাজে ক্ষোভ উগড়ে দিলেন মন্ত্রী মানস। আর তা দেখে জেলার নেতারা বেশ চমকে যান। এই নিয়ে দিনভর চর্চাও হতে থাকে। এখন দেখার তাঁর বার্তা বিধায়ককে কে পৌঁছে দেন।
বিষয়টি ঠিক কী ঘটেছে? পুরুলিয়ার মানবাজার নির্বাচনী প্রচারে এসে রাজ্যের মন্ত্রী দেখেন সেখানে উপস্থিত নেই স্থানীয় বিধায়ক তথা রাজ্যের পশ্চিমাঞ্চল উন্নয়ন দফতরের রাষ্ট্রমন্ত্রী সন্ধ্যারানি টুডু। এটা দেখেই তিনি ক্ষেপে গেলেন। তখন মন্ত্রী নিজের ক্ষোভ উগড়ে দেন। উপস্থিত জেলার নেতাদের উদ্দেশে তাঁর প্রশ্ন, কেন অনুপস্থিত স্থানীয় বিধায়ক? এই প্রশ্ন যখন তিনি করছেন তখন সভা কানায় কানায় মানুষে ভরা। এখান থেকেই জবাব চাওয়ায় সরগরম হয়ে ওঠে নির্বাচনী সভা। জেলার নেতারা একে অন্যের মুখের দিকে চাওয়া–চায়ি করছেন। কারও কাছেই কোনও উত্তর নেই।
তারপর ঠিক কী ঘটল? পঞ্চায়েত নির্বাচনের প্রচারে বুধবার মানবাজার মহকুমা সদরে এসেছিলেন রাজ্যের মন্ত্রী মানস ভুঁইয়া। কিন্তু এখানে এসে স্থানীয় বিধায়ক তথা রাষ্ট্রমন্ত্রীকে দেখতে পাননি। তাতে তিনি বেজায় ক্ষুব্ধ হন। আর এই নির্বাচনী প্রচার সভাতে বিধায়কের স্বামী গুরুপদ টুডু উপস্থিত ছিলেন। তাঁকে দেখতে পেয়েই মানস ভুঁইয়া প্রশ্ন করেন, ‘সন্ধ্যা কোথায়?’ জবাবে স্বামী গুরুপদ টুডু বলেন, ‘মন্ত্রী ঝাড়গ্রামে প্রচারে গিয়েছেন।’ এটা শোনার পর গুরুপদের সঙ্গে কথা কাটাকাটি হয় বলে মানসের বলে সূত্রের খবর। এর আগে বিশ্ব পরিবেশ দিবসের অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রীর ছবি না থাকায় মঞ্চ থেকেই পরিবেশ দফতরের সচিবের কাছে রিপোর্ট তলব করেছিলেন মন্ত্রী মানস ভুঁইয়া। তবে ওই দফতর তাঁর থেকে সরে গিয়ে এখন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাতে গিয়েছে।
আরও পড়ুন: একশো দিনের কাজের টাকা পাচ্ছি না কেন? এবার জনতার বিক্ষোভের মুখে ভারতী ঘোষ
ঠিক কী বাদানুবাদ হল মানস–গুরুপদের? নির্বাচনী প্রচার সভায় কিছু না বললেও সূত্রের খবর, সভা শেষে মানসবাবু ক্ষোভ উগড়ে দিয়ে গুরুপদকে নির্দেশ দেন, ‘সন্ধ্যাকে বলবেন নিজের এলাকা দেখতে। আমার নাম করে বলবেন নিজের নির্বাচনী এলাকায় যেন থাকেন।’ সন্ধ্যারানি টুডুর স্বামী মন্ত্রী মানসকে জানান, দলীয় নির্দেশেই ঝাড়গ্রামের প্রচারে গিয়েছেন তাঁর স্ত্রী। শীঘ্রই ফিরবেন। তবে মানস ভুঁইয়ার এই মন্তব্য দলের স্বার্থেই বলে মনে করা হচ্ছে। কারণ এলাকায় স্থানীয় বিধায়ক না থাকলে মানুষের কাছে ভুল বার্তা যাবে। তাছাড়া পঞ্চায়েত নির্বাচন দরজায় কড়া নাড়ছে। সেখানে রাজ্যের মন্ত্রী এসে উপস্থিত হলেও বিধায়কের অনুপস্থিতি বিরূপ মনোভাব তৈরি হয়।