আগামী ৭ মে তৃতীয় দফার লোকসভা নির্বাচন। আর তার ৪৮ ঘণ্টা আগে বিজেপির শক্তঘাঁটি মেদিনীপুর লোকসভা কেন্দ্রে বড়সড় ভাঙল ধরালেন তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী জুন মালিয়া। আজ, রবিবার সকালেই জুন মালিয়া সম্পর্কে তুমুল সমালোচনা করেন বর্ধমান–দুর্গাপুরের বিজেপি প্রার্থী দিলীপ ঘোষ। তার ঠিক কয়েক ঘণ্টার মধ্যে ভাঙন ধরে গেল মেদিনীপুরে। এখানে দিলীপ ঘোষকে সরিয়ে অন্য কাউকে টিকিট দেওয়ায় মনক্ষুন্ন হয়েছিলেন প্রদীপ পট্টনায়েক। তাঁর সঙ্গে একাধিক বিজেপি নেতাও ক্ষুব্ধ ছিলেন। আজ, রবিরার দলবল নিয়ে এই বিজেপি নেতারা তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দেন। জুন মালিয়ার ক্যারিশ্মায় এই যোগদান সম্ভব হয়।
এদিকে মেদিনীপুরে নতুন প্রার্থী করেছে বিজেপি। এবার এখানে বিজেপি প্রার্থী হয়েছেন আসানসোলের বিধায়ক অগ্নিমিত্রা পাল। তাঁকে এখানকার বিজেপি নেতাদের পছন্দ নয়। তাই পুরনো এই কার্যকর্তা তথা খড়্গপুর বিজেপির ফাউন্ডার প্রদীপ পট্টনায়েক– সহ বিজেপি নেতারা গেরুয়া সংস্রব ছেড়ে ঘাসফুলে যোগ দিলেন। অভিমানে বিজেপি নেতারা দল ছেড়ে তৃণমূল কংগ্রেসে যোগদান করলেন। এখানে নির্বাচনের ঠিক ২০ দিন আগে মেদিনীপুরে বিজেপির এই ভাঙন বেশ তাৎপর্যপূর্ণ। প্রদীপ পট্টনায়েক, বঙ্কিম মাইতি–সহ বেশ কয়েকজন আজ যোগদান করলেন তৃণমূল কংগ্রেসে।
আরও পড়ুন: ‘একসঙ্গে ৬৭ জন বিজেপির নেতা পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন’, আবার বিস্ফোরক কুণাল ঘোষ
অন্যদিকে তৃণমূল কংগ্রেসের জেলা সভাপতি সুজয় হাজরা, রাজ্য সহ–সভাপতি জয় প্রকাশ মজুমদার, মেদিনীপুর লোকসভা কেন্দ্রের প্রার্থী জুন মালিয়া এই বিজেপি নেতাদের হাতে তুলে দেন দলের পতাকা। খড়গপুর বিধানসভা নির্বাচনে পাঁচবার প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন প্রদীপ পট্টনায়েক। এমনকী অবিভক্ত মেদিনীপুর জেলায় বিজেপির প্রতিষ্ঠার সময় থেকেই দল করে আসছেন প্রদীপবাবু। একবার মেদিনীপুর লোকসভা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন তিনি। এই যোগদানের বিষয়ে জয়প্রকাশ মজুমদার বলেন, ‘অবিভক্ত মেদিনীপুর জেলার বিজেপির প্রতিষ্ঠাতা সদস্য প্রদীপ পট্টনায়েক বিজেপির ছেড়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাত ধরছেন। বিজেপির ছাত্র সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ছিলেন। বিজেপির সংগঠনের কোমর ভেঙে যাবে প্রদীপের যোগদানে।’
এছাড়া আজ প্রদীপ পট্টনায়েক ছাড়া কেশিয়ারিতে বিজেপির অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা সদস্য বঙ্কিম মাইতি, ফুটবলার মুক্তিপ্রসাদ মান্না, সমাজসেবী স্কুল শিক্ষিকা ইতু গঙ্গোপাধ্যায়, জয়ন্তী নিমাই যোগদান করেন তৃণমূল কংগ্রেসে। প্রদীপ পট্টনায়েক যোগদান করার পর বলেন, ‘আমি অটলবিহারী বাজপেয়ীর জমানা থেকে বিজেপি করছি। আমার দলের প্রতি কোনওদিন কোনও চাহিদা ছিল না। আমি কখনও দলের কাছে টিকিট চাইনি। কিন্তু দল আমাকে কোনও কাজেই ব্যবহার করছিল না। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উন্নয়ন দেখে তাই তৃণমূল কংগ্রেসে সামিল হচ্ছি।’