মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার সময়সীমা শেষ হয়ে গিয়েছে। তাতে দেখা যাচ্ছে বিরোধী দলগুলি প্রার্থী দিতে না পারায় বহু জায়গায় বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হতে চলেছে তৃণমূল কংগ্রেস। এটা বোধহয় বিরোধীরা মেনে নিতে পারছেন না। তাই এবার তৃণমূল কংগ্রেসের উপর আক্রমণ হতে শুরু করেছে। নবগ্রামে খুন করা হয়েছে তৃণমূল কংগ্রেসের অঞ্চল সভাপতিকে। তারপরই বোমাবাজির শব্দে কেঁপে উঠল বীরভূম। একদা কেষ্টর গড়ে এখন আক্রান্ত তৃণমূল কংগ্রেস কর্মীরা। বোলপুরের অন্তর্গত লোহাগড়গ্রাম এলাকায় চলে বোমাবাজি। এবার সরাসরি তৃণমূল কংগ্রেসের গ্রাম পঞ্চায়েত প্রার্থীর বাড়িতেই বোমা মারা হল বলে অভিযোগ উঠেছে। দুই তৃণমূল কর্মীকে লক্ষ্য করে বোমা ছোড়ার অভিযোগ উঠেছে।
ঠিক কী ঘটেছে বীরভূমে? স্থানীয় সূত্রে খবর, সদ্য তৃণমূল ছেড়ে কংগ্রেসে যোগ দিয়েছেন কাজি নুরুল হুদা। তাঁর নেতৃত্বেই এই বোমাবাজি হয়েছে বলে অভিযোগ। বোমার আঘাতে মারাত্মক জখম হয়েছেন দুই তৃণমূল কংগ্রেস কর্মী। বোলপুর মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়েছে তাঁদের। মনোনয়নপত্র পেশ করার শেষ দিনে এমন ঘটনায় শিউরে উঠেছেন মানুষজন। মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার পর্ব শেষ হতেই এই বোমাবাজির ঘটনা ঘটেছে। রাতেই এই বোমা ছোড়া হয়। আর তার জেরেই কেঁপে ওঠে এলাকা। এই ঘটনার পিছনে কংগ্রেসের হাত আছে বলে অভিযোগ করা হচ্ছে। এলাকায় চাপা আতঙ্ক তৈরি হয়েছে।
পুলিশ কী তথ্য পেয়েছে? পুলিশ সূত্রে খবর, জখম দুই তৃণমূল কংগ্রেস কর্মীর নাম শেখ আনসার এবং জুলফিকার শেখ। এই বোমাবাজির ঘটনাটি ঘটেছে বীরভূমের বোলপুর ব্লকের লোহাগড় গ্রামে। জুলফিকার এবার পঞ্চায়েত নির্বাচনের প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন জমা দিয়েছেন। তারপরই তাঁদের বাড়ি লক্ষ্য করেই বোমা ছোড়া হয়েছে। সেই আঘাতেই তাঁরা মারাত্মক জখম হয়েছেন বলে প্রাথমিক অনুমান। তবে গোটা ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। কে বা কারা এই কাজে জড়িত তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এই দুই আক্রান্ত তৃণমূল কংগ্রেস কর্মীর পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলা হয়েছে। সব বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
আর কী জানা যাচ্ছে? ত্রিস্তর পঞ্চায়েত নির্বাচনের মনোনয়নের জমা দেওয়ার পর বাড়ি ফিরেছিল দুই তৃণমূল কংগ্রেস কর্মী। তারপর দলীয় কাজের জন্য বোলপুর ব্লক অফিসে গিয়েছিল তাঁরা। ব্লক অফিস থেকে বাড়ি ফেরার পথে গ্রামে ঢুকতেই দুই তৃণমূল কংগ্রেস কর্মীকে লক্ষ্য করে বোমা ছোড়ার অভিযোগ উঠেছে কংগ্রেস আশ্রিত দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে। যদিও অভিযোগ অস্বীকার করেছে কংগ্রেস। তদন্তে নেমেছে শান্তিনিকেতন থানার পুলিশ। তবে জুলফিকরের বোন এরিনা খাতুন সংবাদমাধ্যমে বলেন, ‘তৃণমূল করার জন্যই কংগ্রেসের কর্মী–সমর্থকরা এমন হামলা করেছে।’ পাল্টা কাজি নুরুল হুদা সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘নিজেরা বাড়িতে বোমা বাঁধতে গিয়েই জখম হয়েছেন। এর সঙ্গে কংগ্রেস জড়িত নয়।’