পঞ্চায়েতের ভোটগ্রহণের মাত্র ৪ দিন আগে প্রকাশ্যে এল রাজ্যের স্পর্শকাতর বুথের সংখ্যা। গতকাল পঞ্চায়েত মামলার শুনানি হচ্ছিল কলকাতা হাই কোর্টে। সেই সময় উচ্চ আদালতকে স্পর্শকাতর বুথের তালিকা পেশ করে রাজ্য নির্বাচন কমিশন। কমিশনের তরফে জানানো হয়, রাজ্যের ২২টি জেলায় মোট ৪ হাজার ৮৩৪টি বুথকে 'স্পর্শকাতর' হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। উল্লেখ্য, রাজ্যের পঞ্চায়েতগুলিতে রয়েছে মোট ৬১ হাজার ৬৩৬টি পোলিং স্টেশন বা বুথ। এই আবহে শতাংশের নিরিখে মোট স্পর্শকাতর বুথ হল মাত্র ৭.৮৪ শতাংশ। (পঞ্চায়েত নির্বাচন সংক্রান্ত যাবতীয় লাইভ আপডেট জানতে ক্লিক করুন এখানে)
এদিকে রাজ্য কমিশনের তালিকা অনুযায়ী, রাজ্যের মধ্যে যে জেলায় সর্বোচ্চ সংখ্যক স্পর্শকাতর বুথ রয়েছে, সেটি হল মুর্শিদাবাদ। এরপরই রয়েছে দক্ষিণ ২৪ পরগনা, নদিয়া, পূর্ব মেদিনীপুর, হাওড়া। তবে শতাংশের নিরিখে তালিকায় শীর্ষে রয়েছে কোচবিহার। এই তালিকায় এরপরই রয়েছে হাওড়া ও পুরুলিয়া। এদিকে রাজ্যের যেসব জেলায় সবচেয়ে বেশি হিংসা চোখে পড়েছে তার মধ্যে অন্যতম হল মুর্শিদাবাদ। এই তালিকায় চতুর্থ স্থানে রয়েছে এই জেলা। তবে যে দক্ষিণ ২৪ পরগনায় এত রক্ত ঝরল, স্পর্শকাতর বুথের নিরিখে সেই সেই জেলা বেশ খানিকটা নীচেই রয়েছে তালিকায়।
কমিশন জানাচ্ছে কোচবিহারের মোট ২৩৮৫টি বুথের মধ্যে স্পর্শকাতর ৩১৭টি। অর্থাৎ, এই জেলার ১৩.২৯ শতাংশ বুথকে স্পর্শকাতর হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। এরপর তালিকায় রয়েছে হাওড়া। এই জেলার মোট ৩০৩১টি বুথের মধ্যে স্পর্শকাতর ৩৫৩টি। অর্থাৎ, এই জেলার ১১.৫৬ শতাংশ বুথকে স্পর্শকাতর হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। এরপর তালিকায় তৃতীয় স্থানে থাকা পুরুলিয়ার মোট ২৪০৫টি বুথের মধ্যে স্পর্শকাতর ২৫৩টি। অর্থাৎ, এই জেলার ১০.৫২ শতাংশ বুথকে স্পর্শকাতর হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। মুর্শিদাবাদের মোট ৫৪৩৮টি বুথের মধ্যে স্পর্শকাতর ৫৪১টি। অর্থাৎ, এই জেলার ৯.৯৫ শতাংশ বুথকে স্পর্শকাতর হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। নদিয়ার মোট ৩৮৯৬টি বুথের মধ্যে স্পর্শকাতর ৩৭৩টি। অর্থাৎ, এই জেলার ৯.৫৭ শতাংশ বুথকে স্পর্শকাতর হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।
এদিকে মালদার মোট ৩০৩৫টি বুথের মধ্যে স্পর্শকাতর ২৭০টি। অর্থাৎ, এই জেলার ৮.৯ শতাংশ বুথকে স্পর্শকাতর হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। এরপর পূর্ব বর্ধমানের মোট ৩৯৩৩টি বুথের মধ্যে স্পর্শকাতর ৩৪২টি। অর্থাৎ, এই জেলার ৮.৭ শতাংশ বুথকে স্পর্শকাতর হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। এদিকে পূর্ব মেদিনপুরের মোট ৪১২৮টি বুথের মধ্যে স্পর্শকাতর ৩৫৬টি। অর্থাৎ, এই জেলার ৮.৬২ শতাংশ বুথকে স্পর্শকাতর হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। বীরভূমের মোট ২৭৬৮টি বুথের মধ্যে স্পর্শকাতর ২২৮টি। অর্থাৎ, এই জেলার ৮.২৪ শতাংশ বুথকে স্পর্শকাতর হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। এরপর তালিকায় ১০ নম্বরে আছে দক্ষিণ ২৪ পরগনা। এই জেলার মোট ৬২২৬টি বুথের মধ্যে স্পর্শকাতর ৫০২টি। অর্থাৎ, এই জেলার ১৩.২৯ শতাংশ বুথকে স্পর্শকাতর হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।
এদিকে এরপর রয়েছে পশ্চিম মেদিনীপুর। এই জেলার মোট ৩৮৬৭টি বুথের মধ্যে স্পর্শকাতর ৩০৫টি। অর্থাৎ, এই জেলার ৭.৮৯ শতাংশ বুথকে স্পর্শকাতর হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। দক্ষিণ দিনাজপুরের মোট ১২২৩টি বুথের মধ্যে স্পর্শকাতর ৮৪টি। অর্থাৎ, এই জেলার ৬.৮৭ শতাংশ বুথকে স্পর্শকাতর হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। উত্তর ২৪ পরগনার মোট ৪৫৩২টি বুথের মধ্যে স্পর্শকাতর ২৫৮টি। অর্থাৎ, এই জেলার ৫.৬৯ শতাংশ বুথকে স্পর্শকাতর হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। হুগলির মোট ৩৮৫১টি বুথের মধ্যে স্পর্শকাতর ২০৯টি। অর্থাৎ, এই জেলার ৫.৪৩ শতাংশ বুথকে স্পর্শকাতর হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। দার্জিলিং জেলার মোট ৫১৪টি বুথের মধ্যে স্পর্শকাতর ২৭টি। অর্থাৎ, এই জেলার ৫.২৫ শতাংশ বুথকে স্পর্শকাতর হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। উত্তর দিনাজপুরের মোট ২১২৬টি বুথের মধ্যে স্পর্শকাতর ১০৮টি। অর্থাৎ, এই জেলার ৫.০৮ শতাংশ বুথকে স্পর্শকাতর হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।
এছাড়া জলপাইগুড়ির মোট ১৬৬০টি বুথের মধ্যে স্পর্শকাতর ৭৪টি। অর্থাৎ, এই জেলার ৪.৪৬ শতাংশ বুথকে স্পর্শকাতর হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। ঝাড়গ্রামের মোট ১০৪৫টি বুথের মধ্যে স্পর্শকাতর ৪৫টি। অর্থাৎ, এই জেলার ৪.৩১ শতাংশ বুথকে স্পর্শকাতর হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। পশ্চিম বর্ধমানের মোট ৯৯৮টি বুথের মধ্যে স্পর্শকাতর ৪০টি। অর্থাৎ, এই জেলার ৪.০১ শতাংশ বুথকে স্পর্শকাতর হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। বাঁকুড়ার মোট ৩১০০টি বুথের মধ্যে স্পর্শকাতর ১১৬টি। অর্থাৎ, এই জেলার ৩.৭৪ শতাংশ বুথকে স্পর্শকাতর হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। কালিম্পঙের মোট ২৬৩টি বুথের মধ্যে স্পর্শকাতর ৮টি। অর্থাৎ, এই জেলার ৩.০৪ শতাংশ বুথকে স্পর্শকাতর হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। আর সর্বশেষে আলিপুরদুয়ারের মোট ১২১২টি বুথের মধ্যে স্পর্শকাতর ২৫টি। অর্থাৎ, এই জেলার ২.০৬ শতাংশ বুথকে স্পর্শকাতর হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।