লোকসভা নির্বাচন এখন দুয়ারে। আর তাই ঝাঁপিয়ে পড়েছে জাতীয় নির্বাচন কমিশন। ইতিমধ্যেই লোকসভা নির্বাচনের নির্ঘণ্ট প্রকাশ করার সময় একগুচ্ছ গাইডলাইন দিয়েছেন মুখ্য নির্বাচন কমিশনার রাজীব কুমার। তারপর থেকে নানা নির্দেশ মেনে কাজ চলছে সারা দেশে। কারণ এখন গোটা দেশে আদর্শ আচরণবিধি কার্যকর হয়েছে। কেন্দ্রীয় বাহিনীর তথ্য থেকে শুরু করে লোকসভা নির্বাচনে কালো টাকা ছড়ানো হচ্ছে কিনা সেদিকে সজাগ দৃষ্টি রেখেছে নির্বাচন কমিশন। এবার কালো টাকার ব্যবহার যাতে লোকসভা নির্বাচনে না হয় তার জন্য সবরকম সম্ভাব্য পদক্ষেপ তৈরি রাখছে নির্বাচন কমিশন।
এদিকে টাকা দিয়ে যাতে ভোট কেনা না যায় তার জন্য এই বিষয়টি নিয়ে নজরদারি করতে ইতিমধ্যেই ইডি, আয়কর, শুল্ক দফতর–সহ মোট ২২টি কেন্দ্রীয় এজেন্সিকে কাজে লাগাচ্ছে তারা। কারণ বারবারই অভিযোগ ওঠে নির্বাচনে কালো টাকা ব্যবহার হয়েছে। নির্বাচন কমিশন তা ঠেকাতে পারেনি। তাই বিরোধীরা পর্যদুস্ত হয়েছে নির্বাচনে। এছাড়া বাহুবল, অর্থবল নির্বাচনে ব্যবহার হওয়ার অভিযোগ বহুদিনের। তাই এবার বিশেষ পদক্ষেপ করতে চলেছে নির্বাচন কমিশন। তবে তাতে কতটা কালো টাকা ঠেকানো যাবে সেটা দেখার বিষয়।
আরও পড়ুন: সিপিএম এবার প্রযুক্তি নির্ভর হয়েছে, লোকসভা নির্বাচনের প্রচারে এবার নামাচ্ছে এআই–কে
অন্যদিকে এবার এই লোকসভা নির্বাচনের আবহে টাকা পাচার ঠেকাতে ব্যাঙ্কগুলির উপর বিশেষ নজরদারি চালানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে নির্বাচন কমিশন। আর তার জন্য তৈরি হয়েছে একটি বিশেষ অ্যাপ। এই অ্যাপের মাধ্যমে দেশের কোন ব্যাঙ্ক থেকে ১ লক্ষ টাকার বেশি তোলা হচ্ছে সেটা সঙ্গে সঙ্গে চলে আসবে ওই অ্যাপে। সেই তথ্য চলে এলেই নেওয়া হবে খোঁজ। যদি দেখা যায় অভিযোগ গুরুতর তাহলে কড়া পদক্ষেপ করা হবে। কোন ব্যক্তি কোন ব্যাঙ্ক থেকে টাকা তুললেন সেসবের বিস্তারিত তথ্য এই অ্যাপে চলে আসবে বলে সূত্রের খবর। আবার যেসব গাড়ি এটিএম মেশিনে টাকা ভরার জন্য বা অন্যত্র নিয়ে যাওয়ার জন্য ব্যবহার হয় সেগুলিতেও থাকবে একটি বিশেষ কিউআর কোড।
আর এই কিউআর কোড স্ক্যান করলেই গাড়ির বিস্তারিত তথ্য উঠে আসবে। এই অ্যাপ একটি বিশেষ নাম রাখা হয়েছে। তা হল— ইলেকশন সিজার ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম (ইএসএমএস)। এবার কালো টাকার যথেচ্ছ ব্যবহার ঠেকাতে চাইছে নির্বাচন কমিশন। এই অ্যাপের মাধ্যমেই ১ লক্ষের বেশি লেনদেন দেখা গেলে সেটা নথিভুক্ত থাকবে। আর টাকা নিয়ে যাওয়ার গাড়িগুলিতেও থাকবে অভিনব নজরদারি। ব্যাঙ্ক বা এজেন্সি অনুমোদিত টাকার গাড়িগুলিকে নাকা চেকিংয়ের বাইরেই রাখা হতো। এবার প্রত্যেক ব্যাঙ্কের জন্য আলাদা কিউআর কোড চালু করেছে নির্বাচন কমিশন। সেই ব্যাঙ্ক অনুমোদিত টাকার গাড়িগুলিতে থাকবে ওই কিউআর কোড। কিউআর কোডের সঙ্গে টাকার পরিমাণ না মিললে সংশ্লিষ্ট টাকাকে বেআইনি বলে ধরে নেওয়া হবে।