বহরমপুর লোকসভা কেন্দ্র এখন নজরকাড়া। কারণ এখানে কংগ্রেসের প্রার্থী দুঁদে রাজনীতিবিদ অধীররঞ্জন চৌধুরী। উল্টোদিকে তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী করেছে ইউসুফ পাঠানকে। যিনি বিশ্বকাপজয়ী ক্রিকেটার। ফলে তাঁর ফলোয়ার কম নয়। এখানে এখন জোরদার নির্বাচনী প্রচার শুরু হয়েছে। তাই এখানে বড় প্রশ্ন, অধীর–ইউসুফের মধ্যে জিতবে কে? এই প্রশ্নের উত্তর মিলবে ৪ জুন। তবে তাৎপর্যপূর্ণ বিষয় হল, লোকসভা নির্বাচন দুয়ারে যখন কড়া নাড়ছে তখন কংগ্রেসের কোনও দেওয়াল লিখন চোখে পড়ছে না। আসলে নির্বাচনের নানা খরচ সামলে দেওয়াল লিখনের কাজ হয়নি। তাই ‘দাদা’ অধীরকে ভালবেসে নিজেদের সামর্থ্য অনুযায়ী অর্থ তুলে দিলেন গ্রামের গৃহবধূরা। আর তাতেই আবেগে ভাসলেন ‘দাদা’ অধীর চৌধুরী।
এবারের লোকসভা নির্বাচন কঠিন। কারণ প্রতিপক্ষ কঠিন। বিজেপি এখানে ফ্যাক্টর নয়। লড়াই হবে অধীর–ইউসুফের মধ্যে। ইউসুফ পাঠানের সভায় মারাত্মক ভিড় হচ্ছে। মানুষ বাড়ি থেকে বেরিয়ে এসে দেখা করছেন। তার মধ্যেই নানা মানুষ তাঁর সঙ্গে এসে দেখা করছেন। ওখানে বাড়ি ভাড়া নিয়ে আছেন পাঠান। দেওয়াল লিখন থেকে সভা–সমাবেশ, রোড–শো করে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন ইউসুফ। সেখানে এই ঘটনা অধীরকে নিঃসন্দেহে অক্সিজেন দিচ্ছে। সুতরাং হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হবে বহরমপুরে সেটা বলার অপেক্ষা রাখে না।
আরও পড়ুন: বুদ্ধদেব–দিলীপ পাশাপাশি বসে করলেন বৈঠক, গুঞ্জন শুরু যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে
এই বহরমপুর লোকসভা কেন্দ্রে ‘রবিনহুড’ হিসেবেই পরিচিত অধীর চৌধুরী। তাই তিনি আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে বলতে পেরেছেন, তৃণমূল কংগ্রেস জিতলে তিনি রাজনীতি ছেড়ে দেবেন। কিন্তু উল্টোদিকে পাঠান মাঠ ছাড়তে নারাজ। মাটি কামড়ে পড়ে আছেন ইউসুফ। সঙ্গে রয়েছে তৃণমূল কংগ্রেসের মজবুত সংগঠন। তাই এখনই বলা সহজ নয় কে জিতবে। বরং ৪ তারিখ পর্যন্ত অপেক্ষা করতেই হবে। সাধারণ মানুষের কাজ করে জনপ্রিয় হয়েছিলেন অধীর। বহরমপুর হয়ে ওঠে অধীর গড়। একুশের বিধানসভা ভোটে কংগ্রেসের ভরাডুবি হয়েছিল। এটাই তৃণমূলের কাজ সদর্থক দিক। তবে অধীরের প্রতি ভালবাসা কমেনি সেটা প্রমাণ হল নীলমণি মণ্ডলদের উদ্যোগে। বহরমপুরের কান্দি থানার রণগ্রাম এলাকার এই মহিলাদের নিজেদের সংসার চলে টানাটানি করে। সেখানে দিনমজুর পরিবারের গৃহবধূরা ছাগল পালন করেন। এই অবস্থাতেও ১১ জন মহিলা নিজেদের সামর্থ্য অনুযায়ী অর্থ তুলে দিলেন অধীরের হাতে।
রবিবার দুপুরে অধীর চৌধুরীর হাতে নগদ ১১ হাজার টাকা তুলে দেন তাঁরা। নীলমণি মণ্ডল বলেন, ‘আমাদের মনে হয়েছিল দাদাকে সাহায্য় করা উচিত। তাই আমরা মা–বোনেরা ঠিক করি কিছু টাকা জোগাড় করে দাদার হাতে তুলে দেব। আমরা দাদার সঙ্গে দেখা করে এই টাকা দিতে পারায় খুব খুশি। উনি আমাদের জন্য অনেক করেছেন। সেখানে গ্রামেই কংগ্রেসের দেওয়াল লিখন হয়নি।’ আর আবেগঘন অধীর বলেন, ‘এঁরাই ভাল কাজ করার শক্তি জুগিয়ে থাকেন। চুরির টাকায় আমাদের দল চলে না। মহিলাদের এই উদ্যোগ সেটারই প্রমাণ।’