চা সুন্দরী প্রকল্প। উত্তরবঙ্গ সফরে এলেই বাংলার মুখ্য়মন্ত্রী বারবারই বলেন এই চা সুন্দরী প্রকল্পের কথা। কিন্তু সেই চা সুন্দরী প্রকল্পের জেরে কি আদৌ খুশি চা শ্রমিকরা?
সারি সারি ঘর।ওপরে নীল সাদা রঙের প্রলেপ। ভেতরে দুটো ছোট ছোট ঘর। একটা রান্নাঘর । সামনে এক চিলতে বারান্দা। বহু শ্রমিকের হাতে এই প্রকল্প তুলে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু বাস্তবে দেখা যাচ্ছে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই এই চা সুন্দরী প্রকল্পের আওতায় থাকা ঘরগুলিতে যেতে চাননি শ্রমিকরা। কিন্তু কেন এই ঘরে যেতে চাইছেন না শ্রমিকরা?
শ্রমিকদের একাংশের দাবি, এই চা সুন্দরী প্রকল্পের আওতায় যে ঘর দেওয়া হয়েছে তার আয়তন অত্য়ন্ত ছোট। সেখানে পরিবার নিয়ে থাকা কি সম্ভব?
চা সুন্দরী প্রকল্পের আওতায় থাকা বহু ঘরে যেতে চাননি শ্রমিকরা। কার্যত ফাঁকা পড়ে রয়েছে একের পর এক ঘর। শ্রমিক নেতাদের একাংশের দাবি, পুরো ফ্লপ খেয়েছে এই চা সুন্দরী প্রকল্প।
কিন্তু কেন এই চা সুন্দরী প্রকল্প ফলপ্রসূ হল না? চা শ্রমিকদের একাংশের দাবি, চা শ্রমিকদের কোয়ার্টারগুলি জীর্ণ হয়ে গিয়েছে। এটা নিয়ে সকলেই একমত। কিন্তু চা সুন্দরী প্রকল্পের নাম করে যে ঘরগুলি দেওয়া হয়েছে সেখানে যেতেও মন চাইছে না। তাছাড়া লটারি করে এই ঘর দেওয়া হয়েছে। সেকারণে বর্তমানে তারা যেখানে থাকেন সেই ঘরের পাশে যে প্রতিবেশীরা বর্তমানে থাকেন সেই প্রতিবেশীরা কিন্তু চা সুন্দরী প্রকল্পে ঠিক পাশের ঘরটাতেই কিন্তু সেই প্রতিবেশীরা নেই। সেকারণে চা শ্রমিকদের অনেকেই ঘর নিয়েছেন। কিন্তু এখনও তাঁরা সেই পুরনো চা কোয়ার্টারেই থেকে গিয়েছে। চা সুন্দরী প্রকল্পের আওতায় থাকা ঘরে যেতে চাননি তাঁরা।
ঢেকলাপাড়া চা বাগানে সব মিলিয়ে ৩২৭টি ঘর তৈরি করা হয়েছে। কিন্তু সেখানে বর্তমানে মাত্র ৭০টি ঘরে লোকজন রয়েছেন। বাকি চা সুন্দরী প্রকল্পের আওতায় থাকা ঘরে যেতে চাননি শ্রমিকরা। ফাঁকা অবস্থায় পড়ে রয়েছে ঘরগুলি।
তবে স্থানীয় সূত্রে খবর, চা সুন্দরী প্রকল্পের আওতায় থাকা ঘরগুলিতে শ্রমিকরা যে যেতে চাইছেন না এটা আঁচ করেছে সরকারও। সেকারণেই ৫ ডেসিমেলের তত্ত্ব। চা শ্রমিকদের দেওয়া হচ্ছে নির্দিষ্ট পরিমাণ জমি। সেই সঙ্গেই ঘর তৈরির টাকা। আর তাতেই মন মজেছে বহু শ্রমিকের। এমনকী সেই প্রকল্পের প্রথম কিস্তির টাকা পেয়ে অনেকে আবার ঘর মেরামতির কাজও শুরু করে দিয়েছেন। পশ্চিমবঙ্গ ক্ষেত মজদুর সমিতির একাধিক নেতৃত্বের দাবি, পুরো প্রকল্পটাই সুপার ফ্লপ হয়েছে।