গতকালই কলকাতা হাই কোর্টের রায়তে যোগ্য-অযোগ্য মিলিয়ে প্রায় ২৬ হাজার জনের চাকরি বাতিল হয়েছে। এই আবহে প্রাক্তন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় তোপ দেগেছিলেন তৃণমূল কংগ্রেসের সরকারকে। তিনি মুখ্যমন্ত্রী পদ থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পদত্যাগ চেয়ে বাংলায় রাষ্ট্রপতি শাসনের দাবিও করেছেন। এই আবহে এবার অভিজিতকে পালটা তোপ দাগলেন তাঁর বিরুদ্ধে ভোটে দাঁড়ানো তৃণমূলের দেবাংশু ভট্টাচার্য। এই নিয়ে দেবাংশু বলেন, 'মানুষের চাকরি যাচ্ছে। কত ছেলে মেয়েরা অসহায় হয়ে পড়েছে। কেউ কোনও ভুল সিদ্ধান্ত না নিয়ে ফেলেন, আমরা যখন সেই চিন্তায় মগ্ন, তখন তিনি আনন্দে ফুর্তি করছেন। যখন কিছু লোকের সংসার ভেসে যাচ্ছে, তখন তিনি বর্গভীমা মন্দিরে মায়ের কাছে পুজো দিয়ে বলছেন - মা গো কী ভালো কাজ করেছো।' (আরও পড়ুন: 'দল বদলে অনেক মূল্য চুকিয়েছি...', BJP-তে যোগদান নিয়ে বললেন বক্সার বিজেন্দ্র সিং)
আরও পড়ুন: ফের 'সম্পদ পুনর্বণ্টন' নিয়ে তোপ মোদীর, তবে শব্দচয়নে নজর দিয়ে বাদ 'মুসলিম'
এর আগে সোমবার স্কুল সার্ভিস কমিশনের দুর্নীতি মামলায় কলকাতা হাই কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চের রায়ের পরে অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় বলেছিলেন, 'আমি অত্যন্ত আনন্দিত। তবে আজ আনন্দ প্রকাশের দিন নয়। কারণ এই জোচ্চরদের অধীনে আমরা আর থাকতে চাই না। জোচ্চর, তোমাদের ফাঁসিতে চড়ানো উচিত। আবার উচ্চারণ করছি, জোচ্চর, তোমাদের ফাঁসিতে চড়ানো উচিত। ২০১৬ সাল থেকে অপেক্ষা করছেন। আট বছর হয়ে গিয়েছে। তাঁরা যাতে দ্রুত চাকরি পান, সেজন্য প্রার্থনা করব। মন্দিরে পুজো দেব।' এরপর মমতাকে আক্রমণ শানিয়ে অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় বলেছিলেন, 'এই মুখ্যমন্ত্রীর তো ক্ষমতায় থাকার কোনও কারণই নেই। কোনও অধিকার নেই। আমার ক্ষমতা থাকলে আমি তাদেরকে কান ধরে টেনে নামিয়ে দিতাম।'
আরও পড়ুন: সামরিক বাজেটে চিন থেকে বহু হস্ত পিছিয়ে ভারত, পাকিস্তান কত নম্বরে জানেন?
প্রসঙ্গত, বিচারপতি দেবাংশু বসাক ও বিচারপতি মহম্মদ সবির রশিদির ডিভিশন বেঞ্চ সোমবার এসএসসি মামলায় রায়দান করে বলে, ২০১৬ সালে গ্রুপ সি, গ্রুপ ডি, নবম-দ্বাদশে নিয়োগ পাওয়া এসএসসি চাকরিপ্রাপকদের সবার চাকরি বাতিল হবে। পর্যবেক্ষণে উচ্চ আদালত বলে, মেয়াদ উত্তীর্ণ প্যানেলে যারা চাকরি পেয়েছেন তাদের চাকরি বৈধ হতে পারে না। অন্যদিকে চাকরিহারাদের ৪ সপ্তাহের মধ্যে সব বেতন ফেরত দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাই কোর্ট। প্রাপ্ত বেতনের ওপর ১২ শতাংশ হারে সুদ দিতে হবে চাকরিহারাদের। এর জন্যে চাকরিহারাদের ৪ সপ্তাহ সময় দিয়েছে হাই কোর্ট। এই টাকা জেলাশাসকের কাছে জমা করতে হবে তাঁদের। পরে জেলাশাসক পরবর্তী ২ সপ্তাহের মধ্যে ওই টাকা হাই কোর্টে জমা দেবেন।
অপরদিকে এসএসসি-কে নতুন করে নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরুরও নির্দেশ দিয়েছে উচ্চ আদালত। ২৩ লক্ষ পরীক্ষার্থীর ওমএমআর শিট পুনর্মূল্যায়নের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। টেন্ডার ডেকে নতুন করে নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করতে বলল আদালত। এর পাশাপাশি এসএসসির সার্ভারে দ্রুত ওএমআর শিট আপলোড করতে বলেছে হাই কোর্ট। এদিকে হাই কোর্ট জানিয়ে দেয়, এসএসসি নিয়োগ দুর্নীতি মামলার তদন্ত জারি রাখবে সিবিআই। নির্দেশে বলা হয়েছে, 'যাকে প্রয়োজন, তাকেই হেফাজতে নিতে পারবে সিবিআই'।