বিধানসভা থেকে ইস্তফা দিয়ে বেরিয়ে আসছেন। হাতে কারও একটা ছবি। দূর থেকে মনে হচ্ছিল, সেটি সম্ভবত স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। কাছে আসতে বিষয়টি আরও স্পষ্ট হল। সে বিষয়ে প্রশ্ন করতে রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, মুখ্যমন্ত্রী তাঁর কাছে মায়ের মতো। তাই মমতার ছবি মাথার পিছনে থাকত। এখনও তাঁর কাছে মমতা মমতার ছবি থাকবে।
ঠিক আটদিন আগে মন্ত্রিত্ব-ত্যাগের পর রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়ের সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলেন রাজীব। রাজভবন থেকে বেরিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েছিলেন। তবে আজ (শুক্রবার) বিধানসভায় ইস্তফাপত্র জমা দিয়ে বেরিয়ে তাঁর চোখ বেয়ে জল নামল না। শুধু কিছুটা আবেগতাড়িত হয়ে পড়েন। গত ১০ বছরে তাঁকে সুযোগ দেওয়ার জন্য বিধানসভার স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়, মুখ্যমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানান।
কিন্তু হাতে মমতার ছবি কেন? জবাবে রাজীব বলেন, ‘দেখুন, আগেরদিনও আমি বলেছি, আজকেও আমি বলছি, মাননীয় নেত্রী আমার কাছে একজন মাদার ফিগার। উনি আমায় সুযোগ করে দিয়েছেন। তাঁর কাছে আমি চিরকৃতজ্ঞ। তাঁর ছবি আমার মাথার পিছনে থাকে। তাঁর ছবি আমার সঙ্গে করে নিয়ে বেরিয়েছি। তাঁর ছবি আমার সঙ্গেই থাকবে।’
মমতার ছবি কাছে রাখলেও আগামিকাল (শনিবার) রাজীব তৃণমূল ত্যাগ করতে পারেন বলেন সূত্রের খবর। তারপর রবিবার ডুমুরজলায় কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সভায় বিজেপিতে যোগদান করতে পারেন। যদিও শুক্রবার সে বিষয়ে খোলসা করেননি রাজীব। তিনি বলেন, ‘এখনও পর্যন্ত আমি দলের সদস্য। আমি বিধায়ক পদ ত্যাগ করলাম। তবে এটাও ঠিক। একটা মানসিক প্রস্তুতির দরকার ছিল। সেই মানসিক প্রস্তুতিটা আমি (দীর্ঘ সময় ধরে নিয়েছি)। মন্ত্রিসভার ত্যাগ করার পরেও আমি কোনও সিদ্ধান্ত নিইনি। আমি সাতদিন অপেক্ষা করেছিলাম। আমি একটা মানসিক প্রস্তুতি নিয়েছি। আমি মনে করি, সংসদীয় গণতন্ত্রে মানুষের জন্য কাজ করতে গেলে একটি কোনও রাজনৈতিক দলের ছত্রচ্ছায়ায় থাকতে হবে। কারণ সংসদীয় গণতন্ত্রে নির্দল হয়ে মানুষের বৃহত্তর স্বার্থে কাজ করা যায় না। সেই জায়গা থেকে আমরা সিদ্ধান্ত আগামিকাল আপনাদের জানাব।’