দোরগোড়ায় বিধানসভা নির্বাচন। এমন সময় ভোটে দাঁড়াতে নারাজ বর্ধমান দক্ষিণের তৃণমূল বিধায়ক রবিরঞ্জন চট্টোপাধ্যায়। এবার ভোটে তিনি প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন না বলে জানিয়ে চিঠি দিয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। বুধবার টুইট এবং ফেসবুক পোস্ট করে সে কথা জানালেন অশীতিপর এই বিধায়ক।
২০১১ সালে সিপিএম নেতা তথা রাজ্যের প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী নিরুপম সেনকে ৩০ হাজার ভোটে হারিয়েছিলেন রবিরঞ্জন চট্টোপাধ্যায়। সে সময় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মন্ত্রিসভায় জায়গা করে নিয়েছিলেন তিনি। ২০১৬ সালেও রেকর্ড মার্জিনে বর্ধমান দক্ষিণ থেকে জেতেন তৃণমূলের এই বর্ষীয়ান নেতা। কিন্তু সেবার তাঁকে আর মন্ত্রী করা হয়নি। তাঁর ঘনিষ্ঠ মহলের দাবি, তা থেকেই দলের প্রতি ক্ষোভ বাড়তে থাকে তাঁর। তৃণমূলের সঙ্গে বাড়তে থাকে দূরত্ব।
গত ৩০ জানুয়ারি মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি দেন বর্ধমান দক্ষিণের বিধায়ক। তাতে তিনি জানান, আসন্ন নির্বাচনে তিনি প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন না। শারীরিক অসুস্থতার জেরেই এমন সিদ্ধান্ত বলে চিঠিতে জানিয়েছেন তিনি। যদিও ওয়াকিবহল মহলের মতে, দলের প্রতি বাড়তে থাকা ক্ষোভ থেকেই এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি।
যদিও রবিরঞ্জনবাবু এ ব্যাপারে এদিন জানান, ‘প্রথমত, আমার বয়স হয়েছে। ৮০ বছর হল আমার। আর তা ছাড়া শারীরিক অবস্থাও আমার ভাল নয়। নির্বাচন লড়তে গেলে ঘোরাঘুরি করতে হয়, পরিশ্রম করতে হয়। মানুষের কাছে যেতে হবে। সেই শক্তি অতটা নেই। দ্বিতীয়ত, রাজনীতিতে থাকতে আমার ইচ্ছে করে না। এই লেখা–পড়া, বই নিয়েই ভাল আছি।’
এদিকে, সম্প্রতি বর্ধমান দক্ষিণে প্রকাশ্যে আসতে থাকে তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব। যা সামাল দিতে আসরে নামতে হয় তৃণমূলের ভোট কুশলী প্রশান্ত কিশোরকে। দলের অন্দরের খবর, এবার বর্ধমান দক্ষিণ থেকে খোকন দাসকে প্রার্থী করছে তৃণমূল। প্রার্থী ঘোষণার আগেই কি ভোটের লড়াই থেকে নিজেকে সরিয়ে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিলেন রবিরঞ্জন চট্টোপাধ্যায়? সেই প্রশ্নই উঠছে।