কৃষ্ণগঞ্জ বিধানসভা নির্বাচনে ১,১৬,৩৯৭ ভোট পেয়ে জয়ী বিজেপির আশিসকুমার বিশ্বাস। অন্যদিকে তৃণমূল প্রার্থী ডঃ তাপস মণ্ডল ৯৫,৪০৬টি ভোট পেয়েছেন।
এই তফসিলি জাতি কেন্দ্রে এবারের তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থী হলেন ডঃ তাপস মণ্ডল। এই আসনে বিজেপির তরফে দাঁড়াচ্ছেন আশিসকুমার বিশ্বাস। অন্যদিকে, বাম-কংগ্রেস-ইন্ডিয়ান সেকুলার ফ্রন্টের (আইএসএফ) তরফে এই কেন্দ্রে দাঁড়াচ্ছেন আইএসএফ প্রার্থী অনুপ মণ্ডল। তবে আইএসএফ প্রার্থীকে খুঁজে পাওয়া দাবি করে সিপিআইএমের প্রতীকে মনোনয়ন জমা দিয়েছেন ঝুনু বৈদ্য। সেদিনই মনোনয়ন জমা দিয়েছিলেন আইএসএফ প্রার্থী।
কৃষ্ণগঞ্জ বিধানসভা কেন্দ্র হল নদিয়া জেলার একটি বিধানসভা কেন্দ্র। এই কেন্দ্রটি তফসিলি জাতির জন্য সংরক্ষিত। ভারতের সীমানা পুনর্নির্ধারণ কমিশনের নির্দেশিকা অনুসারে কৃষ্ণগঞ্জ (তফসিলি জাতি) বিধানসভা কেন্দ্রটি কৃষ্ণগঞ্জ সমষ্টি উন্নয়ন ব্লক ও বাদকুল্লা-১, বাদকুল্লা-২, বেতনা গোবিন্দপুর, দক্ষিণপাড়া-১, দক্ষিণপাড়া-২, গাজনা, ময়ূরহাট-১ এবং ময়ূরহাট-২ গ্রাম পঞ্চায়েতগুলি হাঁসখালি সমষ্টি উন্নয়ন ব্লকের অন্তর্গত। কৃষ্ণগঞ্জ বিধানসভা (তফসিলি জাতি) কেন্দ্রটি রানাঘাট লোকসভা কেন্দ্রের (তফসিলি জাতি) অন্তর্গত।
নদিয়া জেলায় মোট বিধানসভা আসন রয়েছে ১৭ টি৷ ২০১৬ সালের নির্বাচনের ১৩ টি যায় তৃণমূলের দখলে৷ বাকি চারটিতে জেতেন বাম-কংগ্রেস জোট প্রার্থীরা৷ চারটির মধ্যে সিপিআইএম জয় পায় একটি আসনে। আর তিনটি আসনে জয়লাভ করেন কংগ্রেসের টিকিটে ভোটে দাঁড়ানো প্রতিনিধিরা৷ কিন্তু ভোট মিটতেই এই তিনজন হাত ছেড়ে জোড়া ফুল ধরেন৷ ফলে সমীকরণ বদলে হয় ১৬ : ১৷ পরবর্তীতে করিমপুরের বিধায়ক মহুয়া মৈত্র প্রার্থী হন লোকসভায়৷ কৃষ্ণনগর থেকে তৃণমূলের টিকিটে জিতে সাংসদ হন তিনি৷ অন্যদিকে, দুষ্কৃতীর গুলিতে খুন হন কৃষ্ণগঞ্জের বিধায়ক সত্যজিৎ বিশ্বাস৷ ২০১৯ সালে লোকসভা নির্বাচনের সঙ্গে উপনির্বাচন হয় নদিয়ার এই দু’টি বিধানসভা কেন্দ্রেও৷ করিমপুর তৃণমূলের দখলে থাকলেও কৃষ্ণগঞ্জ তাদের থেকে ছিনিয়ে নেয় বিজেপি৷ নতুন বিধায়ক নির্বাচিত হন আশিস বিশ্বাস৷
২০১৪ সালে ২১ অক্টোবর কৃষ্ণগঞ্জ আসনে তৃণমূল কংগ্রেসের বিধায়ক সুশীল বিশ্বাসের মৃত্যুর কারণে উপনির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিল। ২০১১ সালের নির্বাচনে তৃণমূল কংগ্রেসের সুশীল বিশ্বাস তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী সিপিআইএমের বরুণ বিশ্বাসকে পরাজিত করেছিলেন। ২০০৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে সিপিআইএমের বিনয়কৃষ্ণ বিশ্বাস কৃষ্ণগঞ্জ (তফসিলি জাতি) কেন্দ্র থেকে জয়ী হয়েছিলেন। তাঁর নিকটবর্তী প্রতিদ্বন্দ্বী তৃণমূল কংগ্রেসের সুশীল বিশ্বাসকে পরাজিত করেছিলেন। ২০০১, ১৯৯৬ ও ১৯৯১ সালে সিপিআইএমের সুশীল বিশ্বাস বিধানচন্দ্র পোদ্দারকে পরাজিত করেছিলেন। ১৯৮৭ সালে সিপিআইএমের নয়নচন্দ্র সরকার কংগ্রেসের মৃণালকান্তি বিশ্বাসকে এই আসনে পরাজিত করেছিলেন। ১৯৮২ সালে সিপিআইএমের জ্ঞানেন্দ্রনাথ বিশ্বাস কংগ্রেসের আনন্দমোহন বিশ্বাসকে পরাজিত করেছিলেন। পাশাপাশি ১৯৭৭ সালে জনতা পার্টির অমূল্যকুমার বিশ্বাসকেও পরাজিত করেছিলেন জ্ঞানেন্দ্রনাথ। তার আগে এই কেন্দ্রটি ছিল না।