ফের রাজভবন–নবান্ন সংঘাত। নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর জন্মজয়ন্তীতেও সংঘাত অব্যাহত রইল। সাময়িক বিরতির পর শনিবার রাজ্যের বিরুদ্ধে ফের সুর চড়ালেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়। রাজ্যের নির্বাচনে হিংসা হয় বলে আবারও সরব হন রাজ্যপাল। আর তাতেই ফের সংঘাতের আবহ তৈরি হয়ে গেল। রাজভবনে নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর একটি পোর্ট্রেটের উদ্বোধন করেন রাজ্যপাল। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘আমি খুব আতঙ্কিত রাজ্যে যেভাবে গণতন্ত্র নষ্ট হয়েছে। আমরা যদি এইভাবেই চুপ করে থাকি, তাহলে আমাদের চুপ করেই থাকতে হবে।’
আসলে তৃণমূল কংগ্রেস–বিজেপি সংঘর্ষ রোজ লেগেই আছে। বিধানসভা নির্বাচন যত এগিয়ে আসছে ততই রাজ্যে হিংসার ঘটনা বাড়ছে। কখনও বিজেপি রাতের অন্ধকারে তৃণমূল কংগ্রেসের উপ-প্রধানের উপর হামলা করছে, আবার কখনও বিজেপি নেতার উপর আক্রমণ নেমে আসছে। এই নিয়ে অবশ্য সরব হন রাজ্যপাল। তিনি বলেন, ‘রাজ্যে নির্বাচনের হিংসা হয়। রিগিং হয়। মানুষের মনে এখনও ২০১৮ সালের পঞ্চায়েত ভোটের হিংসার ছবি তাজা। ২০২১ সালে নিরপেক্ষ ও শান্তিপূর্ণ ভোট করতে সবরকম ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ কোনও কারণ ছাড়াই হঠাৎ রাজ্যপাল এমন মন্তব্য করায় সংঘাতের আবহ তৈরি হয়।
বহিরাগত বিতর্ক নিয়ে সরব হন রাজ্যপাল। তিনি বলেন, ‘যাঁরা বহিরাগত নিয়ে কথা বলেন তাঁরা জানেন না নেতাজিকে? আমার বিশ্বাস তাঁরা এগুলির পরিবর্তন করবেন। নেতাজির জন্মজয়ন্তীতে একদিকে যখন কেন্দ্রীয় সরকার পরাক্রম দিবস হিসেবে পালন করছে তখন অন্যদিকে রাজ্য সরকার দেশনায়ক দিবস হিসেবে পালন করছে। সবকিছুতেই অসম্মতি কিংবা ভারতের সংবিধানে যে গণতান্ত্রিক সমন্বয়ের কথা বলা হয়েছে, তার বিপরীতে যাওয়া ঠিক নয়। অনেক ভেবেচিন্তেই পরাক্রম দিবসের নাম দেওয়া হয়েছে।’
আগেওরাজ্যপাল জগদীপ ধনখড় সরকারি আধিকারিকদের রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে কাজে লাগানো হচ্ছে বলে সরব হয়েছিলেন। এদিনও ফের একই ইস্যুতে তিনি বলেন, ‘সরকারি কর্মীদের রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে যেন কাজে না লাগায় রাজ্য সরকার। রাজনীতি করলে আগুন নিয়ে খেলা হবে।’ রাজভবনের অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেও আমন্ত্রণ জানান রাজ্যপাল। যদিও এদিনের অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন না মুখ্যমন্ত্রী। বিএসএফ নিয়ে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের মন্তব্যেরও কড়া জবাব দিয়ে রাজ্যপাল বলেন, ‘কারও উপর দোষ চাপিয়ে দেওয়ার প্রবৃত্তি ছাড়া উচিত।’