দর্শক থেকে সমালোচক সকলের প্রশংসা কুড়োচ্ছে ‘ওএমজি ২’। কৃষ্ণের পর শিবরূপেও হিট অক্ষয় কুমার। ইতিমধ্যেই বক্স অফিসে ১০০ কোটির গণ্ডি ছুঁয়ে ফেলেছে এই ছবি। পঙ্কজ ত্রিপঠি, ইয়ামি গৌতম, অক্ষয় কুমার অভিনীত এই ছবিকে শাংসাপত্র দিতে খানিক দেরি করে সেন্সার বোর্ড। অনেক বিচার-বিবেচনার পর OMG 2-কে এ সার্টিফিকেট দেয় সিবিএফসি। যা ঘিরে কম বিতর্ক হয়নি।
এই ছবির কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে এক মধ্যবিত্ত বাবা-ছেলের সম্পর্ক। সেক্স এডুকেশন কি বাচ্চাদের জন্য জরুরি? যৌনতা সম্পর্কে আলোচনা করা কি খারাপ? এই সময়োপযোগী প্রশ্নই এই ছবিতে তুলে ধরেছেন পরিচালক। এই ছবিতে পঙ্কজ ত্রিপাঠির ছেলে বিবেকের চরিত্রে অভিনয় করেছেন ১৬ বছর বয়সী আরুষ ভর্মা (Aarush Varma)। ছবির অংশ হওয়া সত্ত্বেও এখনও পর্যন্ত OMG 2-দেখতে পাননি আরুশ। কারণ এই ছবি হলে দেখতে হলে কমপক্ষে আপনার বয়স হতে হবে ১৮! অগত্যা পিটিশন দাখিল করলেন আরুষ।
সংবাদ সংস্থা এএনআইকে আরুষ বলেন, ‘নিজের প্রথম ছবি থিয়েটারে না-দেখতে পাওয়ার আফসোস আমার থাকবে। আমার রাগ হচ্ছে, খুব খারাপ লাগছে। আমার মনে হয় সেন্সর বোর্ড যদি কোনও সিদ্ধান্ত নেয়, সেটা আমাদের জন্য লাভজনক নয়। এই ছবিটা আমি আমার বয়সীদের সঙ্গে দেখতে চাই, এই ছবির টার্গেট অডিয়েন্স তো তারাই। এই ছবিটা দেখে অনেক কিছু শেখবার রয়েছে। এই ছবিটা একটাই লক্ষ্য নিয়ে তৈরি করা হয়েছে, যাতে সকলে এটা উপলব্ধি করতে পারে যে সেক্স এডুকেশন নিয়ে লুকোছাপা করবার কিছু নেই। এটা নিয়ে খোলাখুলিভাবে কথা বলা যেতে পারে’।
যৌন শিক্ষা নিয়ে ভুল তথ্য হানিকর হতে পারে, বয়ঃসন্ধিকালের তরুণ-তরুণীদের জন্য এই ব্যাপারে সঠিক জ্ঞান জরুরি, মনে করেন পঙ্কজের পর্দার ছেলে। তিনি বলেন, ‘আমি যে চরিত্রটা ফুটিয়ে তুলেছি, বিবেক সেই ভুল তথ্য পেয়েছিল। তাই আমি চাই বিশ্বজুড়ে সেক্স এডুকেশন নিয়ে সকলে জানুক, যাতে কাউকে না সমস্যায় পড়তে হয়। পিরিয়ড কী, প্রেগন্যান্সি কী, এই বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা জরুরি ও খুব স্বাভাবিক। এগুলো কেন গোপনে পড়ানো হবে। অক্ষয় কুমারের কথা ধার করে বলতে চাই- উত্তর তখনই মিলবে যখন প্রশ্ন থাকবে'।
আরুষ মনে করেন এই ছবিতে এমন কিছু দেখানো হয়নি তা ছোটরা দেখতে পারবে না। ‘এই ছবিটা তো বানানোই হয়েছে ছোটদের কথা মাথায় রেখে। ছোটদের শেখবার সুযোগ না দিয়ে আমরা অ্যাডাল্টদের এই ছবিটা দেখাচ্ছি। তাহলে আর ছবিটার উদ্দেশ্য পূরণ কীভাবে হবে?’ প্রশ্ন এই কিশোর অভিনেতার। তিনি আরও বলেন, ‘ছবির ট্রেলার মুক্তি পাওয়ার আগেই অনেকে এই ছবির বিরোধিতা করছিল, বলছিল তারা এই ছবি বয়কট করবেন কারণ এটি সনাতন ধর্মের বিরুদ্ধে। কিন্তু ভগবানের বিরুদ্ধে একটা কথাও বলা হয়নি এই ছবিতে। মন্দির বা সনাতন ধর্মোবিরোধীও কিছু নেই এতে। লোকজন ছবি না দেখেই এমন মত পোষণ করলে মুশকিল, এটা বন্ধ হওয়া দরকার’।
ছেলের সঙ্গে সহমত আরুষের মা শ্রুতি বর্মাও। তাঁর কথায়, এই ছবিটা সকল কিশোর-কিশোরীর দেখাটা আবশ্যক। তিনি বলেন, ‘এই ব্যাপারে সরকারের হস্তক্ষেপ প্রয়োজন। এটা রিভিউ করবার দরকার রয়েছে, প্রয়োজনে কোনও বাইরের লোকজনদের নিয়ে কমিটিও গঠন করা যেতে পারে কারণ এই ছবিতে এমন কিছু নেই যার জন্য ১৮ বছরের নীচের ছেলেমেয়েরা এই ছবি দেখতে পারবে না’।