জানুয়ারি মাসেই ঘোষণা করা হয়েছিল পদ্ম-প্রাপকদের নাম। এদিন রাষ্ট্রপতি ভবনে পদ্ম-সম্মান তুলে দেওয়া হল বিশিষ্টদের হাতে। এদিন পদ্মবিভূষণ সম্মানে ভূষিত হলেন দক্ষিণী সুপারস্টার চিরঞ্জীবী। রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর হাত থেকে এই পুরস্কার গ্রহণ করেন নায়ক। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন তাঁর স্ত্রী সুরেখা ও ছেলে রাম চরণ ও তাঁর স্ত্রী উপাসনা কোনিদেলা। মিঠুন চক্রবর্তী, ঊষা উত্থুপের মতো বাঙালি তারকারাও এই বছর পদ্ম-সম্মান পেয়েছেন। গত ২২শে এপ্রিল তাঁদের সম্মানিত করেছিলেন রাষ্ট্রপতি।
পদ্মবিভূষণ পেলেন চিরঞ্জীবী
কালো বন্ধগলা স্যুটে এদিন পুরস্কার হাতে নিলেন চিরঞ্জীবী। মঞ্চে উঠবার আগে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন অভিনেতা। চিরঞ্জীবীকে পুরস্কার গ্রহণ করতে দেখে উচ্ছ্বাসে ফেটে পড়েন তাঁর পুত্র, আরআরআর তারকা রামচরণ।
এর আগে, যখন তাকে পুরষ্কার দেওয়া হয়েছিল, চিরঞ্জীবী বলেছিলেন, ‘আমি সত্যিই অভিভূত, বিনীত এবং কৃতজ্ঞ। এটা শুধু দর্শকদের, আমার বন্ধুদের, আমার রক্তের ভাই এবং বোনদের নিঃশর্ত ভালবাসা। এই জীবন ও মুহূর্তের জন্য আমি তোমার কাছে ঋণী। আমি সবসময় আমার সাধ্যমতো কৃতজ্ঞতা প্রকাশের চেষ্টা করেছি। কিন্তু কোনো কিছুই কখনোই যথেষ্ট হতে পারে না।’
চিরঞ্জীবীর পাশাপাশি এদিন দেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ নাগরিক সম্মান তুলে দেওয়া হয় বৈজন্তীমালার হাতে। হলুদ রঙা ভারী সিল্কের শাড়িতে পাওয়া গেল বৈজয়ন্তীমালাকে। আগে পদ্মশ্রী সম্মান পেয়েছেন ‘সঙ্গম’ নায়িকা। এবার নবতিপর নায়িকার ঝুলিতে এল পদ্মবিভূষণ।
বৈজয়ন্তীমালার বর্ণময় জীবন
ভারতীয় চলচ্চিত্রের অন্যতম আইকন বৈজন্তীমালা বালি। তিনি যত বড়মাপের অভিনেত্রী, তার চেয়েও বড়মাপের নৃত্যশিল্পী। অভিনয় জগৎ থেকে ছুটি নিলেও নাচকে এই বয়সেও আঁকড়ে ধরে রয়েছেন। ভারতনাট্যমে তাঁর অগাধ পারদর্শিতা।
১৯৪৯ সালে, মাত্র ১৬ বছর বয়সে তামিল ছবিতে আত্মপ্রকাশ করেন বৈজয়ন্তীমালা। 'নাগিন' সিনেমার হাত ধরে বলিউড চিনেছিল তাঁকে। হিন্দি, তামিল, তেলুগু, তিন ভাষার ছবিতেই দাপটের সঙ্গে অভিনয় করেছেন। নাচের প্রতি বৈজন্তীমালার টান সেই ছোট থেকে। আজও তা অব্যাহত।
চিরঞ্জীবীর ফিল্মোগ্রাফি
চিরঞ্জীবী তাঁর দীর্ঘ কেরিয়ারে ১৬০টিরও বেশি ছবিতে অভিনয় করেছেন। ২০০৬ সালে তিনি পদ্মভূষণ পুরস্কারে ভূষিত হন, যা তাঁর দ্বিতীয় পদ্ম পুরস্কার। শিগগিরই 'বিশ্বম্ভর' ছবিতে দেখা যাবে এই অভিনেতাকে। রাজনীতিতে প্রবেশের জন্য, তিনি ২০০৭ সালে শঙ্কর দাদা জিন্দাবাদ চলচ্চিত্রের পরে অভিনয় থেকে বিরতি নিয়েছিলেন এবং ২০০৮ সালে প্রজা রাজ্যম পার্টি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। এরপর ২০১৭ সালে কইদি নম্বর ১৫০ দিয়ে সিনেমার জগতে ফেরেন।
জনহিতকর কাজে ব্রতী
অভিনয়ের জন্য যেমন সুপরিচিত, তেমনি চিরঞ্জীবী পরোপকারী হিসাবেও উল্লেখযোগ্য। তিনি ১৯৯৮ সালে চিরঞ্জীবী চ্যারিটেবল ট্রাস্ট প্রতিষ্ঠা করেন, যার অধীনে চক্ষু এবং ব্লাড ব্যাঙ্ক রয়েছে। করোনা অতিমারীর চরম সময়ে তিনি রোগীদের জন্য অক্সিজেন ব্যাঙ্ক এবং অ্যাম্বুলেন্স পরিষেবা স্থাপন করেছিলেন। চলচ্চিত্রের শুটিং বন্ধ হয়ে যাওয়ায় কর্মহারাদের পাশে দাঁড়ানোর পাশাপাশি চলচ্চিত্র কর্মীদের জন্য ভ্যাকসিন অভিযান শুরু করেন তিনি।