প্রকাশ্যে মাথা এবং ঘাড় ঢেকে রাখতে হবে মহিলাদের। হিজাব ছাড়া বাইরে আসা যাবে না। এমনই কড়া আইন ইরানের। যা লঙ্ঘন করায় চরম শাস্তির মুখে পড়লেন সেদেশের নামী অভিনেত্রী। জনসমক্ষে বাধ্যতামূলক হিজাব পরার বিধান অমান্য করায় অভিনেত্রী আফসানেহ বায়েগান (Afsaneh Bayegan)-কে দু-বছরের কারাদণ্ডে দণ্ডিত করেছে সে দেশের এক আদালত। এই খবর নিশ্চিত করেছে ইরানের আধা-সরকারি সংবাদ সংস্থা ফারস নিউজ।
সংবাদ সংস্থা জানিয়েছেন, শুধু দু-বছরের হাজতবাস নয়, ৫ বছরের জন্য সাসপেন্ড করা হয়েছে ৬১ বছর বয়সী অভিনেত্রীকে। সম্প্রতি এক ছবির প্রদর্শনীতে হিজাবের বদলে মাথায় টুপি পরে হাজির হয়েছিলেন আফসানেহ বায়েগান। সেই ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করেন তিনি। ব্যাস, সঙ্গে সঙ্গে শুরু হইচই। হিজাব আইন মেনে না চলায় শাস্তির মুখে পড়লেন আফসানেহ বায়েগান।
ইরানের হিজাব আইন অনুযায়ী, জনসমক্ষে প্রত্যেক নারীর মাথা ও ঘাড় ঢেকে রাখা বাধ্যতামূলক। ১৯৭৯ সালের ইসলামি বিপ্লবের পর থেকেই এই নিয়ম লাগু রয়েছে সেদেশে। আফসানাকে মানসিক রোগী আখ্যা দিয়েছে আদালত। প্রতি সপ্তাহে একবার মানসিক হাসপাতালে গিয়ে চিকিৎসা করাতে হবে তাঁকে। এবং চিকিৎসার পর সেই নথি আদালতে জমা দিতে হবে। ‘পরিবারবিরোধী মনোভাব’ রয়েছে অভিনেত্রীর জানায় আদালত। আগামী দু-বছর কোনওপ্রকার সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করতে পারেন না অভিনেত্রী, জানিয়েছে আদালত।
গত বছর হিজাব বিরোধী আন্দোলন চরম আকার ধারণ করেছিল ইরানে মাসা আমিনির মৃত্যুর পর। হিজাবনীতি ভঙ্গ করার অভিযোগে ইরানের পুলিশ মাসাকে আটক, পুলিশ হেফাজতেই মৃত্যু হয় ২২ বছরের এই কুর্দি তরুণীর। তারপর থেকেই রাস্তায় নেমে আন্দোলন শুরু করে ইরানি মহিলারা। তখনও প্রকাশ্যে আন্দোলনকারীদের সমর্থন জানিয়েছিলেন আফসানেহ বায়েগান।
টেলিভিশন সিরিজ ‘সারবেদারান’-অভিনয়ের জেরে খ্যাতি শীর্ষে পৌঁছেছিলেন আফসানেহ বায়েগান। চতুর্দশ শতাব্দীতে মঙ্গল আক্রমণের বিরুদ্ধে ইরানিদের প্রতিরোধ বাস্তব কাহিনি উঠে এসেছিল এই সিরিজে।