নয়ের দশকের শেষে বাংলা গান নিয়ে ছিল আলাদাই উন্মাদনা। চায়ের ঠেক হোক বা কলেজ ক্যান্টিন, অথবা পাড়ার পিকনিক, বাংলা ব্যান্ডের গান ফিরত মুখেমুখে। সেই সময় যে ব্যান্ডগুলি শ্রোতামনে জায়গা করে নিয়েছিল, তার মধ্যে অন্যতম হল ব্যান্ড পরশপাথর। অনিন্দ্য বোসের কণ্ঠে কিছু অসাধারণ গান উপহার পেয়েছিলেন সকলে। তবে হঠাৎই পরশপাথর ছেড়ে দেন অনিন্দ্য। সম্প্রতি এক পডকাস্ট শো-তে এই নিয়ে মুখ খুললেন গায়ক।
‘আমি, অয়ন, পিকলু- এই তিনজনে মিলে তৈরি করলাম পরশপাথর। চলতে লাগল আমাদের নানা এক্সপেরিমেন্ট। বাংলা গানের সঙ্গে ড্রামস বা ইলেকট্রিক গিটার বাজবে, সেটা তৈরির জন্য ছিল ব্যাপক পরিশ্রম। টুকটাক শো করছি। এমন নয় খুব কেউ গান শুনছে। যাদবপুরে একটা শো করলাম। সেখানে উপল গিটার বাজিয়েছিল। ওর বাড়িতেই গিয়েছিলাম রুহার্সল করতে। সেই শো যাকে বলে সুপার ফ্লপ। তবে ভাগ্য বদলেছিল, এক সর্বভারতীয় সংবাদপত্র আমাদের নিয়ে কভার স্টোরি করার পর। এটার পর আমাদের একটা পরিচিতি তৈরি হয়।’, জানালেন অনিন্দ্য।
আরও পড়ুন: ৯ বছরে ৯ বার কেমো নিয়ে হারিয়েছে ক্যানসারকে! খুদে ভক্তের সঙ্গে দেখা করলেন সলমন
এরপরই অনিন্দ্য জানালেন তাঁর পরশপাথর ছাড়ার কারণ। ‘পরশপাথরের প্রথম অ্যালবামের প্রায় নব্বই শতাংশ গান আমারই গাওয়া। এদিকে মেনশন করা হচ্ছে না কার গান, কে লিখেছেন, কে সুর করেছেন। সবই পরশপাথরের নামে যাচ্ছে। কিন্তু একটা ক্রেডিটস তো থাকবে। সবাই মিলে তো আর একটা গান তৈরি করতে পারে না। সব মিলিয়ে একটা বিরক্তির জায়গায় পৌঁছে গিয়েছিল ব্যাপারটা। প্রচুর ইগো ক্ল্যাশ। আর এই বিরক্তির কারণে মনের মধ্যেও একটা অস্বস্তি চলছিল।
আরও পড়ুন: ‘বাবার সঙ্গে মারপিট করেছিলাম সেদিন বাড়ি ফিরে’, কষ্ট বুকে চেপে বললেন নন্দিনী
‘একদিন এই নিয়েই কথা কাটাকাটি। আমি ছেড়ে বেরিয়ে এলাম। মনে আছে সেদিন দুপুর থেকে বৃষ্টি। পুরো কলকাতা অন্ধকার। আমি একটা দোকানের শেডের সামনে দাঁড়িয়ে চোখের জল ফেলছি। কেউ আমার চোখের জল দেখতে পাচ্ছে না। কিন্তু আমি কাঁদছি। অসম্ভব কষ্ট পয়েছিলাম। আমার পরিস্থিতি সেদিন কত খারাপ হয়েছিল তা শুধু রাই জানে। আমার অবস্থা উন্মাদের মতো হয়ে গিয়েছিল। বাড়ি ফিরে পাগলের মতো ক্যাসেট ভেঙেছিলাম। সেটা ১৯৯৮ সাল। সেখান থেকেই ‘শহর’কে প্রতিষ্ঠা করা। সাগরমেলা, আবদার, ফেল্টুস-এর মতো গান তৈরি হয়ে গিয়েছে তখন। এখনও লড়ে যাচ্ছি।’