সুশান্ত 'প্রবলেমিটক' ছিল সেই কারণেই অভিনেতার সঙ্গে ভবিষ্যতে কাজ না করবার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন অনুরাগ কশ্যপ। সুশান্তের মৃত্যুর মাত্র তিন সপ্তাহ আগে অভিনেতার ম্যানেজারকে সে কথা জানান অনুরাগ। দিন কয়েক আগে নিজেই সেই হোয়াটসঅ্যাপ মেসেজের স্ক্রিনশট পোস্ট করে অনুরাগ বলেন সুশান্ত তাঁকে অনেকবার এড়িয়ে গিয়েছিল, যার জন্য নাকি অনুরাগের একটা ছবির কাজ শুরুই হয়নি।
সম্প্রতি সাংবাদিক ফায়ে ডিসুজাকে দেওয়া সাক্ষাত্কারে অনুরাগ কশ্যপ সেই অতীত নিয়ে ফের মুখ খুললেন। যেখানে সুশান্তকে নিয়ে বেশ কিছু চাঞ্চল্যকর মন্তব্য করেছেন গ্যাংস অফ ওয়াসিপুর পরিচালক। অনুরাগ জানান, সুশান্তকে নিজের ‘হাসি তো ফাসি’ প্রোজেক্টের জন্য চূড়ান্ত করেছেন তিনি। যদিও এই ছবি ছেড়ে যশ রাজ ফিল্মসের সঙ্গে তিন ছবির চুক্তি স্বাক্ষর করেছিলেন সুশান্ত। শুধু তাই নয়, পরিণীতি চোপড়া নাকি এই ছবিতে সুশান্তের সঙ্গে কাজ করতে রাজি হননি।
অনুরাগ বলেন, ‘ওর হাসি তো ফাসি করবার কথা ছিল, এবং আমরা লিডিং লেডির খোঁজ করছিলাম। এরপর পরিণীতি চোপড়াকে আমরা এই ছবির অফার দিই। ও জানায়- ‘আমি কোনও টেলিভিশন অভিনেতার সঙ্গে কাজ করতে চাই না’। আমরা ওকে বলেছিলাম সুশান্ত কাই পো ছে করছে, পিকে করছে। তাই যেই সময় হাসি তো ফাসি সামনে আসবে সেই সময় সুশান্ত আর শুধু টেলিভিশন অভিনেতা থাকবে না। সেই সময় পরিণীতি শুদ্ধ দেশি রোম্যান্স বলে যশরাজের একটা ছবি করছিল। ওই নিশ্চয় যশরাজকে এই বিষয়টা বলেছিল। এরপর ওয়াইআরএফ থেকে সুশান্তকে ডাকল এবং হয়ত বলেছিল তুমি শুদ্ধ দেশি রোম্যান্স কর-ওই ছবিটা করবার দরকার নেই। এরপর সুশান্তে আমাদের কাছ থেকে গায়েব হয়ে গেল'।
অনুরাগ যোগ করেন- ‘এটা সবাই বুঝবে যশ রাজের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হওয়াটা অবশ্যই অনেক বড় সুযোগ’। শুদ্ধ দেশি রোম্যান্সে পরিণীতি জুটি বেঁধেছিলেন সুশান্তের সঙ্গে। অন্যদিকে হাসি তো ফাসিতে একসঙ্গে দেখা গিয়েছিল পরিণীতি এবং সিদ্ধার্থ মালহোত্রাকে। ২০১৪ সালে মুক্তি পায় বিনিল ম্যাথু পরিচালিত এই ছবি। যার যৌথ প্রযোজক ছিলেন করণ জোহর, অনুরাগ কশ্যপ, বিক্রম আদিত্য মোটওয়ানি এবং বিকাশ বহেল।
অনুরাগের দাবি- ২০১৬ সালে আরও একটি ছবির অফার সুশান্তকে দিয়েছিলেন তিনি। ‘কয়েক বছর পর, ২০১৬ সালে এমএস ধোনি:দ্য আনটোল্ড স্টোরি মুক্তির আগে মুকেশ সুশান্তকে গিয়ে বলেছিল অনুরাগ কশ্যপ একটা ছবির চিত্রনাট্য লিখেছে এবং একজন অভিনেতার খোঁজ করছে যে উত্তর প্রদেশ বা সংলগ্ন এলাকার কেউ হবে। এরপর ধোনি রিলিজ করল,সফল হল এবং আমাকে কোনওদিন পাল্টা ফোন করল না সুশান্ত। কিন্তু আমি রাগ করিনি। আমি নিজের মতো করে মুক্কাবাজ ছবি বানিয়েছি’, এনডিটিভিকে দেওয়া এক সাক্ষাত্কারে জুলাই মাসে একথা জানান অনুরাগ কশ্যপ।
অনুরাগ ফায়ে ডিসুজাকে দেওয়া সাক্ষাত্কারে বলেন- 'অনেক মানুষই জানতে পারেনি ও কী অবস্থার মধ্যে দিয়ে যাচ্ছিল। এখন জানছি যে ও ডিপ্রেশনের শিকার ছিল। তবে ইন্ডাস্ট্রির ওকে নিয়ে যে সমস্যাটা ছিল তা হল ও কথা দিয়ে গায়েব হয়ে যেত। এটা একদমই নয় যে সুশান্ত কারুর সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করত। যেই ওর সঙ্গে দেখা করবে একবাক্যে মেনে নেবে যে সুশান্ত দারুণ ছেলে, অমায়িক ব্যবহার, খুব সংবেদনশীল, ভীষণ ভালো। কিন্তু ওই যে বললাম আচমকাই গায়েব হয়ে যাবে'।
সুশান্তের মৃত্যুর তিন সপ্তাহ আগে প্রয়াত অভিনেতার ম্যানেজারের পাঠানো মেসেজ সম্পর্কে অনুরাগ যোগ করেন, 'সুশান্ত ওর ম্যানেজারকে বলেছিল আমার নাম নিলে অনুরাগ কোনও জবাব দেবে না'। অনুরাগ জানান,'হয়ত আমাকে দেওয়া কথা না রাখবার জন্য, গায়েব হয়ে যাওয়ার জন্য সুশান্তও অনুতপ্ত ছিল'।