আধ্যাত্মিকতার প্রতি বরাবরই গভীর টান সুরকার এআর রহমানের। জন্মের সময় নাম ছিল দিলীপ কুমার। পরে যদিও তিনি ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন। নাম বদলে রাখেন আল্লারাখা রহমান। অল্প বয়সে বাবাকে হারানোর পর একজন সুফি সাধককে অনুসরণ করা শুরু করেন। সম্প্রতি রহমানের মুসলিম ধর্ম গ্রহণ করার পর জীবনে আসা বদল নিয়ে মুখ খুললেন তাঁর সঙ্গে বাদ্যযন্ত্র বাজানো শিল্পী শিবমণি।
শিবমণিকে এক সাক্ষাৎকারে বলতে শোনা যায় রহমান ও তাঁর মায়ের সঙ্গে সুফি সাধকের মাজারে যেতেন তিনিও। তাঁরা মাজারে সেবা করতেন আর রহমান পড়াশোনা। সেখানো তিনি নিতেন কোরানের শিক্ষা। আর সেখানেই নিজের চোখে রহমানের মধ্যে বদল আসতে দেখেন তিনি। শিবমণিকে বলতে শোনা যায়, ‘দিলীপ থেকে আল্লারাখা হতে দেখেছিষ নিজের চোখে দেখলাম বদলে যেতে মানুষ হিসেবও।’
শিবমণি জানান, কাজের প্রতি মনযোগ বাড়ে রহমানের। অনেক বেশি শান্ত হন। এই বাদ্যযন্ত্রকার জানান, ‘স্টুডিওতেও চুপ থাকতেন। না কোনও হাসিঠাট্টা হত না কোনও কথা। সবসময় গুরুগম্ভীর। যা ওকে সাহায্য করে একটা নিয়মনিষ্ঠার মধ্যে চলতে।’
‘স্টুডিওতে কাজ শুরুর আগে আমরা আজান শুনতাম।… আজান ঠিক নয় বরং আধ্যাত্মিক গুরুর কণ্ঠস্বর। প্রথমদিকে তিনিই বাজাতেন। বিকেলে ধুপধুনোর গন্ধ আসত। ঈশ্বরের সঙ্গে আধ্যাত্মিক যোগাযোগ স্থাপনের পরই তিনি কাজ শুরু করতেন।’, আরও জানান শিবমণি।
নব্বইয়ের দশকের শুরুতেই রহমান এবং তার পুরো পরিবার ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন। জানা যায়, রহমানের কেরিয়ারের মোড় ঘোরানো ছবি রোজা মুক্তির দিনকয়েক আগেই নিজেকে মুসলিম করেন। বহুবার চর্চায় উঠে এসেছে রহমানের এই ধর্ম পরিবর্তন। তবে সুরকারের সাফ কথা, ধর্ম পরিবর্তন তাঁকে দিয়েছিল মানসিক শান্তি। জিঙ্গেল যেগুলো একসময় বাতিল হয়ে যায়, সেগুলিই গ্রহণযোগ্যতা পেতে তাঁর প্রার্থণার পর। রহমান জানান, এরপরই তিনি তাঁর মাকে ধর্ম পরিবর্তনের জন্য বলেন।
ইসলাম নিয়ে রহমান আরও জানান, ‘আধ্যাত্মিক গুরুরা, সুফি সাধকরা আমাকে, আমার মাকে যা শিখিয়েছেন সেটা অনন্য। আসলে প্রতিটা বিশ্বাসেই কিছু অনন্যতা রয়েছে। আমি যা বেছে নিয়েছি তার প্রতি আমার আজীবন আস্থা থাকবে।’ তবে রহমান মনে করেন, সব ধর্মেই প্রার্থনার বিশেষ দিক রয়েছে। অস্কার-জয়ী সুরকারের কথায়, ‘আমার যেমন হয় আমি নামাজ আদা করব তাই আমার সঙ্গে খারাপ কিছু হতেই পারে না। অন্য ধর্মের মানুষরাও তাই করে থাকেন। এটাই মানসিক শান্তি দেয়। আমার মনে হয় এটা থাকাই সবচেয়ে বেশি দরকার।’