দিন কয়েক আগেই #Metoo ঝড় আছড়ে পড়েছে টলিগঞ্জে। পরিচালক অরিন্দম শীলের বিরুদ্ধে অশালীন আচরণের অভিযোগ এনেছিলেন অভিনেত্রী রূপাঞ্জনা মিত্র। এবার রূপাঞ্জনার পাশে দাঁড়িয়ে অরিন্দম শীলের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক অভিযোগ আনলেন তাঁর স্ত্রী তনুরুচি শীল। সোমবার দীর্ঘ ফেসবুক পোস্টে পরিচালক এবং তাঁর ব্যক্তিগত জীবন সম্পর্কে নানান কথা তুলে ধরেছেন তনুরুচি।
তিনি জানান ‘রূপাঞ্জনার মত আমি ও পরিস্থিতির চাপে মুখ বন্ধ রাখতে বাধ্য হয়েছিলাম। যে অরিন্দম শীলকে আপনারা চেনেন একজন চিত্র পরিচালক ও বর্তমান শাসক দলের একজন অনুগত বুদ্ধিজীবী রূপে, দুর্ভাগ্য বশতঃ উনি এখনো আইনত আমার স্বামী’। তনুরুচি শীল জানিয়েছেন, অরিন্দম শীলের সঙ্গে তাঁর সামাজিক বিয়ে হয়, ১৯৯২ সালের ১৯শে নভেম্বর এবং ১৯৯৩ সালে সেই বিয়ে আইনি স্বীকৃতি পায়। কিন্তু তাঁদের সেই দাম্পত্য সম্পর্কে ফাটল দেখা যায় শুক্লা দাসের আগমনে। এবং কার্যত এককাপড়ে ঘরছাড়া হতে হয়েছিল তনুরুচিকে, বলে জানিয়েছেন অরিন্দম শীলের স্ত্রী।
২০১৯ সালে কোর্টের দেওলা অর্ডার হাতে থাকা সত্ত্বেও অরিন্দম শীলের একটি বাড়ির অর্ধেক মালিকানা আজও তাঁকে হস্তান্তর করা হয়নি বলেও মন্তব্য করেন তিনি। এখনও নাকি আলিপুর জাজেস কোর্টে বিবাহ বিচ্ছেদের মালা চলছে দুজনের। শুক্লা দাস, অরিন্দম শীলের স্ত্রী নন, লিভ ইন পার্টনার-এমনটাই জানিয়েছেন তনুরুচি। এবং অরিন্দম শীলের মেয়ে সোনিকাও নাকি শুক্লা ও তাঁর প্রয়াত স্বামী রজত রায়ের কন্যা। সব শেষে তনুরুচি জানান রূপাঞ্জনা মিত্রই তাঁকে সাহস জুগিয়েছেন সর্বসমক্ষে এই সত্যি কথাগুলো প্রকাশ করতে। তাঁর কথায় ‘তোমাকে অনেক ধন্যবাদ রূপাঞ্জনা , তুমি আমাকে পথ দেখালে বলেই আজ এই কথাগুলো আমি সর্বসমক্ষে বলতে পারলাম’।
দিন কয়েক আগে রূপাঞ্জনা মিত্র এক সাক্ষাত্কারে জানিয়েছিলেন, ভূমিকন্যার চিত্রনাট্য শোনার আছিলায় ফাঁকা অফিস ডেকে পাঠিয়েছিলেন অরিন্দম। কথোপথনের ফাঁকেই নাকি পরিচালক মাথায়-পিঠে হাত বুলিয়ে দিতে শুরু করেন। যদিও অভিনেত্রী বিষয়টি এড়িয়ে গেলে পরিচালক সরে যান। রূপাঞ্জনা জানিয়েছে আমি পরিষ্কার বলি, ‘অরিন্দমদা, প্লিজ টেল মি অ্যাবাউট দ্য স্ক্রিপ্ট’। এর কিছু সময়ের মধ্যেই নাকি ঘটনাস্থলে আচমকাই পৌঁছে গিয়েছিলেন শুক্লা দাস, জানিয়েছেন রূপাঞ্জনা।
যদিও, রূপাঞ্জনার এই অভিযোগ যদিও উড়িয়ে দিয়েছেন অরিন্দম শীল। পরিচালক জানান, 'রূপাঞ্জনার এই অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা। রূপাঞ্জনার আমার দীর্ঘদিনের বন্ধু, কেন এই সব কথা বলছে আমি জানি না। আমি কোনওদিন ফাঁকা অফিসে কাউকে ডাকি না, সেদিনও আমার অফিসের লোকজন ছিল। সব থেকে বড় কথা সেখানে আমার স্ত্রী(শুক্লা) ছিল। এইভাবে কারুর নামে একটা কিছু বলে দিলেই হল! তার পরের দিনও রূপাঞ্জনা আমাকে ধন্যবাদ জানিয়েছে টেক্সট করেছিল হোয়াটসঅ্যাপে। বলেছিল, ওয়ার্কশপ করে এই কাজে ঢুকতে চায়’। গোটা ঘটনায় হতবাক পরিচালক বলেই ফেললেন 'ওকে নিয়ে কথা বলার আর কোনও প্রবৃত্তি নেই আমার'।
তনুরুচির ফেসবুক পোস্টে নিজের প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন রূপাঞ্জনা মিত্র। লিখেছেন, 'আর কাউকে পাশে না পেলেও আমি তোমার পাশে থাকবো তনুরুচি দিদি.. তুমি যেভাবে আমাকে সাহায্য করতে ছুটে এসেছে, হয়ত ভগবান তোমাকে পাঠিয়েছে। পরস্পরের পাশে থাকবো কথা দিলাম'।
এতদিন কেন চুপ করেছিলেন তনুরুচি? সেই নিয়েও অনেকে প্রশ্ন তুলছেন। তবে তনুরুচির এই পোস্ট যে নিঃসন্দেহে অরিন্দম শীলের অস্বস্তি বাড়াবে তা স্পষ্ট।