প্রেম করে বিয়ে করেছিলেন মনোজিৎ মণ্ডল আর বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্য। এমনকী এই বিয়েতে মত ছিল বৈশাখীর পরিবারের। এক কাপড়ে তিনি ছেড়েছিলেন ঘর। পালিয়ে গিয়ে। তবে সে বিয়ে সুখের হয়নি। একাধিকবার বৈশাখী অভিযোগ তুলেছেন মনোজিৎ তাঁর গায়ে হাত তুলতেন। তাঁর উপর করতেন অকথ্য অত্যাচার। সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারেও ভাঙা দাম্পত্য নিয়ে অকপটে কথাও বলেছিলেন শোভন-বান্ধবী।
বৈশাখী জানিয়েছেন দাম্পত্য়ে সুখ পাননি কখনও। উঠতে বসতে মার খেতেন তিনি মনোজিতের কাছ থেকে। তিনি ভয় পেতেন, মনোজিতের শরীরের ক্ষতি হতে পারে খুব বেশি রেগে গেলে। তাই একটা সময় চুপচাপ মার খাওয়াটাকেই বেছে নিয়েছিলেন। সেই সময় তাঁর অনেক সহকর্মী তাঁকে প্রতিবাদ করতে বললেও রাজি হননি। পরিস্থিতি এমন ছিল যে মনোজিতের সঙ্গে সন্তান নিতেও ভয় পেতেন ভবিষ্যতের কথা ভেবে।
কিন্তু অনেকেরই আশা ছিল, বিশেষ করে বৈশাখীর মায়ের, বাবা হয়ে মনোজিত হয়তো বদলে যাবে। এরপর জন্ম হয় মেহুলের। মেহুল বড় হয়েও মা-কে মার খেতে দেখে। এক রাতের বীভৎস অভিজ্ঞতা বৈশাখী ভাগ করে নিয়েছিলেন আজতক বাংলার কাছে। জানিয়েছিলেন, একদিন মনোজিৎ তাঁকে মাঝরাতে বাড়ি থেকে বের করে দেয়। তিনি রাতের অন্ধকারে ভয় পেতেন। অনেক কাকুতিমিনতি করেন মনোজিতের কাছে যাতে রাতটুকু তাঁকে থাকার অনুমতি দেওয়া হয়। সেই সময় তাঁর মুখে এক খাবলা থুতু ছুঁড়ে মেরেছিল মনোজিৎ। বলেছিল, ‘আমার পায়ের জুতো চাটতে হবে তোকে রাতে এখানে থাকতে হবে।’ বৈশাখী জানান তাঁকে সেটাই করতে হয়েছিল সেই রাতে। এরপর গোটা রাত ফ্ল্যাটের জুতোর স্ট্যান্ডের পাশে শুয়েছিলেন। সকালে নিজের বাড়ি ফিরে আসেন। কিন্তু মা-বাবাকে বলতে পারেননি কী হয়েছে তাঁর সঙ্গে মাঝ রাতে। বলতে পারেননি, যার হাত ধরে একসময় একবুক স্বপ্ন নিয়ে এক কাপড়ে বাড়ি ছেড়েছিলেন সে তাঁর সঙ্গে ঠিক কী কী ব্যবহার করেছে।
বৈশাখী জানান, এক কথা কেউ জানে না। জানত শুধু শোভন। আর তাঁর দুই বান্ধবী। তাঁরাই সেই কঠিন সময়ে শক্ত হাতে সামলে নিয়েছিলেন তাঁকে।
এরপরই প্রণয়ে বাধা পড়েন বৈশাখী আর শোভন। শোভনের ফ্ল্যাটেই এখন থাকেন বৈশাখী। গত বছর এপ্রিলে বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায় ও মনোজিৎ মণ্ডলের বিবাহ বিচ্ছেদও হয়ে গিয়েছে। তাঁদের সঙ্গে থাকেন বৈশাখী-কন্যা মেহুলও। অন্য দিকে, স্ত্রী রত্নার সঙ্গে ডিভোর্স ফাইল করে দিয়েছেন শোভন চট্টোপাধ্যায়ও। যদিও সেই মামলা আদালতে বিচারাধীনষ এখন সুখ-ভালোবাসায় ভরা শোভন-বৈশাখী-মেহুলের সংসার। তবুও অতীতের সেই ভয়াবহ স্মৃতি যেন মাঝেমাঝেই তাড়া করে আসে বৈশাখীকে।