২১ জুলাই মুক্তি পেয়েছে নীতেশ তিওয়ারি পরিচালিত ‘বাওয়াল’। দেখা যাচ্ছে প্রাইম ভিডিয়োতে। ছবিতে মুখ্য চরিত্রে রয়েছেন বরুণ ধাওয়ান ও জাহ্নবী কাপুর। তবে ছবি প্রকাশ্যে আসতেই শুরু হয়েছে বিতর্কের ঝড়। ট্রেলার দেখে প্রথমটায় অনেকেই মনে করেছিলেন যে পরিচালক দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের প্রেক্ষাপটে বুঝি প্রেমকাহিনি বুনেছেন। তবে সিনেমা দেখে বোঝা গেল মোটেই তা নয়।
বাওয়ালের একটি দৃশ্যে সম্পর্কের চড়াই-উতরাইয়ের তুলনা টানা হয়েছে নাৎসি কনসেনট্রেশন ক্যাম্পের সঙ্গে। যা অনেক নেটনাগরিকই মনে করেছেন ‘অমানবিক’। জাহ্নবীর মুখে ব্যবহার করা ডায়লগটি হল, ‘সব সম্পর্কের নিজের মতো করে অসউইজের মধ্য দিয়ে যায়, তারপরই সম্পর্কের আসল মানে বুঝতে পারে মানুষ।’ বলে রাখি, অসউইজ হল কনসেনট্রেশন ক্যাম্প, যেখানে জিউদের রেখে হিটলারের সৈনিকরা অমানবিক অত্যাচার চালাত। গ্যাস চেম্বার থেকে কত কিছুই না আছে ইতিহাসের সেই কালো অধ্যায়ে। নেট-নাগরিকদের প্রশ্ন, কীভাবে একটা সম্পর্ক নাৎসিদের ভয়ঙ্কর অত্যাচারের সমকক্ষ হতে পারে।
তবে এই বিতর্কে মুখ খুলেছেন বরুণ আর জাহ্নবী দুজনেই। শ্রীদেবী-কন্যা বলেন, ‘আমি একজনকে চিনি, তিনি আইভি লীগ ইউনিভার্সিটির একজন অধ্যাপক এবং তিনি একজন ইজরায়েলি। তার পূর্বপুরুষরা দুর্ভাগ্যবশত হলোকাস্টে প্রাণ হারিয়েছেন। তিনি ছবিটি দেখেছিলেন এবং এটি তাঁকে খুব অনুপ্রাণিত করেছে। তিনি সেই বার্তাটি বুঝতে পেরেছেন যা আমরা সিনেমার মাধ্যমে দেওয়ার চেষ্টা করেছি। আমাদের ছবির সংলাপ নিয়ে একবারও বিরক্তি প্রকাশ করেননি।’
অন্য দিকে, বরুণের বক্তব্য, ‘কিছু লোক এই বিষয়ে উত্তেজিত বা সংবেদনশীল হয়ে পড়েছেন। কিন্তু আমার আশ্চর্য লাগে সেই সংবেদনশীলতা কোথায় যায় যখন তাঁরা কোনও ইংরেজি ছবিতে এই ধরনের দৃশ্য় দেখেন। তাদের সেখানে সবকিছু করার অনুমতি দেওয়া হয়েছে, তাদের লাফানোর অনুমতি দেওয়া হয়েছে এবং তাদের একটি নির্দিষ্ট উপায়ে জিনিসগুলি দেখানোর অনুমতি দেওয়া হয়েছে, তখন সবই ঠিক লাগে। সম্প্রতি মুক্তি পাওয়া একটা দুর্দান্ত সিনেমার ছোট্ট দৃশ্য দেখেও মানুষ একইভাবে উত্তেজিত হয়েছে। এটি এমন একটা দৃশ্য যা আমাদের সংস্কৃতি, আমাদের দেশের জন্য গুরুতেবপূর্ণ। তখন মনে হয়নি ওরা আপনাদের নিয়ে আরও সংবেদনশীল হতে পারত? তখন আপনাদের সমালোচনা কোথায় যায়।’
বরুণ আপাতদৃষ্টিতে ক্রিস্টোফার নোলানের ওপেনহেইমারের বিতর্কিত ভগবদ গীতার দৃশ্যের উল্লেখ করেছেন। দৃশ্যটিতে জে রবার্ট ওপেনহাইমার চরিত্রটিকে বান্ধবীর সঙ্গে সেক্সের সময় গীতা পাঠ করতে দেখা যায়। কেন্দ্রীয় তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী অনুরাগ ঠাকুর ইতিমধ্যেই এই নিয়ে সিবিএফসি-র কড়া নিন্দা করেছেন দৃশ্য়টিকে বাদ না দেওয়ার জন্য।