৫৭-য় জীবনের দ্বিতীয় ইনিংস শুরু করেছেন আশিস বিদ্যার্থী। প্রথম স্ত্রী রাজোশির সঙ্গে ডিভোর্সের পর বছর ঘুরতে না ঘুরতেই ফের গাঁটছড়া বাঁধলেন জাতীয় পুরস্কার জয়ী এই অভিনেতা। জামাইষষ্ঠীর দিন সকালে কলকাতাতেই আইনি বিয়ে সারেন আশিস-রূপালি। আশিসের নতুন স্ত্রী পেশায় পোশাকশিল্পী, কলকাতাতেই রয়েছে তাঁর নামী ফ্যাশন হাউস সঙ্গে মডেলিংও করেন রূপালি।
আশিস-রূপালির বিয়ের ছবি তো সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল। কিন্তু তাঁদের রিসেপশনের আসর কেমন ছিল? চলুন ঢুঁ মারা যাক। ২৫শে মে শহরের এক নামী ক্লাবে বসেছিল জুটির বিয়ের রিসেপশনের আসর। সাদা ফুল ও হলুদ গাঁদায় সাজানো হয়েছিল ভেন্যু। তাজা ফুলের গন্ধে মাতোয়ারা চারিদিক। কাছের মানুষদের সঙ্গে নিয়েই নতুন জীবনের পথে পা বাড়ালেন জুটি।
বিয়ের মতোই রিসেপশনেও ছিমছাম অথচ এলিগেন্ট লুকে পাওয়া গেল রূপালিকে। শর্ট কুর্তা স্টাইলের ব্লাউজ সঙ্গে সাদা শাড়ি কুঁচি দিয়ে পরেছেন রূপালি। শাড়ি জুড়ে রয়েছে মিরর ওয়ার্ক আর সাদা সুতোর কাজ। আঁচলটা কোমরের কাছে আলগা করে প্লিট করা হয়েছে। গলায় জড়োয়া হার, কানে ভারী দুল আর মাংগটিকা। অসমের মেয়ে রূপালির লুকে এদিন খানিকটা রাজস্থানি ছোঁয়া পাওয়া গেল। অন্যদিকে বিয়ের মতো রিসেপশনেও কেরলের ট্রাডিশন্যাল মুন্ডু বা ধুতিতে দেখা গেল বরকে, সঙ্গে থাকল সাদার উপর শ্যাওলা রঙা প্রিন্টেট হাফ শার্ট। আর চোখে মর্ডান ফ্রেমের চশমায় আশিস বিদ্যার্থী।
রাজস্থানি লোকশিল্পী দীনে খানের সুরে মুগ্ধ বিয়ে বাড়িতে আগত সকলেই। রাজস্থানের গানের সঙ্গে মিলে গেল অসমের নাচ। বিহুর তালে পা মেলানেন মিঁয়া-বিবি। খাওয়া-দাওয়ার ছিল এলাহি বন্দোবস্ত। চিকেন বিরিয়ানি, মটন বিরিয়ানি থেকে পনির মশালা, মালাই কোফতা, ভেজ ডাল, স্টিমড রাইস, মিক্সড ভেজিটেবিলস, কলকাতা স্পেশ্যাল মাছের নানা রকম পদ, স্যালাড--কিছুই বাদ ছিল না।
আশিসের মতো এটা রূপালিরও দ্বিতীয় বিয়ে। জানা যায় তাঁর প্রথম স্বামীর মৃত্যু হয়েছে বেশ কয়েক বছর আগেই। এক কন্যা সন্তানও রয়েছে তাঁর। রূপালির সঙ্গে বিয়ে প্রসঙ্গে ফেসবুক লাইভে এসে আশিস জানান, খুশি থাকতেই এই বিয়ের সিদ্ধান্ত তাঁর। রাজোশি (পিলু)-র সঙ্গে ২২ বছরের দাম্পত্য শেষ হলেও বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক তাঁদের। পরস্পরের বিরুদ্ধে কোনও ক্ষোভ নেই।
অভিনেতা তাঁর লাইভে এসে বলেন, 'দিন শেষে আমরা সবাই কিন্তু খুশি থাকতে চাই। আর এই খুশির জন্য আজ থেকে ২২ বছর আগে আমরা একে অন্যের হাত ধরেছিলাম। বিয়ে করেছিলাম। আমাদের জীবনে আমাদের সন্তান অর্থ আসে। তারও আজ বয়স ২২। কিন্তু এত সুন্দর একটা সময় কাটানোর পর আমি আর পিলু ক্রমশ বুঝতে পারছিলাম যে আমরা আর ভালো নেই। বরং আমরা আমাদের ভবিষ্যতটা অনেকটাই আলাদা ভাবে দেখি। যদিও আমরা দুজনেই আপ্রাণ চেষ্টা করেছিলাম এই বিয়েটা টিকিয়ে রাখার জন্য। কিন্তু তারপর বুঝি এতে কেবল একে অন্যের উপর বোঝা হয়ে থাকব আমরা। তাই সরে আসার সিদ্ধান্ত নিই।'