মুখোপাধ্যায় বাড়ির দুই কন্যা তাঁরা, দুজনেই বলিউডের সফল অভিনেত্রী। কথা হচ্ছে, কাজল ও রানির। একসঙ্গে ব্লকবাস্টার ছবিও করেছেন তাঁরা। তবে সেইসময় দুই তুতো বোনের সম্পর্ক মোটেই মধুর ছিল না। কুছ কুছ হোত হ্যায়ের সেটে দুই বোনকে দেখে অবাক হয়েছিলেন করণ জোহর। প্রশ্ন জেগেছিল,'এটা কেমন পরিবার?'
কথি উইথ করণের সাম্প্রতিক এপিসোডে অতিথি হিসাবে হাজির হয়েছিলেন কাজল-রানি। এখন তাঁদের বরফ-শীতল সম্পর্কে উষ্ণতার প্রলেপ লেগেছে। কীভাবে সম্ভব হল এটা? খুল্লমখুল্লা জবাব করণের অঞ্জলি আর টিনার। করণ বলেন, ‘আমার মনে প্রশ্ন জাগত এটা কেমন পরিবার। এরা বোনে বোনে কথাই বলে না’। কাজল বলেন, ‘আসলে ব্যাপারটা তেমন নয়। ওটা অর্গানিক দূরত্ব ছিল। আর কাজের ক্ষেত্রে, আমরা কিন্তু দুজনেই ওই পরিবেশটা পছন্দ করতাম’।
রানি যোগ করেন,'আমি ওকে ছোট বয়স থেকে চিনেছি, আমার কাছে ও কাজল দিদি। ব্যাপারটা একটু অদ্ভূত। আসলে যখন তুমি আলাদাভাবে বড় হও, আমাদের তেমন দেখা-সাক্ষাৎ হত না। কাজল দিদি শহরে থাকত, আমরা জুহুতে থাকতাম। আমি আর তনিশা বেশি ঘনিষ্ঠ, কাজল দিদি সবসময়ই পরিবারের ছেলেদের সঙ্গে বেশি অন্তরঙ্গ ছিল। ব্যাপারটা জটিল'।
তাহলে কেমনভাবে সেই দূরত্ব ঘুচল?
একটা সময় কাজের চেয়ে ঐশ্বর্য রাইয়ের সঙ্গে বেশি ঘনিষ্ঠতা ছিল রানির। আদিত্য ঘরণীর কথায় তাঁদের বন্ধুত্ব গাঢ় হয়েছে তাঁদের বাবাদের মৃত্যুর পর। কাজল বলেন, ‘সেটা খুব অর্গানিকভাবেই হয়েছে।’ জীবন থেকে রানির শিক্ষা, ‘আসলে যখন আপনি নিজের কাছের মানুষদের হারিয়ে ফেলেন….আমি কাজলের বাবার খুব ঘনিষ্ঠ ছিলাম। যখন সময় কঠিন হয়, প্রিয়জনেরা ছেড়ে চলে যায়… শোকের সেই মুহূর্তে পরিবারই পাশে থাকে।’
কাজল ও রানির মধ্যে যে ঠান্ডা লড়াই ছিল, তা বলিউডে অনেকেরই জানা। প্রকাশ্যে মুখ না খুললেও ঠারেঠোরে দু’জনেই বুঝিয়ে দিতেন সেই দূরত্বের কথা। ‘কুছ কুছ হোতা হ্যায়’-এর সময় কাজল প্রতিষ্ঠিত অভিনেত্রী, সিনিয়র অভিনেত্রী তথা দিদি হিসাবে সে-ভাবে রানি পাশে পাননি কাজলে। স্বভাবের দিক নাক-উঁচু বলেই বলিউডে পরিচিত কাজল। যৌথ পারিবারিক কাঠামোয় রানিদের পরিবার খানিক কোণঠাসা ছিল আর্থিক দিক থেকেও। পরে রানি নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেন।
সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এখন অনেক পরিণত দুই বোন। কেরিয়ারে লম্বা পথ পেরিয়ে এসে স্বামী-সন্তান নিয়ে ভরপুর সংসার করছেন। চলতি বছর নর্থ বম্বে সার্বজননীনের পুজোতেও একসঙ্গে হাসিঠাট্টা করে সময় কাটাতে দেখা গিয়েছে দুজনকে। পাপারাৎজিদের ক্যামেরার সামনে পোজও দেন জমিয়ে।