'বাঙালি লড়ে, বাঙালি গড়ে, বাঙালি আজও দাদাগিরি করে….', এই ভাবনা নিয়েই শুরু হয়েছিল দাদাগিরির ১০ নম্বর সিজন। প্রায় শেষ লগ্নে পৌঁছেও বাঙালির সেই অদম্য জেদের গল্প জি বাংলার পর্দায় তুলে ধরতে মরিয়া দাদাগিরি-র টিম। এবার এই গেম শো-এর মঞ্চে হাজির হচ্ছেন দক্ষিণ-পূর্ব রেলের একমাত্র মহিলা লোকো পাইলট দীপান্বিতা দাস। আরও পড়ুন-দিল্লিতে ‘দাদাগিরি’র শ্যুটিং! সৌরভের জন্য বিশেষ বন্দোবস্ত, কবে শেষ হচ্ছে এই শো?
৪৬ বছর বয়সী দীপান্বিতার পশ্চিম মেদিনীপুরের খড়গপুরের বাসিন্দা। দুই সন্তানের জননী দীপান্বিতা প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষকে পৌঁছে দেন গন্তব্যে। চলতি সপ্তাহ শেষে মেদিনীপুর-হাওড়া লোকালের এই লোকো পাইলট সৌরভের মুখোমুখি হবেন। সেই প্রোমো সামনে আনল চ্যানেল কর্তৃপক্ষ। দাদাকে দেখেই তিনি বলে ওঠেন,'আপনি সবার অনুপ্রেরণা'। দীপান্বিতার কর্মকাণ্ডে মুগ্ধ দাদা পালটা বলেন, ‘আপনিও সবার অনুপ্রেরণা ম্যাডাম। কারণ আপনি দক্ষিণ-পূর্ব রেলের একমাত্র মহিলা প্যাসেঞ্জার ট্রেনের চালক’।
২০০৩ সাল থেকে রেলে কর্মরতা দীপান্বিতা। সেই সময় আদ্রা ডিভিশনে কাজে যোগ দিয়েছিলেন, তিন বছর পর খড়গপুর ডিভিশনে আসেন। ২০১৪ সাল থেকে মালগাড়ির লোকো পাইলট হিসেবে কাজ শুরু করেছিলেন। ২০২৩ সালে প্রথম যাত্রীবাহী লোকাল ট্রেন চালানো শুরু করেন। ১০ বছর নিজের দক্ষতা প্রমাণের পরেই যাত্রীবাহী ট্রেন চালানোর যোগ্যতা অর্জন করেছেন দীপান্বিতা। তাঁর লড়াই সত্যি কুর্নিশযোগ্য।
মেদিনীপুর থেকে হাওড়া, আর হাওড়া থেকে মেদিনীপুর, প্রতিদিন হাজারো মানুষকে নিজেদের গন্তব্য সুরক্ষিত পৌঁছে দেওয়ার গুরু দায়িত্ব তাঁর কাঁধে। দীপান্বিতার কথায়, যাত্রীবাহী ট্রেন চালানোর সময় অতিরিক্ত সতর্কতা দরকার পড়ে। দীপান্বিতার স্বামীও রেলে কর্মরত। তাঁর ছেলে ষষ্ঠ শ্রেণি এবং মেয়ে একাদশ শ্রেণিতে পড়ছে।
আইপিএল নিয়ে ব্যস্ত সৌরভ সদ্য দিল্লিতে দাদাগিরির দুটো এপিসোডের শ্যুটিং সেরেছেন। সেই প্রসঙ্গে শো-এর পরিচালক অভিজিৎ সেন হিন্দুস্তান টাইমস বাংলাকে জানান, ‘দাদাগিরির দুটো পর্ব দিল্লিতে শ্যুট হল। সেখানকার বাঙালিরা ছিলেন। দিল্লিতে প্রচুর বাঙালি রয়েছেন, তাঁদের মধ্যে প্রচুর উচ্ছ্বাস আর উদ্দীপনা ছিল। সব মিলিয়ে দারুণ সাড়া পেয়েছি’। প্রতিটা সিজনে নতুন কিছু করার চেষ্টা করেছি, এই সিজনেও প্রচুর মানুষ এসেছেন, অংশগ্রহণ করেছে। আমরা সবাই মিলে চেষ্টা করেছি। টিমের সব মেম্বাররাই সেরাটা দিয়ে চলেছেন'।
আইপিএলের পরেই কি শেষ হবে দাদাগিরি? পরিচালকের সটান জবাব, ‘এখনও কিছু চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি। কথাবার্তা চলছে, দেখা যাক। শেষ হলে একটা খারাপ লাগা তো থাকেই, তবে দাদাগিরি কিন্তু এখনই শেষ নয়। আর যে কোনও শেষ কিন্তু নতুন কিছুকে শুরু হতে সাহায্য করে।'