'রকি অউর রানি কি প্রেম কাহানি'র দৌলতে আপাতত চূড়ান্ত ব্যস্ততার মধ্যে দিন কাটছে। ছবি মুক্তির আগে থেকেই শুরু হয়েছে প্রচারের ব্যস্ততা। আর মুক্তির পর দর্শক দরবারে ‘চন্দন চট্টোপাধ্যায়’ হিসাবে তিনি নিজের বিশেষ একটা পরিচিতি তৈরি করে ফেলেছেন। শনিবার ফোন করতেই টোটা রায় চৌধুরী জানালেন এখনও তিনি মুম্বইতেই। তবে প্রচার শেষ, এখন ব্যক্তিগত প্রয়োজনেই রয়েছেন। রবিবার দুপুরে কলকাতায় ফিরবেন।
'রকি অউর রানি কি প্রেম কাহানি'তে অভিনয়ের প্রস্তাবটা ঠিক কীভাবে এসেছিল?
টোটা: শানু শর্মা বলে মুম্বইতে যিনি বিখ্যাত কাস্টিং ডিরেক্টর, উনি মূলত যশরাজ ফিল্মস কিংবা করণ জোহরের জন্যই কাজ করেন। উনি একদিন আমায় ফোন করেছিলেন। বলেন এখনই যদি অডিশন দিতে পারেন ভালো হয়। আমি ওঁকে চিনতাম, তাই বলি আজ থাক…। তখন বললেন না আমার এখনই চাই। খুব জরুরী। তো চিত্রনাট্য যেটা পাঠিয়েছিলেন, সেটা রেডি করে পাঠিয়ে দিয়েছিলাম। আধঘণ্টা বাদে উনি ফোন করে বললেন খুব ভালো হয়েছে, সবার পছন্দ, এমনকি করণেরও আপনাকে খুব পছন্দ হয়েছে। আমি প্রশ্ন করি কোন করণ? বললেন করণ জোহর। তখনও আমার বিশ্বাস হয়নি। মানে ‘দ্য করণ জোহর’! উনি বললেন হ্যাঁ।
তারপর বললেন উনি দু'সপ্তাহ বাদে মুম্বইতে আপনার সঙ্গে দেখা করবেন। আপনি আসুন, ওঁর অফিস থেকেই ব্যবস্থা করে দেবে। আমি মুম্বই গিয়েছিলাম, কথা হল। এরপর করণ জোহর আমার চরিত্র, চিত্রনাট্য শোনালেন। তারপর জিগ্গেস করলেন আপনি আমার সঙ্গে কাজ করতে রাজি তো? আমি শুনে বললাম, কী যে বলছেন! ঈশ্বর আমার প্রার্থনা শুনেছেন, আমি কখনও ভাবিনি এমন সুযোগ পাব! তখন বললেন, আমারও খুব পছন্দ হয়েছে। মনে হয়না এর থেকে পারফেক্ট চন্দন চট্টোপাধ্যায় আমি পেতাম! ব্যস, সেই শুরু..।
অডিশন দেওয়ার সময় রিজেকশনের ভয় ছিল?
টোটা: না, না। বরাবরই আমার ভয় কম। আর এই বয়সে এসে আর কীই বা ভয় পাব!
ওয়েস্টার্ন ডান্স তো করতেন, তবে এখানে তো কত্থক! বিষয়টা তো এক্কেবারেই আলাদা…
টোটা: হ্য়াঁ, আমি ওয়েস্টার্ন ডান্স করতাম। তবে এই চরিত্রে কাজের শুরু থেকেই শর্ত ছিল ‘কত্থক শিখতে হবে’। করণ শানু শর্মাকে তিনটে শর্ত দিয়েছিলেন। এক, যে অভিনেতাকে বাছা হবে তিনি যেন নাচে সাবলীল হন, সেন্স অফ ডান্স আর মিউজিক যেন থাকে। দুই, চেহারা এমন হবে যেন রণবীর সিং-এর সমান মনে হয়, স্মার্ট চেহারা চাই। আর তৃতীয়, কত্থক শিখতে হবে, কোনও চিটিং-এ আমি করব না। তো প্রথম দুটোতে টিকমার্ক ছিল, শেষটার জন্য ৪-৫ মাস লেগেছিল।
তাহলে কত্থক শিখলেন?
টোটা: হ্যাঁ, কলকাতার বিখ্যাত কত্থক শিল্পী পারমিতা মৈত্র কাছে কত্থক শেখা শুরু করি। তারপর মুম্বইয়ের নিকিতা বনওয়ালিকরের কাছে গিয়ে যেভাবে কোরিওগ্রাফি ছিল, সেভাবে নাচটা তুলেছিলাম। তারপর শেষে বৈভবী মার্চেন্ট নিজে বাকি সবকিছু শুধরে দেওয়ার পর শ্যুটিং শুরু করি। শেষ তিনদিন রণবীর সিং-এর সঙ্গে রিহার্স করেছি।
রণবীরের সঙ্গে রিহার্সালের সময় টেনশন কাজ করেছিল?
টোটা: টেনশন একটাই ছিল, যেন চরিত্রের সঙ্গে ম্য়াচ করি। কারণ, চরিত্র অনুযায়ী আমিই কিন্তু রণবীরকে নাচ শিখিয়েছি। সেক্ষেত্রে আমি যেন সমানে সমানে নাচ করতে পারি। তা নাহলে বিষয়টা বিশ্বাসযোগ্যতা হারাবে। সেটা ভীতি বলব না, তবে আমি সেবিষয়ে বেশ মনোযোগী ছিলাম।
আরও পড়ুন-Tota Roy Chowdhury-RRKPK: 'লক্ষ্য ছিল রণবীর সিংয়ের সঙ্গে সমান দক্ষতায় নাচা'
চন্দন চরিত্রটি শাস্ত্রীয় নৃত্যশিল্পীর চরিত্র, অথচ কোনও ‘মেয়েলি’ বিষয় নেই, গুরুগম্ভীর চরিত্র। এটার জন্য কি কাউকে অনুসরণ করেছিলেন?
টোটা: কাউকে অনুসরণ করিনি। ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা বলছে পুরুষ নৃত্যশিল্পীরা শিল্পের প্রয়োজনে স্টেজে যেমনই নাচ করুন। ব্যক্তি জীবনে তাঁরা কিন্তু আর পাঁজজনের মতোই সাবলীল, কেউ মেয়েলি নন। এখানে দ্বৈতসত্ত্বা রয়েছে। একটা শিল্পী সত্ত্বা, আরেকটা ব্যক্তিসত্ত্বা। বিরজু মহারাজকে দেখলেই সেটা বুঝতে পারবেন। আমি তাই চেয়েছিলাম, আমার নাচের সময় যে পেলবতা থাকবে, মুদ্রা থাকবে, সেটা যেন চন্দন চ্যাটার্জির ব্যক্তি জীবনে না আসে। এটাতে করণ জোহরও প্রশংসা করেছেন। তবে কাউকে অনুসরণ করিনি, সেটা করলেই 'ক্যারিকেচার' হয়ে যেত। নিজের মতো করে চরিত্রটা করেছি, তবে হ্যাঁ অবশ্যই সেটা পরিচালকের কথা মেনে।
রণবীর তো অনেক সাক্ষাৎকারে আপনার ভীষণ প্রশংসা করেছেন…।
টোটা: ও অসম্ভব উদার, দরাজ ছেলে। প্রশংসা করতে গেলে উদারতা প্রয়োজন। সেটা অনেকের মধ্যেই থাকে না, তবে সেটা ওঁর মধ্যে আছে। ভীষণ ভালো ছেলে। রণবীর এত বড় তারকা, অথচ কোনও অহংবোধ দেখলাম না। এক্কেবারে মাটির মানুষ ও।
রণবীর নাকি আলিয়া বন্ধুত্বটা কার সঙ্গে বেশি হয়েছে?
টোটা: দুজনের সঙ্গেই বন্ধুত্ব হয়েছে। আলিয়া একটু চুপচাপ, তবে মিষ্টি মেয়ে। আর রণবীরকে তো সবাই জানে। সবসময় হাসিখুশি, লাফিয়ে বেড়াচ্ছে। অসম্ভব এনার্জি। দুজনের সঙ্গে কাজের অভিজ্ঞতা-ই বেশ মধুর। দুজনেই তারকা, তবে ফ্লোরে ঢোকার সময় ওঁরা আর কেউ স্টার হয়ে আসেন না। এটা খানিকটা মন্দিরে ঢোকার আগে জুতো খুলে ঢোকার মতো বিষয়।
আলিয়ার সঙ্গে কী কথা হত?
টোটা: আলিয়া কিন্তু খুব অন্তর্মুখী, চুপচাপ। কিছু কথা বললে শুধু মিষ্টি করে হাসে। তবে খুব পরিশ্রমি, হোমওয়ার্ক করে আসে। তবে সেটা কাউকে বলতে বা দেখাতে চায় না। ও ‘বর্ন অ্যাকট্রেস’। একটা অদ্ভুত অভিনয় ক্ষমতা নিয়েই জন্মেছে। অসম্ভব ভালো অভিনেত্রী, ভীষণ বুদ্ধিমতী। এত কম বয়সে এত ভালো অভিনয় খুব কম দেখেছি। ও নিজেও হয়ত জানে না, কোথায় গিয়ে পৌঁছবে।
ধর্মেন্দ্র, জয়া, শাবানার সঙ্গে কাজের সময় আলাদা করে মনে রাখার মতো কোনও ঘটনা ঘটেছে?
টোটা: হ্যাঁ, মনে রাখার মতো একটা সুন্দর সন্ধে আছে। একটা দিন সেটে বসেছিলাম, ওঁরা ‘শোলে’ নিয়ে কথা বলছিলেন। আর 'শোলে' আমার ভীষণ প্রিয় একটা ছবি। এই ছবিটা যে কতবার দেখেছি, তার ইয়াত্তা নেই। ওঁরা শোলে নিয়ে আলোচনা করছেন, আমি শুনছি। সেটা আমার গায়ে কাঁটা দেওয়ার মতো বিষয়। ওই ২০ মিনিট আমার কাছে ‘এই পথ যদি না শেষ হয়’ এর মতো বিষয় ছিল। মানে আলোচনা যেন শেষ না হয়। (হাসি) কতকিছু যে জানলাম, শোলের শ্যুটিংয়ের নানান ঘটনা। ওই ২০ মিনিট আমার কাছে ‘ম্যাজিক্যাল’ ছিল।
ধর্মেন্দ্রজির সামনে হাঁটু মড়ে বসে রয়েছেন, আপনার ইনস্টাগ্রামে ছবি দেখলাম, কবে ওটা?
টোটা: ওটা এই পরশুদিন। প্রমোশনের সময়।
শাবানাজি, জয়া বচ্চন কী বললেন?
টোটা: শাবানাজি তো ভীষণ পছন্দ করেন আমাকে। আর জয়া বচ্চনও। রণবীরের সঙ্গে নাচের পর জয়া বচ্চন বললেন, তুমি এমন ভালো কবে থেকে নাচছো? আমি হেসে বললাম, আসলে ম্যাডাম আমি রিহার্স করেছি। উনি বললেন এটা তুমি ৪-৫ মাসে শিখলে! ভাবা যায় না। বাংলাতেই কথা হচ্ছিল। আর শাবানাজি জাভেদ স্যারের সঙ্গে আলাপ করানোর সময় বললেন, ও ভীষণ ভালো অভিনেতা। আমি তখন ভাবছি, শাবানা আজমি এটা বলছেন! আমাদের কাছে ওঁরা যে কোন স্তরের অভিনেত্রী…। আর ধর্মেন্দ্রজি স্নেহ করেন, তবে ওঁর তো বয়স হয়েছে, তাই বেশি ওঁর কাছে ঘোরাফেরা করাটা অস্বস্তিকর। উনিও দেখা হলে বলতেন, ‘আরে চৌধুরী… বেটা সব ঠিক হ্যায়?’।
মহেশ ভাটও তো আপনাকে ফোন করেছিলেন, কী কথা হল?
টোটা: মহেশ ভাট বললেন, ‘ছবি দেখার পর সারা রাত আমি এই চন্দন চ্যাটার্জির কথা ভেবেছি। যেভাবে তুমি নেচেছো, যেভাবে কান্নার মাঝেও আত্মসম্মান বজায় রেখেছো, সেটা আমায় নাড়িয়ে দিয়েছে। এমন অভিনয় দেখলে আমি এই বয়সেও আপ্লুত হয়ে যাই।’ তখন আমি বলি, স্যার, আপনি তো শ্রেষ্ঠ পরিচালকদের একটা নাম। আমরাও তো আপনার ছবি দেখে শিখেছি। উনি বললেন, ‘আমার কথাগুলো মনে রেখো। আমাদের সবসময় তো সমান সময় চলে না, কখনও ভালো, কখনও খারাপ যায়। যখন খারাপ সময়ও চলবে তখনও মনে রেখো তুমি ভালো অভিনেতা। শত্রুরা হয়ত চেষ্টা করবে মন থেকে এটা মুছে দেওয়ার, তবে আত্মবিশ্বাস হারিয়ে ফেলো না। কখনও আত্মবিশ্বাসে ঘাটতি হলে আমার কথা মনে করবে।’ আমি স্তম্ভিত হয়ে যাই শুনে। যে হিন্দি ছবির ইতিহাস লেখা হলে মহেশ ভাটের ছবি ছাড়া লেখা সম্ভব নয়, আর উনি আমায় এই কথা বলছেন। আসলে প্রকৃত শিল্পীরা উদার হন। সংকীর্ণতা নিয়ে শিল্পী হওয়া যায় না। ওঁকে দেখলে শিখলাম।
এই যে করণ জোহর, মহেশ ভাটদের বিরুদ্ধে 'নেপোটিজম'-এর অভিযোগ আসে…
টোটা: এই ছবিটাই এর উত্তর। আমাকে আর চূর্ণীকে যে বেছে নেওয়া হয়েছে, তারপর ওখান থেকে আমির বশির, ক্ষিতি জগ, এঁরা…, গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রও দিয়েছেন। কিন্তু আমাদের সাতকূলে তো হিন্দির ছবির কোনও যোগ নেই। আমরা যে সম্মান ভালোবাসা বলিউডে পেয়েছি, এখানকার অনেক পরিচালক সেই সম্মান, ভালোবাসা দেননি (একটু উত্তেজিত হয়ে)। কীসের স্বজনপোষণ! যাঁরা হিংসুটে তাঁরাই সারাজীবন এসব বলবেন। আর একটা কথা, দর্শকের পকেট থেকে কেউ টাকা ছিনিয়ে নিচ্ছেন না। দর্শক ছবি ভালো লাগলে তবেই দেখতে যান, কেউ হাত ধরে হলে নিয়ে যান না। তাই এই যুক্তিটা হাস্যকর। কারণ, ছবি ভালো না লাগলে মানুষ এখন এমনই রিজেক্ট করেন। আসলে দূর থেকে এই মানুষগুলোকে সকলে দেখেন তো, কাছ থেকে চিনলে এই অভিযোগ আসবে না।
তাহলে একটা উদাহরণ দিই…আমরা দিল্লিতে শ্যুটিং করছিলাম, সেখানে লীলা প্যালেস হোটেলে আমরা ছিলাম। সেটা অসম্ভব দামি হোটেল। প্রতিটা ঘর খুব দামি। সেখানে শুধু হিরো-হিরোইন থাকেন। করণ জোহর বললেন, শুধু হিরো-হিরোইন নন, সব অভিনেতা, হেয়ার, মেকআপ, ক্যামেরা, সকলেই এখানে থাকবেন। উনি এবং আমার পরিবারও থাকবেন, সবাই সমান। তবে অন্য প্রযোজনায় কিন্তু প্রথম, দ্বিতীয়, তৃতীয় শ্রেণির হোটেল থাকে, গুরুত্ব অনুযায়ী। স্বজনপোষণ করলে উনি এটা করতেন না।
টলিউডে আপনি একসময় ঋতুপর্ণ ঘোষের ছবিতে কাজ করেছেন, এতদিন পরে বলিউড যে সম্মান দিল, সেটা টলিউডে কেন পেলেন না?
টোটা: সেটা নিয়ে কোনও ক্ষোভ অভিযোগ আজ আর নেই। আমি স্পোর্টসম্যান। শুধু জানি সৎভাবে পরিশ্রম করে যাব, তারপর যেটা পাব সেটাই আমার প্রাপ্য়। বেশি পেলে আশীর্বাদ, তবে কম পেলে অভিশাপ হিসাবে ধরব না। যাঁদের যোগ্য মনে হয়নি, দেননি। এটা নিয়ে মাথা ঘামাতে নারাজ। তবে একটা বিষয় হল আমি লড়ে যাই। কারণ ৯০ মিনিটের খেলা, কেউ বল দিচ্ছে না ভেবে ৫০ মিনিটেই হতাশ হলে চলবে না। যখন পাওয়ার ঠিক পাবে। আজ 'রকি-রানি'তে যা পেয়েছি, তাতে সব না পাওয়ার বেদনা মুছে গেছে। আজ গোটা দেশের দর্শকরা এটা নিয়ে কথা বলছেন।
তবে এটা জানি বাংলা ইন্ডাস্ট্রি আমায় প্রথম সুযোগ দিয়েছে, কাজ শিখিয়েছে, এই ইন্ডাস্ট্রি প্রথম পরিচিতি, অর্থ, কেরিয়ার দিয়েছে। এই ইন্ডাস্ট্রিতে পরিচিতি পেয়েছি বলেই মুম্বই ডেকেছে। তাই কী পাইনি, তার হিসেব মেলাতে নারাজ।
এখন কি পাকাপাকি ভাবে বলিউডে?
টোটা: প্রশ্নই ওঠে না। যদি পাকাপাকি ভাবে যেতে হত তাহলে আগেই সুযোগ এসেছিল। একবার ‘চোখের বালি’র পর, আরেকবার সুজয় ঘোষের ‘অহল্যা’র পর। আমি বাঙালি, বাংলার ছেলে। আমার ভিত বাংলাতেই। হ্যাঁ, অবশ্যই হিন্দিতে গিয়ে কাজ করব, ওখানে দীর্ঘদিন থেকে কাজ করতে হলে, সেটাও করব। তবে বাংলা ছেড়ে যাব না। আমি বাংলার ভূমি সন্তান।
টাইটেল কার্ডে পুষ্পরাগ নাম রয়েছে, ওটাই তো আসল নাম, টোটা কীভাবে হয়েছিলেন?
টোটা: আমার ডাক নাম টোটা। আমাকে যিনি ব্রেক দেন, পরিচালক প্রভাত রায় ওঁর টোটা নামটাই পছন্দ ছিল, কারণ চরিত্রের জন্য। তখন ফার্স্ট ইয়ার থেকে সেকেন্ড ইয়ারে উঠব। তখনও তো জানতাম না যে এই অভিনয়টাই পেশা হবে। তারপর টোটা-ই হয়ে গেলাম। তবে আমার তো ইচ্ছা ছিল সেনাবাহিনীতে যোগ দেওয়ার। সেজন্যই তৈরি হচ্ছিলাম। আর অভিনয়টা জীবিকা হয়ে গেল। আগে জানলে প্রথম থেকে পুষ্পরাগ নামই রাখতাম। এখন মনে হচ্ছে, ওই নামটা কি আর কেউ জানবেন না? তাই এবার পুষ্পরাগ ব্যবহার করছি।
তাহলে মুম্বইতে কি সকলে ‘পুষ্পরাগ’ বলে ডাকছেন?
টোটা: না না, টোটা বলেই ডাকছেন। তবে ওঁরা একটু বেশি সম্মান দেন, রণবীর, আলিয়া সকলে ‘টোটা স্যার’ বলছেন। আমি হেসে বললাম আমি কি তোমাদের কলেজের প্রফেসার নাকি, ‘স্যার’ বলছো? ওঁরা আসলে সিনিয়ারিটির দাম দেন।
বলিউড-টলিউডের পার্থক্য কি দেখলেন?
টোটা: পার্থক্য বলতে বাজেট, আর আমাদের চারণভূমিটা ছোট। ওঁদের বিচরণ বিশ্বজুড়ে, এটাই…। বাংলার ডিস্ট্রিবিউশন ঠিক হলে, আমরাও যদি পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তে পৌঁছতে পারলে , আমাদের আসতে আসতে বাজেট বাড়বে। আর ওঁদের কাজের প্রতি ভালোবাসা, সেটা অবশ্যই শেখার মতো। ওটাকে ওঁরা ঈশ্বরের পুজোর মতো করে দেখেন। ভীষণ সিরিয়াস। এটা আমি দক্ষিণেও দেখেছি।
আর কী প্রস্তাব আছে বলিউডে?
টোটা: সেটা আসছে, তবে আলোচনা স্তরে। এখনই কিছু বলব না।
আপনার নাচের এমন প্রতিভা তো জানা ছিল না। আর কী কী লুকিয়ে রেখেছেন?
টোটা: সেটা একটু সাসপেন্স থাক, সব বলে দিলে আনন্দটাই মাটি… (হাসি)
অভিনয়, ছাড়া আর কীভাবে সময় কাটান?
টোটা: বই আর পরিবার। আমার কাছে পরিবার খুব গুরুত্বপূর্ণ। আর বই পড়তে, আকাশ দেখতে, ছাদে হাঁটতে ভালোবাসি। সময় কাটানোর জন্য আমায় বাড়ির বাইরে যেতে হয় না।
ছবি দেখে স্ত্রী আর মেয়ে কী বললেন?
টোটা: আমার স্ত্রী, শর্মিলী আমার সবথেকে বড় সমালোচক। এটা দেখে স্ত্রী উচ্ছ্বসিত। এবার নম্বরটা ভালোই পেয়েছি। ও ১৫০ জন বান্ধবীকে নিয়ে ছবি দেখতে গিয়েছিল। গোটা একটা গ্রুপ। সকলেরই ভালো লেগেছে। স্ত্রীর কাছ থেকে ভালো নম্বর পেতে ভালোই লাগে। (হাসি) মেয়েও বলল, বাবা কী ভালো কাজ করেছো। বাবা, মা, শশুড়িমা স্ত্রী, আমার মেয়ে, ভাই, সকলেই আমার কাছে গুরুত্বপূর্ণ।
সিনেমার মতোই ব্যক্তিগত জীবনেও তো একজন স্বামী আবার বাবা, এই দুই ক্ষেত্রে নিজেকে কত নম্বর দেবেন?
টোটা: এ নম্বর তো আমি দেব না (হাসি), স্ত্রী, মেয়েই দেবেন। তবে আশারাখি, ভালো নম্বরই পাব। কম পাব না। এই দুই দায়িত্ব আমি ঠিকঠাকই পালন করি।